CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ৯

ধৰ্ম্ম, ৯ম সংখ্যা, ১লা কার্ত্তিক, ১৩১৬

জাতীয় ঘোষণাপত্র

জাতীয় ঘােষণাপত্র পাঠ হইয়াছে, ইহা বড় সুখের বিষয় ৷ ইহার মধ্যে আর কোনও কথা না উঠিলে, বাদ প্রতিবাদ বা মনােমালিন্যের কারণ ঘটিবার কোনও অবসর দিলেন না সেই জন্য নেতাদিগকে ধন্যবাদ দিয়া ক্ষান্ত হইতাম ৷ কিন্ত বেঙ্গলী পত্রিকা আমাদের মিথ্যাবাদী বলায় আমরা এই বিষয়ের প্রকৃত বৃত্তান্ত সর্বসাধারণের অবগতির জন্য প্রকাশ করিতে বাধ্য হইলাম ৷ সহযােগী প্রকৃত কথা গুপ্ত রাখিয়া এই মাত্র বলিয়াছেন যে “ধৰ্ম্ম’এ প্রকাশিত কথা সম্পূর্ণ অমূলক, অর্থাৎ আমরা মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত কথা প্রচার করিয়া মধ্যপন্থী নেতাদিগের উপর লােককে অসন্তুষ্ট করিতে প্রয়াস করিলাম ৷ তবে প্রকৃত ঘটনা জানিয়া বিচার করুন ৷ আমরা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি যে গত বৎসরের বিজ্ঞাপনে “জাতীয় ঘােষণাপত্র পাঠ” হইবে এই কথা ছিল ৷ এইবার যখন বিজ্ঞাপন সম্বন্ধে পরামর্শ চলিতেছে, তখন একজন সন্ত্রান্ত নেতা “জাতীয় ঘােষণাপত্র” কাটিয়া দিলেন এবং এই কথা বাদ দিয়া বিজ্ঞাপন বাহির করিবার হুকুম হইল ৷ এই সম্বন্ধে যে পরামর্শের সময়ে প্রতিবাদ একেবারে হয় নাই, তাহাও নহে, কিন্তু নেতাদের কথার বিরুদ্ধে সজোরে কথা বলিবার কাহারও সাহস ছিল না ৷ স্থির হইল, শ্ৰীযুত সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, এ. রসুল ও রায় যতীন্দ্রনাথ চৌধুরী স্বাক্ষর করিবেন ৷ রসুল সাহেব জাতীয় ঘােষণাপত্র বর্জন হইল দেখিয়া বিস্মিত হইলেন এবং তিনি এই ভুল সংশােধন না হইলে বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করিতে অসম্মত, এই অর্থে সুরেন্দ্রবাবুকে উত্তর লিখিয়া পাঠাইলেন ৷ ইতিমধ্যে শ্ৰীযুত রসুলের নামযুক্ত বিজ্ঞাপন ছাপান ও বিলিও হইতে আরম্ভ হইয়াছে, কিন্তু তাহার উত্তর প্রাপ্ত হইবামাত্র ছাপান ও বিলি বন্ধ হইয়া শ্ৰীযুত রসুলের নামের বদলে শ্ৰীযুত মতিলাল ঘােষের নাম বসাইয়া সেই বিজ্ঞাপনই ছাপাইয়া বিলি করা হইল ৷ যাহা বলিয়াছি, তাহা কেবল শােনা কথা নহে, অস্বীকার করিবার কাহারও ক্ষমতা নাই, প্রত্যেক কথার অকাট্য প্রমাণ আছে ৷ তাহার পর শ্রীযুত রসুল ও শ্ৰীযুত অরবিন্দ ঘােষ জাতীয় ঘােষণাপত্র বর্জন করিতে নেতাগণ সচেষ্ট আছেন বুঝিয়া যাঁহারা বিজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করিয়াছিলেন, তাহাদের এবং সভাপতি শ্ৰীযুত আশুতােষ চৌধুরীর উপর নােটিশ দিলেন যে এই সম্বন্ধে আমরা প্রকাশ্য সভায় আপত্তি উত্থাপন করিব এবং জাতীয় ঘােষণা পাঠ হইবার আদেশ যাহাতে হয়, সেই চেষ্টা করিব ৷ উত্তরে শ্ৰীযুত মতিলাল ঘােষ দেওঘর হইতে এই অর্থে টেলিগ্রাম করিলেন যে যদি গবর্ণমেন্ট নিষেধ না করিয়া থাকেন ৷ জাতীয় ঘােষণাপত্র পাঠ করিতে সুরেন্দ্রবাবু ও যতীন্দ্রবাবু কোনও উত্তর করেন নাই ৷ সভাপতি শুক্রবারে কলিকাতায় পৌঁছিলেন, রাত্রিতে পত্র পাইলেন, সেই জন্য তাঁহারও কোন উত্তর পাওয়া যায় নাই ৷ বুধবারে পত্র লেখা হইল, শুক্রবারে শ্রীযুক্ত গীস্পতি কাব্যতীর্থ কলেজ স্কোয়ারে জাতীয় ঘােষণা পাঠ হইবে এই শুভ সংবাদ প্রকাশ্য সভায় ঘােষণা করিলেন, শনিবার সকালে বেঙ্গলী পত্রিকায় আমাদের কথা অমূলক বলিয়া সেই শুভসংবাদ পাঠকবর্গকেও জানাইলেন ৷ এই বৃত্তান্ত ৷ সৰ্বসাধারণই তাহার বিচার করুন ৷


