All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
আমাদের দেশে ধৰ্ম্মের কখনও সঙ্কীর্ণ ও জীবনের মহৎ কর্মের বিরােধী ব্যাখ্যা মনীষিগণের মধ্যে গৃহীত হইত না ৷ সমস্ত জীবনই ধৰ্ম্মক্ষেত্র, হিন্দুর জ্ঞান ও শিক্ষার মূলে এই মহৎ ও গভীর তত্ত্ব নিহিত ছিল ৷ পাশ্চাত্য শিক্ষার স্পর্শে কলুষিত হইয়া আমাদের জ্ঞান ও শিক্ষার বিকৃত ও অস্বাভাবিক অবস্থা হইয়াছে ৷ আমরা প্রায়ই এই ভ্রান্ত ধারণার বশীভূত হই যে, সন্ন্যাস, ভক্তি, ও সাত্ত্বিক ভাব ভিন্ন আর কিছু ধর্মের অঙ্গ হইতে পারে না ৷ পাশ্চাত্যগণ এই সঙ্কীর্ণ ধারণা লইয়া ধর্মালােচনা করেন ৷ হিন্দুরা ধৰ্ম্ম ও অধৰ্ম্ম এই দুই ভাগে জীবনের যত কাৰ্য্য বিভক্ত করিতেন; পাশ্চাত্য জগতে ধৰ্ম্ম, অধৰ্ম্ম ও ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মের বহির্ভূত জীবনের অধিকাংশ ক্রিয়া ও বৃত্তির অনুশীলন, এই তিন ভাগ করা হইয়াছে ৷ ভগবানের প্রশংসা, প্রার্থনা, সংকীৰ্ত্তন, গির্জায় পাদ্রীর বক্তৃতা শ্রবণ ইত্যাদি কৰ্ম্মকে ধর্ম বা religion বলে, morality বা সৎকাৰ্য্য ধর্মের অঙ্গ নহে, তাহা স্বতন্ত্র, তবে অনেকেই religion ও morality দুইটীই ধৰ্ম্মের গৌণ অঙ্গ বলিয়া স্বীকারও করেন ৷ গির্জায় না যাওয়া, নাস্তিকবাদ বা সংশয়বাদ এবং religionএর নিন্দা বা তৎসম্বন্ধে ঔদাসীন্যকে অধৰ্ম্ম (irreligion) বলে, কুকাৰ্য্যকে immo-rality বলে, পূর্বোক্ত মতানুসারে তাহাও অধর্মের অঙ্গ ৷ কিন্তু অধিকাংশ কর্ম ও বৃত্তি ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মের বহির্ভূত ৷Religion ও life, ধর্ম ও কর্ম স্বতন্ত্র ৷ আমাদের মধ্যে অনেকে ধৰ্ম্ম শব্দের এইরূপ বিকৃত অর্থ করেন ৷ সাধুসন্ন্যাসীর কথা, ভগবানের কথা, দেবদেবীর কথা, সংসারবজ্জনের কথাকে তাহারা ধৰ্ম্ম নামে অভিহিত করেন; কিন্তু আর কোন প্রসঙ্গ উত্থাপন করিলে, তাহারা বলেন, ইহা সংসারের কথা, ধর্মের কথা নহে ৷ তাহাদের মনে পাশ্চাত্য religionএর ভাব সন্নিবিষ্ট হইয়াছে, ধৰ্ম্ম শব্দ শ্রবণ করিবামাত্র religionএর কথা মনে উদয় হয়, নিজের অজ্ঞাতসারেও সেই অর্থে ধৰ্ম্ম শব্দ ব্যবহার করেন ৷ কিন্তু আমাদের স্বদেশী কথায় এইরূপ বিদেশী ভাব প্রবেশ করাইলে আমরা উদার ও সনাতন আৰ্য্যভাব ও শিক্ষা হইতে ভ্রষ্ট হই ৷ সমস্ত জীবন ধৰ্ম্মক্ষেত্র, সংসারও ধৰ্ম্ম, কেবল আধ্যাত্মিক জ্ঞানালােচনা ও ভক্তির ভাব ধৰ্ম্ম নহে, কৰ্ম্মও ধৰ্ম্ম ৷ আমাদের সমস্ত সাহিত্য ব্যাপ্ত করিয়া এই মহতী শিক্ষা সনানভাবে রহিয়াছে – এষ ধর্মঃ সনাতনঃ ৷
