All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
বিচার
বিচারের শুদ্ধতা সমাজের স্তম্ভস্বরূপ ৷ সেই শুদ্ধতা কতক জজের মন ও চিত্তের শুদ্ধতার উপর নির্ভর করে, কতক স্বাধীন লােকমত দ্বারা রক্ষিত হয় ৷ জজ রাজার মুখ্য ধর্মের ভার বহন করেন, তিনি ঈশ্বরের প্রতিনিধি; যেমন ঈশ্বর বিচারাসনে বসিয়া নিরপেক্ষভাবে শত্রু মিত্র, ধনী দরিদ্র, রাজা প্রজা ইত্যাদি ভেদ না করিয়া কেবলই ধৰ্ম্ম রক্ষা করেন, সেইভাবে বিচার করা তাহার ধর্ম ৷ যদি রাগদ্বেষ, মানমৰ্য্যাদা, রাজনীতিক বা সমাজিক কোনও উদ্দেশ্যের বশে আইনের বিভ্রাট করেন, তিনিও ধৰ্ম্মচ্যুত হন, সমাজের বন্ধনও শিথিল হয় ৷ আর যদি অজ্ঞ বা লঘুচিত্ত ব্যক্তিকে বিচারকর্তার আসনে বসান হয়, সেই রাজ্যের অকল্যাণ অবশ্যম্ভাবী ৷ আর সকল শাসনতন্ত্রের বিভাগে বিভ্রাট হওয়ায় অনিষ্ট ক্ষণস্থায়ী হইতেও পারে, বিচারের অশুদ্ধতায় রাজা, রাজ্য ও প্রজার ধ্বংস হয় ৷ কোনও শাসনতন্ত্রের গুণ দোষ নির্ণয় করিবার সময় সহস্র শৃঙ্খলা, কাৰ্য্যক্ষমতা ও সুখ-শান্তির প্রমাণ দেওয়া নিরর্থক, – যদি বিচারপ্রণালী নির্দোষ না হয়, সেই শাসনতন্ত্রের প্রশংসা মিথ্যা ৷
লোকমতের প্রয়োজনীয়তা
মানুষ যদি নিস্পাপ ও স্থিরবুদ্ধি হইত, বিচার সম্বন্ধে লােকমতের স্বাধীনতা আবশ্যক হইত না ৷ কিন্তু মানুষের মন চঞ্চল, তাহার চিত্তে কামনা ও রাগদ্বেষ প্রবল, তাহার বুদ্ধি অশুদ্ধ ও পক্ষপাতপূর্ণ ৷ এই অবস্থায় বিচারের শুদ্ধতা রক্ষা করিবার তিন উপায় আছে ৷ প্রথম উপায় আইনজ্ঞ, প্রৌঢ়, ধীরপ্রকৃতি লােককে বিচারাসনে বসাইয়া তাহাদিগকে সর্বপ্রকার প্রলােভন, ভয়প্রদর্শন, স্বার্থচিন্তা, পরের আদেশ, প্রার্থনা, অনুনয় ইত্যাদি হইতে দূরে রাখা; চঞ্চলমনা, আইনে অনভিজ্ঞ যুবককে কখন বিচারাসনে আরূঢ় করা উচিত নহে, বিচারককে কোনমতে শাসকের অধীন করাও বিপজ্জনক, এই তত্ত্ব ও নিয়ম ইংলণ্ডীয় বিচারপ্রণালীতে সম্পূর্ণ রক্ষিত হইয়াছে বলিয়া বৃটিশ বিচারপ্রণালীর এত প্রশংসা ৷ দ্বিতীয় উপায় বিচারের মহান নিষ্কলঙ্ক আদর্শ স্থাপন করিয়া সেই আদর্শ বিচারক, আইনব্যবসায়ী লােক ও সৰ্বসাধারণের মনে দৃঢ়ভাবে অঙ্কিত করা ৷ কিন্তু আদর্শভ্রষ্ট হওয়া মানুষের পক্ষে অতি সহজ, সেইজন্য লােকমতকে আদর্শের রক্ষকরূপে দাড় করান ভাল ৷ বিচারক যদি জানেন যে আদর্শ হইতে লেশমাত্র ভ্রষ্ট হইলে লােকের নিন্দা ও কলঙ্কের পাত্র হইব, তাহার মনে অন্যায় করিবার প্রবৃত্তি সহজে আশ্রয় পাইবে না ৷
আমাদের দেশে
আমাদের দেশে কয়েক কারণবশতঃ বিচারককে শাসকের অধীন রাখা হইয়াছে, সেই জন্যে বিচারকের দায়িত্ব অনেকটা শাসকের উপর পড়িয়াছে ৷ বিচারক ঈশ্বরের প্রতিনিধি না হইয়া শাসকের প্রতিনিধি হন ৷ অতএব শাসকের দায়িত্ব অতি গুরুতর ৷ ইহার উপর শাসনতন্ত্রের সুবিধার জন্য অপককেশ অনভিজ্ঞ লােকের উপরেও বিচারের ভার দেওয়া আবশ্যক হইয়াছে ৷ আবার সম্প্রতি নূতন আইনে বিচারকের বিচার সম্বন্ধে বিপরীত লােকমত ব্যক্ত করা নিষিদ্ধ হইয়াছে ৷ এই সকল ব্যবস্থা শাসনের জন্য আবশ্যক বলিয়া প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে, অতএব ইহার সম্বন্ধে কথা বলিবার অধিকার আমাদের নাই ৷ কিন্তু এই অবস্থায় শাসকের কি ভীষণ দায়িত্ব, তাহা শাসনকর্তারা একবার বিবেচনা করিয়া দেখুন ৷ তাহারা যেন ৷ স্মরণ করেন যে, তাহারা এই অপূর্ব ক্ষমতার কি প্রয়ােগ করিতেছেন, তাহা ভগবান দেখিতেছেন, দেশের হিতাহিত, রাজ্যশাসনের ফলাফল এবং সাম্রাজ্যের সুখ শান্তি ও স্থায়িত্ব তাহারই উপর নির্ভর করে ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.