৩০শে আশ্বিন

৩০শে আশ্বিনের সমারম্ভ দেখিয়া এইবার দেশবাসীর আনন্দ, বিপক্ষের মনঃক্ষোভ হইবার কথা ৷ আন্দোলন যে নির্বাপিত হয় নাই, বাধা বিঘ্ন, ভয় প্রলােভন অতিক্রম করিয়া পূর্ণমাত্রায় সজীব হইয়াছে ৷ তাহার বাহ্যিক চিহ্ন বন্ধ কর, লুপ্ত কর, হৃদয়ে হৃদয়ে নূতন ভাব জাগ্রত রহিয়াছে, স্বরাজলাভেই নিৰ্বাপিত নহে, সন্তুষ্ট হইয়া অন্য আকার ধারণ করিবে ৷ বিজাতীয় সংবাদপত্র লােকের উৎসাহ অস্বীকার করিতে সচেষ্ট হইবেই, কিন্তু তাহাদের লেখার মধ্যে নিজেদের উৎসাহভঙ্গ লক্ষিত হয় ৷ ষ্টেটসম্যান অন্য উপায় না দেখিয়া শ্ৰীযুত চৌধুরীর বক্তৃতা হইতে সান্ত্বনারস চুষিতে চেষ্টা করিয়াছেন, কেন না চৌধুরী মহাশয় ছাত্রদের রাজনীতি বৰ্জন করিতে বলিয়াছেন, কিন্তু ছাত্রগণ যে পূর্ণমাত্রায় ৩০শে আশ্বিনের সমারম্ভে যােগ দিয়াছেন, সেই কথা সম্বন্ধে নীরব কেন? লােকে বলে যে গতবারেও সভায় এত ভিড় হয় নাই, সেই জনতার প্রান্তে বসিবার স্থানও ছিল না, দাড়াইতে হইল ৷ পার্শ্ববর্তী রাস্তায়, দেওয়ালে, ছাতেও লােক ছিল ৷ বাঙ্গালী মাত্রই দোকান বন্ধ করিয়াছিলেন, কেবল বড়বাজারে মাড়ােয়ারী ও হিন্দুস্থানী দোকানদার লােভ সম্বরণ করিতে পারে নাই, কিন্তু তাহাদের দোকানে কিনিবার লােক অতি অল্পই দেখিলাম, প্রায় দোকান খুলিয়া বসিয়াই আছে ৷ লােকের উৎসাহও কম ছিল না ৷ শ্ৰীযুত সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্ৰীযুত অরবিন্দ ঘােষকে সভা হইতে লইয়া যাইবার সময় সেই উৎসাহের তীব্রতা ও গভীরতা প্রকাশ পাইল ৷ যে অনবরত জয়জয়কার ও বন্দে মাত্রং ধ্বনি অনেকক্ষণ ধরিয়া পৃথিবী ও আকাশ বিকম্পিত করিল, সে নেতাদের প্রাপ্য নহে, এই দুর্দিনে তাঁহারা আন্দোলনের চিহ্নস্বরূপ রহিয়া অগ্রভাগে জাতীয় ধ্বজা তুলিয়া দাঁড়াইয়াছেন, সেই জন্য এই সম্মান ৷ কাল যদি ভগ্নোৎসাহ হন বা সেই ধ্বজা ধূলায় লুটিতে দেন, জয়জয়কারের বদলে ধিক্কার ধ্বনি উঠিবে, নেতাগণ যেন সর্বদা এই কথা স্মরণ করেন ৷


গবর্ণমেন্টের গোখলে না গোখলের গবর্ণমেন্ট?