অনেকের ধারণা যে কৰ্ম্ম ধৰ্ম্মের অঙ্গ বটে, কিন্তু সর্ববিধ কৰ্ম্ম নহে; কেবল যেগুলি সাত্ত্বিকভাবাপন্ন, নিবৃত্তির অনুকূল, সেইগুলি এই নামের যােগ্য ৷ ইহাও ভ্রান্ত ধারণা ৷ যেমন সাত্ত্বিক-কৰ্ম্ম ধৰ্ম্ম, তেমনই রাজসিক-কৰ্ম্মও ধৰ্ম্ম ৷ যেমন জীবের উপর দয়া করা ধৰ্ম্ম, তেমনই ধৰ্ম্মযুদ্ধে দেশের শত্রুকে হনন করাও ধৰ্ম্ম ৷ যেমন পরােপকারার্থে নিজের সুখ, ধন ও প্রাণ পৰ্য্যন্ত জলাঞ্জলি দেওয়া ধৰ্ম্ম, তেমনই ধৰ্ম্মের সাধন শরীরকে উচিতভাবে রক্ষা করাও ধৰ্ম্ম ৷ রাজনীতিও ধৰ্ম্ম, কাব্যরচনাও ধৰ্ম্ম, চিত্রলিখনও ধৰ্ম্ম, মধুর গানে পরের মনােরঞ্জন সম্পাদনও ধৰ্ম্ম ৷ যাহার মধ্যে স্বার্থ নাই, তাহাই ধৰ্ম্ম, সেই কৰ্ম্ম বড় হউক, ছােট হউক ৷ ছােট বড় আমরা হিসাব করিয়া দেখি, ভগবানের নিকট ছােট বড় নাই, কোন ভাবে মানুষ নিজ স্বভাবােচিত বা অদৃষ্টদত্ত কৰ্ম্ম আচরণ করে, তিনি সেই দিকেই লক্ষ্য রাখেন ৷ উচ্চ ধৰ্ম্ম শ্রেষ্ঠ ধৰ্ম্ম এই, যে-কৰ্ম্মই করি, তাহা তাহারই চরণে অর্পণ করা, যজ্ঞ বলিয়া করা, তাহার প্রকৃতিদ্বারা কৃত বলিয়া সমভাবে স্বীকার করা ৷
ঈশা বাস্যমিদং সৰ্ব্বং যৎকিঞ্চ জগত্যাং জগৎ ৷ তেন ত্যক্তেন ভুঞ্জীথা মা গৃধঃ কস্যস্বিন ॥ কুন্নেবেহ কৰ্ম্মাণি জিজীবিষেচ্ছতং সমাঃ ৷
অর্থাৎ যাহা দেখি, যাহা করি, যাহা ভাবি, সবই তাহার মধ্যে দেখা, তাহার চিন্তায় যেন বস্ত্রে আচ্ছাদিত করা হইল শ্রেষ্ঠ পথ, সেই আবরণকে পাপ ও অধৰ্ম্ম ভেদ করিতে অসমর্থ ৷ মনের মধ্যে সকল কর্মে বাসনা ও আসক্তি ত্যাগ করিয়া কিছু না কামনা করিয়া কৰ্ম্মের স্রোতে যাহা পাই, তাহা ভােগ করিব, সকল কর্ম করিব, দেহ রক্ষা করিব, ইহাই ভগবানের প্রিয় আচরণ এবং শ্রেষ্ঠ ধর্ম ৷ ইহাই প্রকৃত নিবৃত্তি ৷ বুদ্ধিই নিবৃত্তির স্থান, প্রাণে ও ইন্দ্রিয়ে প্রবৃত্তির ক্ষেত্র ৷ বুদ্ধি প্রবৃত্তি দ্বারা সৃষ্ট হয় বলিয়া যত গােল ৷ বুদ্ধি নির্লিপ্তভাবে সাক্ষী ও ভগবানের prophet বা spokesman হইয়া থাকিবে, নিষ্কাম হইয়া তাহার অনুমােদিত প্রেরণা প্রাণ ও ইন্দ্রিয়কে জ্ঞাপন করিয়া দিবে, প্রাণ ও ইন্দ্রিয় তদনুসারে স্ব স্ব কৰ্ম্ম করিবে ৷ কৰ্ম্ম ত্যাগ অতি ক্ষুদ্র, কামনার ত্যাগ প্রকৃত ত্যাগ ৷ শরীরের নিবৃত্তি নিবৃত্তি নহে, বুদ্ধির নির্লিপ্ততাই প্রকৃত নিবৃত্তি ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.