All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
ব্যামসী ম্যাকডনান্ড
আমরা র্যামসী ম্যাকডনাডের ভারতে আগমনের সময়ে এই ভাবে লিখিয়া-ছিলাম যে, তিনি আসিয়াই বা কি করিবেন, অল্পদিনে ভারতে ফিরিয়া বা কি জানিয়া লইবেন, এবং মরলীর শাসন সংস্কারে যখন এত আস্থাবান, তাহার নিকট আমরাও বা কি সহানুভূতি বা লাভের প্রত্যাশা করিব? তাহার পরে মিঃ ম্যাকডনাল্ডের সহিত আমাদের পরিচয় হইয়াছে ৷ তিনি ভারতে অতি অল্পদিন ঘুরিয়া আগামী প্রতিনিধি-নিৰ্বাচনের সংবাদ পাইয়া বিলাতে ফিরিয়া যাইতে বাধ্য হইয়াছেন, সেই অল্পদিনেও প্রায়ই ইংরাজ কর্মচারীদের সহিত বাস করিয়াছেন ৷ অথচ দেখিলাম যে তিনি ভারতের অবস্থা বুঝিবার চেষ্টা করিতেছেন এবং কতক পরিমাণে কৃতকাৰ্য্যও হইয়াছেন ৷ কিন্তু মিঃ ম্যাকডনাল্ড রাজনীতিবিদ ও সতর্ক ৷ তিনি কীর হার্ডির ন্যায় তেজস্বী ও স্পষ্টবক্তা নহেন, নিজ মত অনেকটা গােপন করিয়া রাখেন, যাহা মনে ভাবেন তাহার অল্পাংশই বাক্যে ব্যক্ত করেন ৷ বৃটিশ রাজনীতিক জীবনে তিনি শ্রমজীবীদলের নরমপন্থী নেতা ৷ শ্রমজীবীরা সকলেই সােশ্যালিষ্ট, সকলেই এক উদ্দেশ্য লক্ষ্য করিয়া অগ্রসর হইতেছেন, বর্তমান সমাজ ও রাজতন্ত্র ভাঙ্গিয়া-চুরিয়া নূতন করিয়া গড়িতে চান ৷ কিন্তু কয়েকজন চরমপন্থী, প্রকাশ্যভাবে এই উদ্দেশ্য ব্যক্ত করিয়া উদারনীতিক ও রক্ষণশীল উভয় দলকে পরাভূত করিয়া প্রকৃত সাম্যপূর্ণ প্রজাতন্ত্রে ব্যক্তিকে ডুবাইয়া সমষ্টিকে দেশের সর্ববিধ সম্পত্তি ও আধিপত্যের অধিকারী করিতে কৃতসঙ্কল্প ৷ মধ্যপন্থী শ্রমজীবী কীর হার্ডির দল, উদারনীতিক দলের সহিত যখন সুবিধা যােগদান করেন, যখন সুবিধা সেই দলের বিরুদ্ধাচরণ করেন, আমাদের ভূপেনবাবু ও সুরেনবাবুর ন্যায় Association cum Opposition নীতি অবলম্বন করিয়া এক হস্তে যুদ্ধ করেন, এক হস্তে আলিঙ্গন করেন ৷ নরমপন্থীগণ স্বতন্ত্রতা রক্ষা করিয়া উদারনীতিকদের পূর্ণ সাহায্য গ্রহণ করিয়া অতি সন্তর্পণে অগ্রসর হইতে চান ৷ উদ্দেশ্য কিন্তু একই ৷ মিঃ ম্যাকডনাল্ড অতিশয় বুদ্ধিমান, চিন্তাশীল ও চতুর রাজনীতিবিদ; বিলাতের ভাবী মহাযুদ্ধে তিনি বােধহয় একজন প্রধান মহারথী হইবেন ৷ ভারতের সহিত তাঁহার আন্তরিক সহানুভূতি আছে, কিন্তু এই অবস্থায় ভারতের কোন হিতসাধন করা তাঁহার সাধ্যাতীত ৷
রিফর্ম ও মধ্যপন্থীগণ
মধ্যপন্থীদল তাঁহাদের চিরবাঞ্ছিত শাসন সংস্কার পাইয়াছেন কিন্তু সেই লাভে হর্ষপ্রফুল্ল না হইয়া শােকসন্তপ্ত হইতেছেন ৷ তাহাদের ক্রন্দন ও তীব্র অভিমানের যথেষ্ট কারণ আছে ৷ তাহাদের চতুরচূড়ামণি শ্বেত শ্যামরায় মধ্যপন্থী রাধার সহিত তাঁহার স্বভাবসুলভ ধূর্ততা অবলম্বন করিয়া চন্দ্রাবলীকে কৌন্সিল অভিসারে ডাকিয়া প্রবেশ করাইয়াছেন ৷ মধ্যপন্থীগণ বলিতেছেন, আমরাই শাসন সংস্কার করাইলাম, অথচ আমরাই সেই সংস্কারে বহিষ্কৃত হইলাম, যাঁহারা শাসন সংস্কারের বিরােধী ছিলেন, তাঁহারাই গৃহীত হইয়াছেন, একি বিদ্রপ, একি অন্যায় ৷ এই করুণ অভিমানপূর্ণ নিবেদন চারিদিকে শুনিতেছি, তবে প্রভেদ আছে ৷ বােম্বাইবাসিনী রাধা চির অভ্যাস রক্ষা করিয়া শ্যামের সহিত প্রেমে মাখা মধুর কলহ করিতেছেন, বঙ্গবাসিনী রাধার বিষম মান, আর শ্যামের মুখ দেখিব না, সেই কথা বলিবার সাহস নাই, শ্যামকে একেবারে চটাইতে চান না, অথচ মনে মনে সেই ভাবই রহিয়াছে ৷ মধ্যপন্থীদের বিপ্রলব্ধ দশা দেখিয়া হাসিও পায় দয়াও হয় ৷ কিন্তু রাধার মনে রাখা উচিত ছিল যে কেবলই কলহ কেবলই আবদার করিলে প্রেম টেকে না, মানের ভয়ে রাধার শ্রীচরণে পড়িয়া নিজ সৰ্ব্বস্ব তাহাকে দেয়, শ্বেতবর্ণ শ্যামসুন্দর সেইরূপ ছেলে নহে ৷ দুঃখের কথা, যে বেলভিডীর নিবাসী শ্যামসুন্দর বেশী প্রেম দেখাইয়াছিলেন, তিনিই বেশী ধূর্ততা করিয়াছেন, এখন মানভঞ্জন ৷ করিবে কে? বৃদ্ধ মরলী আবার কি নুতন বংশীরব করিয়া হঁহাদের আহত হৃদয়কে শীতল করিবেন?
গোখলের মানহানি
বৃটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান স্তম্ভ মাননীয় গােখলে মহাশয়ের বিরুদ্ধে কয়েকজন অপক্কবুদ্ধি লােক অযথা তিরস্কার ও বিদ্রুপ করিয়া মহারাষ্ট্রীয় প্রজাকে উত্তেজিত করিয়াছিল, ইহা বড় দুঃখের কথা ৷ গােখলে মহাশয় মর্মাহত হইয়া বৃটিশ বিচারকদের আশ্রয় লইয়াছেন এবং তাহাদের সাহায্যে তাহার মানহানির পন্থা বন্ধ করিয়াছেন ৷ এবং তাহার প্রধান শত্রু ও নিন্দুক হিন্দু পঞ্চকে বিনাশ করিয়াছেন ৷ ভালই হইয়াছে ৷ মিথ্যা কথা বলিতে নাই, বিশ্বাস করিলেও যে কথা তুমি বিচারালয়ে প্রমাণ করিতে অক্ষম, সেই কথা লিখিতে নাই ৷ হিন্দু পঞ্চের সম্পাদক এবং পূণার উকীল শ্ৰীযুত ভীড়ে এই কথা বিস্মৃত হইয়া দণ্ডের পাত্র হইয়াছেন ৷ ভাল কথা ৷ কিন্তু রাজনীতিক ক্ষেত্রে নালিস করিয়া লােকপ্রিয়তা আদায় করা যায় না ৷ অপর লােকে গােখলে মহাশয়ের মানহানি করিলে তাহার উপায় আছে, তিনিও সেই উপায় আবলম্বন করিয়া জয়ী হইয়াছেন, কিন্তু নিজে নিজ মানহানি করিলে তাহার কি উপায় হইতে পারে ৷ গােখলে মহাশয় যাহার প্রশংসা করিতেন, এখন ৷ তাহার নিন্দা করিতেছেন, যাহার নিন্দা করিতেন তাহার প্রশংসা করিতেছেন, ইহা দেখিয়া লােকে তাহার উপর সহজেই বীতশ্রদ্ধ হইয়াছে ৷ আগে কৰ্মচারীদের প্রিয় হইয়াও প্ৰজার প্রতি আকর্ষণ করা কঠিন হইলেও অসাধ্য ছিল না, কিন্তু নূতন প্রলয়ের পরে সেইরূপ জলস্থলবাসী জানােয়ার লােপ পাইয়াছে ৷
নূতন কৌন্সিলর
যখন বনের বড় বড় বৃক্ষ সকল কাটে, তখন সহস্র অলক্ষিত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গাছপালা চক্ষু আকর্ষণ করে ৷ আগে ভূপেন্দ্রনাথ, সুরেন্দ্রনাথ, দ্বারভাঙ্গা, রাসবিহারী ৷ ইত্যাদি বড় বড় রাজনীতিক নেতা, বিখ্যাত জমিদার ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ বিদ্বান ব্যবস্থাপক সভার সভ্য হইতেন, নূতন সংস্কারের প্রভাবে এইরূপ লােককে সরাইয়া সাগরের উপরে কত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মৎস্য উঠিয়া সহর্ষে নবসূৰ্য্য কিরণে লম্ফ করিতেছে ৷ প্রতিদিন নূতন নূতন নিৰ্বাচনপ্রার্থীর নাম পড়িয়া বিস্মিত হইলাম ৷ এতগুলি অজানা মহার্ঘ্য রত্ন এতদিন অন্ধকারে লুকাইয়া ছিল? আমরা লর্ড মরলীকে ধন্যবাদ দিই, দেশ এত ধনী ছিল, নিজের ঐশ্বৰ্য্য বুঝিতে পারে নাই, মরলীর প্রভাবে রুদ্ধ ধনভাণ্ডারের দ্বার খুলিয়াছে – সকল রত্ন সূৰ্য্যকিরণে প্রদীপ্ত হইয়া নয়ন ঝলসিয়া দিতেছে ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.