পুণার কাণ্ড ও গােখলে মহাশয়ের পরিণাম দর্শনে সমস্ত ভারত অবাক হইয়া রহিয়াছে ৷ শ্ৰীযুত গােপালকৃষ্ণ গােখলের বুদ্ধিতে ও চরিত্রে আমরা কখনও অন্য দেশবাসীর ন্যায় মুগ্ধ ছিলাম না ৷ তাহার স্বার্থত্যাগের মধ্যে আমরা ব্যক্তিগত যশােলিঙ্গা সম্মানপ্রিয়তা ও ঈর্ষা দেখিয়া অসন্তুষ্ট ছিলাম, তাহার দেশসেবার মধ্যে সাহস এবং উচ্চ আদর্শের অভাব বুঝিয়া তাহার শেষ পরিণাম সম্বন্ধে চিরকালই আশঙ্কিত ছিলাম ৷ কিন্তু আমরা স্বপ্নেও ভাবি নাই যে এতদূর অবনতি এই ভারতবাসীর সম্মাননা ও ভালবাসার পাত্রের ভাগ্যে ঘটিবে ৷ জানিতাম, যে তঁাহার বিখ্যাত ক্ষমাপ্রার্থনার পরে গােখলে মহাশয় রাজপুরুষদের অতীব প্রিয় পাত্র ছিলেন, তিনি যখন ব্যবস্থাপক সভায় তাঁহাদের সহিত বাদবিবাদ করিতেন, তখনও তাহাকে দেখিতেন যেন আলালের ঘরের দুলাল, গায়ে হাত বুলাইতেন, অথবা মিষ্ট মিষ্ট গাল দিতেন ৷ কিন্তু একদিন যে তাহারই খাতিরে এক বিখ্যাত সাপ্তাহিক পত্র নিগ্রহ আইনে নিগৃহীত হইবে, পুণা সহর খানাতল্লাসীর ধূমধামে ব্যতিব্যস্ত হইবে, একজন সন্ত্রান্ত উকিল পুলিস দ্বারা ধৃত ও অভিযুক্ত হইবেন এবং অন্যান্য নগরবাসী ধৃত হইবার ভয়ে ব্যাকুলিত হইবেন, ইহা আমাদের স্বপ্নেরও আগােচর ছিল ৷ জানিতাম গােখলে গবর্ণমেন্টের, এখন জিজ্ঞাসা করিতে হইল, গবর্ণমেণ্ট কি গােখলের? গােপালকৃষ্ণ গােখলে কি বৃটিশ সাম্রাজ্যের স্তম্ভ ও ভারতীয় শাসনতন্ত্রের অঙ্গ হইয়াছে? আমরা জানিতাম রাজনীতিক হত্যা বা সশস্ত্র বিদ্রোহের প্রশংসা করিলে দেশবাসীর ছাপাখানা গবর্ণমেন্টের সম্পত্তি হয়, বােমা বা বিদ্রোহের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পুলিস পুঙ্গবদের তীব্র ঘ্রাণেন্দ্রিয়ে পহুছিলে সহরময় খানাতল্লাসীর ধূমধাম আরম্ভ হয় ৷ একটী ব্যক্তির মানহানিতে বা তাহার উপর ভয় প্রদর্শনে যে এইরূপ নবযুগের কাণ্ড হইতে পারে, তাহা আমরা জানিতাম না ৷ এই নূতন প্রণালী গবর্ণমেন্টের যােগ্য কি না, তাহা রাজপুরুষগণ বিবেচনা করুন ৷ কিন্তু গােখলে মহাশয়ের পরিণাম দেখিয়া আমরা দুঃখিত রহিলাম ৷ কবি যথার্থই বলিয়াছেন, আমরা মানুষ, বিগত মহত্ত্বের ছায়ার বিনাশেও আমাদের চক্ষে জল আসে ৷ গােখলে মহাশয় কোন জন্মে মহৎ ছিলেন না, তবে তিনি মহতের ছায়া বটে ৷ তঁাহার সকল মত, বুদ্ধি, বিদ্যা, চরিত্র তাহার নিজস্ব নহে, কৈলাসবাসী রাণাডের দান ৷ গােখলের মধ্যে মহাত্মা রাণাডের ছায়া বিনষ্ট হইতে চলিল দেখিয়া আমরা দুঃখিত ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates