All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
রিফরম
আজ সােমবার ১৫ই নভেম্বর – এই দিনে মহামতি লর্ড মরলী ও লর্ড মিন্টোর গভীর ভারতহিতচিন্তায় রাজনীতিক তীক্ষ্ণবুদ্ধি ও উদার মতের আসক্তি-ফলজাত শাসনসংস্কাররূপ মানসিক গর্ভ প্রসূত হইবে ৷ লর্ড মরলী ধন্য, লর্ড মিন্টো ধন্য, আমরা ধন্য ৷ আজ ভারতে স্বর্গ নামিয়া আসিবে ৷ আজ পারস্য, তুর্কী, চীন, জাপান পৰ্য্যন্ত ভারতের দিকে ঈর্ষার চক্ষে চাহিয়া ‘ইংলিশম্যান’এর সুরে সুর দিয়া গাহিবে “ধন্য যাহারা পরাধীন, ধন্য ধন্য যাহারা য়ুরােপীয় জাতির পরাধীন, ধন্য ধন্য ধন্য যাহারা উদারনীতিক মরলী মিন্টোর পরাধীন ৷ আমরাও যদি ভারতবাসী হইতাম, এই সুখে বঞ্চিত হইতাম না ৷” আশা করি, যত ভারতবাসী নব উন্মাদনায় উন্মত্ত না হইয়া থাকেন, এই গানের কোরাস করিয়া আকাশমণ্ডল বিধ্বনিত করিবেন ৷
ইংলিশম্যানের ক্রোধ
আমরা অনেকদিন পূর্বে সহকারী ইংলিশম্যানের সরলতার প্রশংসা করিয়াছিলাম ৷ আবার আজ না করিয়া থাকিতে পারি না ৷ অন্য অ্যাংলােইণ্ডিয়ান দৈনিকগুলি দ্বিমূখ সর্পবিশেষ, স্বাধীনতার প্রশংসা করে, এবং ভারতের পরাধীনতার আবশ্যকতা প্রতিপন্ন করিবার চেষ্টা করে ৷ সহযােগীর চক্ষুলজ্জা নাই, যাহা মনে আসে, তাহা কেবল মানহানির আইন চোখের সম্মুখে রাখিয়া বিনা আবরণে লেখেন, আবল-তাবল বকিতে হইলে আবল-তাবলই বকেন, যুক্তি, সত্য, সংলগ্নতার উপর তাণ্ডব নৃত্য করিতে বড় ভালবাসেন ৷ তিনি মুক্ত পুরুষ ও সংবাদপত্রের মধ্যে নাগা সন্ন্যাসী ৷ ইংলিশম্যান স্বাধীনতার কথা শুনিয়া শিহরিয়া উঠেন, যেমন ভারতবর্ষের স্বাধীনতার বিরােধী, তেমনিই ইংলণ্ডের স্বাধীনতার বিরােধী ৷ এক স্বেচ্ছাচারতন্ত্র সমস্ত বৃটিশ সাম্রাজ্য অধিকার করিয়া বিরাজ করিবে এবং ইংলিশম্যান তাহার মুখপাত্র হইয়া থাকিবে, ইহাই সহযােগীর রাজনীতিক আদর্শ ৷ যাহারা স্বাধীনতার অনুমােদক ও প্রচারক, তাহারা বধ্য বা নির্বাসন ও জেলের যােগ্য ৷ মিঃ ব্যালফুর অধিকারপ্রাপ্ত হইলেই লুই নাপােলিয়নের ন্যায় রাষ্ট্রবিপ্লব করিয়া মিঃ লয়েড জর্জ ও ওয়িনষ্ট চর্চিলকে জেলে এবং মিঃ কীর হার্ডি ও ভিক্টর গ্রেসনকে কোর্ট মার্শালে পাঠাইবার পরামর্শ সহযােগী নিশ্চয়ই পাকেপ্রকারে দিবেন ৷ স্বাধীনতা অপেক্ষাও সাম্য কথা তাহার অপ্রিয় ৷ সহযােগী বলেন, সমস্ত য়ুরােপ ও আসিয়াখণ্ডময় যে সাম্যপ্রচার ও সাম্যের আকাঙ্ক্ষা আরম্ভ হইয়াছে, তাহা প্রচারকদের রক্তে নির্বাপিত না হইলে পৃথিবীর যত সিংহাসন টলিবে এবং হেয়ার স্ট্রীট লুপ্ত হইবে ৷ অতএব ভিক্টর গ্রেসন, বৃদ্ধ মূখ টলস্টয় ও “মানিকতলার” অরবিন্দ ঘােষকে – কি অপূৰ্ব্ব সমাবেশ! – ইংলিশম্যান ঠিক ফেরারের ন্যায় বিনা বিচারে গুলি করিতে বলেন না, তবে সেইরূপ কোন ব্যবস্থা না করিলে আর কেহ নিরাপদ থাকিবে না ৷ এত সরলতার মধ্যে এই অসরলতা কেন? ইংলিশম্যানের ভয় কি? হিন্দপঞ্চের কপালে যাহা লেখা ছিল, ইংলিশম্যান হাজার হত্যা বা বলপ্রয়ােগের পরামর্শ দিলেও তাহার ভাগ্যে ইহা ঘটিবে না ৷ প্রজাকে হত্যা করিবার প্রবৃত্তি বন্ধ করা আইনের উদ্দেশ্য, কিন্তু রাজার মনে হত্যার প্রবৃত্তি জাগাইবার চেষ্টায় কোন শাস্তি নাই ৷
দেওঘরে জীবন্ত সমাধি
সংবাদপত্রে প্রকাশ যে, একজন হিন্দু সাধু হরিদাস সন্ন্যাসীকে অতিক্রম করিয়া সমাধি-নিমগ্ন না হইয়াও জীবন্ত কবরে কয়েকদিন রহিয়াছিলেন ৷ আমাদের দেশে পুরান্স বিদ্যা সকল লুপ্ত হইয়াছে বলিয়া আমরা এইরূপ প্রয়ােগে আশ্চর্যান্বিত হই ৷ পূর্বপুরুষদের কথা আমরা কুসংস্কার বলিয়া উড়াইয়া দেই ৷ অথচ যে বিদ্যার ভগ্নাংশ মাত্র আমাদের প্রাচীন সাহিত্যে, ধৰ্ম্মে, শাস্ত্রে, শিক্ষায় আমাদের হস্তগত হইয়াছে, তাহার তুলনায় আধুনিক পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের সমস্ত বিদ্যা নবজাত শিশুর অর্থহীন প্রলাপ মাত্র ৷ যেমন শিশু যত পদার্থ সম্মুখে দেখে, তাহা হাতে তুলিয়া হাত বুলাইয়া ভাঙ্গিয়া-চুরিয়া বাহ্যজগতের কতক জ্ঞান সঞ্চয় করে, কিন্তু জগৎ কি, পদার্থের আসল স্বরূপ ও সম্বন্ধ কি, তাহা কিছুই জানে না, সেইরূপে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান প্রকৃতির স্থূল পদার্থ সকল হাতে তুলিয়া হাত বুলাইয়া, ভাঙ্গিয়া-চুরিয়া কতক জ্ঞানসঞ্চয় করে ৷ কিন্তু জগৎ কি, পদার্থের আসল স্বরূপ কি, স্থল সূক্ষ্মর সম্বন্ধ কি, তাহা কিছুই জানে না এবং এই বিদ্যার অভাবে পদার্থের প্রকৃত স্বভাব অবগত হইতে পারে না ৷ মনুষ্য সম্বন্ধে শবচ্ছেদ করিয়া রােগের লক্ষণ ও অবান্তর কারণ নিরীক্ষণ করিয়া যতটুকু জ্ঞান সঞ্চয় হয়, ততটুকু জ্ঞান পাশ্চাত্য বিদ্যায় পাওয়া যায় ৷ এই জ্ঞান অনেক বিষয়ে ভ্রান্ত ৷ বৈজ্ঞানিক বলেন, আকর্ষণশক্তি জগতের সর্বব্যাপী ও অলঙ্ নিয়ম, কিন্তু মনুষ্য প্রাণায়াম দ্বারা আকর্ষণশক্তি জয় করিতে পারে এবং স্থূল জগতের বাহিরে সেই নিয়মের কোন জোর নাই ৷ বৈজ্ঞানিক বলেন, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ও শ্বাসনিঃশ্বাস রুদ্ধ হইলে প্রাণ শরীরে থাকিতে পারে না ৷ কিন্তু প্রমাণিত হইয়াছে যে, হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন ও শ্বাসনিঃশ্বাসের ক্রিয়া অনেকক্ষণ ও অনেকদিন পর্যন্ত রুদ্ধ হইতে পারে অথচ সেই রুদ্ধনিঃশ্বাস ব্যক্তি পূৰ্ব্ববৎ নড়িতে পারে ও কথা বলিতে পারে, বাঁচা ত দূরের কথা ৷ ইহাতে বুঝা যায় যে, পাশ্চাত্য বিদ্যা স্বক্ষেত্রে ও স্থূল পদার্থজ্ঞানেও কত সংকীর্ণ ও লঘু ৷ আসল বিজ্ঞান আমাদেরই ছিল ৷ সেই জ্ঞান স্কুল প্রয়ােগ দ্বারা লব্ধ না হইয়া সূক্ষ্ম প্রয়ােগ দ্বারা লব্ধ হইয়াছিল ৷ আমাদের পূর্বপুরুষদের জ্ঞান লুপ্তপ্রায় হইয়াছে ৷ বটে, কিন্তু যে উপায় দ্বারা লুপ্ত হইয়াছিল, সেই উপায় দ্বারা পুনর্লব্ধও হইতে পারে ৷ সেই উপায় যােগ ৷
যুক্ত মহাসভা
সহযােগী বেঙ্গলী যুক্ত মহাসভার সম্বন্ধে যে প্রবন্ধ প্রকাশ করিয়াছেন, তাহা প্রকাশ না করিলেই ভাল হইত ৷ সহযােগী যে সৰ্ত্তে জাতীয়পক্ষকে আহ্বান করিতেছেন, সেইগুলি মধ্যপন্থীদের অনুকূল ৷ গত বর্ষে জাতীয়পক্ষ কনভেন্সনে প্রবেশ করিবার সুবিধা প্রার্থনা করিতেছিলেন, এবং কলিকাতা অধিবেশনে চারিটি প্রস্তাব গৃহীত হইবার আশা দেখিয়া মধ্যপন্থীদের মনােনীত সৰ্ত্তে সম্মত হইলেন ৷ এইবার তাহারা তত সহজে সম্মত হইতে পারেন না ৷ ইতিমধ্যে রাজনীতিক ক্ষেত্রে অনেক পরিবর্তন হইয়া গিয়াছে, পশ্চিম ভারতের মধ্যপন্থীগণের মনের ভাব পরিস্ফুট হইয়া আসিয়াছে, জাতীয়পক্ষ আর গােখলে মেহতার অধীন হইয়া মহাসভা করিতে রাজী হইবেন না ৷ তথাপি এখনও বিবেচনা হইতেছে, অল্পদিনের মধ্যে কোন স্থির সিদ্ধান্ত হইবার কথা, এখন এইরূপ মত প্রকাশে বাদবিবাদ হওয়ায় মিটমাটের বিঘ্ন হইবে মাত্র ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.