CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১৯

ধৰ্ম্ম, ১৯শ সংখ্যা, ২৬এ পৌষ, ১৩১৬

কন্ভেন্সনের দুর্দ্দশা

বােম্বাইয়ের “রাষ্ট্রমতে” কভেন্সনের প্রতিনিধি ও দর্শকবৃন্দের সংখ্যা বাহির হইয়াছে ৷ এই সংবাদপত্রের লাহাের পত্র-প্রেরক লিখিয়াছেন, “লাহােরের ক্রীড কংগ্রেসের অধিবেশনে সবসুদ্ধ ২২৪ জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন, এই সংখ্যার অর্ধেকের উপর পঞ্জাবের অধিবাসী ছিলেন ৷ যাঁহারা আগে রাজনীতিক কার্য্যে যােগদান করিয়াছেন, সেইরূপ ভদ্রলােক খুব অল্পই ছিলেন ৷ দর্শকের সংখ্যা ছয় শত বা সাত শত হইবে ৷ সময়ে সময়ে হলের দুই ভাগই খালি ছিল ৷ একজনও মুসলমান প্রতিনিধি বা দর্শক উপস্থিত ছিলেন না ৷ সভাপতি মালবিয়া অতিশয় দক্ষতার সহিত কাৰ্য্য চালাইলেন, নচেৎ এইবার ক্রীড কংগ্রেসের আরও দুরবস্থা হইত ৷” পত্র-প্রেরকের শেষ উক্তির মধ্যে কোনও গুপ্ত মতভেদের ইসারা পাওয়া যায় ৷ সম্ভবতঃ শাসন সংস্কার লইয়া এই মতভেদ, দুইদলের আপােষের সৰ্ত্ত কভেন্সনের তদ্বিষয়ক প্রস্তাব দেখিলেই বােঝা যায় ৷ প্রস্তাবের প্রথমাংশের সহিত শেষাংশের সম্পূর্ণ বিরােধ ৷ প্রথমাংশে মিন্টো ও মরলীর উদারতা, প্রজার মনস্তুষ্টির জন্য উৎকট ও বিকট চেষ্টা ইত্যাদি গুণের সানন্দ প্রশংসা এবং কৃতজ্ঞতার উদ্দাম লহরী, শেষাংশে কঠোর, প্রায় অভদ্র ভাষায় গবর্ণমেন্টের গালাগালি এবং ক্রোধ ও ঘৃণার উদ্দাম উচ্ছ্বাস ৷ এই হাস্যকর অসঙ্গত সম্মিলনে মালবিয়ার দক্ষতা প্রকাশ পাইয়াছে, কভেন্সন করাল অকালমৃত্যুর হাত হইতে রক্ষা পাইয়া আলাহাবাদে দক্ষ মালবিয়ার শীতল ছায়ায় আবার সম্মিলিত হইবার দুরাশা পােষণ করিতেছে ৷


দলাদলি ও একতার মিথ্যা ভান

মানুষমাত্র কথার দাস, বাকদেবীর পুতুল ৷ চিরপরিচিত শ্রুতিমধুর কথা শ্রবণ করাইয়া মনকে নাচান আমাদের মধ্যপন্থী বন্ধুদের একপ্রকার সিদ্ধি ৷ তঁাহারা ইংরাজ রাজনীতিবিদগণের শিষ্য ৷ ইংরাজ যেমন কোন শ্রুতিমধুর কথা আবৃত্তি করিয়া – যথা, বৃটিশ শান্তি, বৃটিশ ন্যায়পরতা, স্বায়ত্তশাসন-সংস্কার ইত্যাদি, – বিশাল শূন্যভাবের আবরণে স্বীয় অভীষ্ট কাৰ্য্য সিদ্ধি করিতে অভ্যস্ত, তেমনই তাহাদের মধ্যপন্থী শিষ্যগণ “বৃটিশ ন্যায়পরতার এজলাস”, “বৃটিশ প্রজার বিবেকবুদ্ধি”, “বৃটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত অধিকার” ইত্যাদি শ্রুতিমধুর শূন্য কথায় দেশের বুদ্ধি বিব্রত করিয়া এতদিন ভারতের প্রকৃত উন্নতির সুপন্থা রুদ্ধ করিয়া রাখিয়াছেন ৷ এখনও সেই অভ্যাস যায় নাই ৷ তাহারা জাতীয়পক্ষের স্বতন্ত্র কাৰ্য্যশৃঙ্খলার উদ্যোগ চলিতেছে দেখিয়া “দলাদলি”, “একতা” ইত্যাদি পরিচিত কথার রােল করিয়া লােকের মন নাচাইতে চেষ্টা করিতেছেন ৷ তাহারাই ক্ৰীড ও কনষ্টিটিউশন সৃষ্টি করিয়া জাতীয়পক্ষকে মরলীর মনস্তষ্টির আশায় বহিষ্কৃত করিলেন, তঁহারাই হুগলী প্রাদেশিক সমিতিতে জাতীয়পক্ষের কোন প্রস্তাব গৃহীত হইলে উঠিয়া সমিতি ভাঙ্গিয়া দিবেন, এই বিভীষিকা দেখাইলেন, তঁাহারাই জাতীয়পক্ষের নেতাগণের সহিত একসঙ্গে কাৰ্য্য করিতে ভীত ও অনিচ্ছুক, মধ্যপন্থী নেতাদের নামের সঙ্গে কোনও ঘােষণায় তাঁহাদের স্বাক্ষর দিবার প্রস্তাব উঠিলে, “কাজ নাই, কাজ নাই, গবর্ণমেণ্ট চটিবে, বড় মানুষেরা চটিবে,” বলিয়া সেই প্রস্তাব উড়াইয়া দেন ৷ অথচ আমাদের উপর উল্টা চাপ দিতে লজ্জিত নন ৷ আমরাই নাকি দলাদলি করিতেছি, সামান্য মতভেদের জন্য একসঙ্গে কাৰ্য্য করিতে অনিচ্ছুক, কভেল্সনে ঢুকিয়া মেহতাকে বুঝাইবার চেষ্টা না করিয়া স্বতন্ত্র হইয়া থাকি ৷ এতদিন আমরা কোন বাধা করি নাই, দেশ, আন্দোলন, রাজনীতিক ক্ষেত্র তােমাদেরই হাতে ছিল, এই ফল হইয়াছে যে, সমস্ত দেশ নীরব হইয়া পড়িয়াছে, ভারত নিদ্রা যাইতেছে, লােকের উৎসাহ, সাহস, আশা ভগ্নপ্রায় হইয়া গেল ৷ আমরা দেশকে জাগাইতে চাই —– তােমাদিগকে চিনিয়া লইয়াছি; জানি যে ইচ্ছা থাকিলেও ভয় ও বিপদের আশঙ্কা তােমাদিগকে কাৰ্য্য করিতে দিবে না, – আমাদের বিপদ হউক, দলন হউক, আমরা দেশের কাৰ্য্য করিব, সেই উদ্যোগ করিতেছি ৷ অমনই মধ্যপন্থীদের রব উঠিতেছে, আহা কি করিতেছ? একজোট হইয়া কি সুন্দর ঘুম মারিতেছিলাম! আবার দলাদলি! আমাদের প্রিয় একতা গেল, রক্ষা কর, মতিলাল কোথায়, অনাথবন্ধু কোথায়, আমাদের রক্ষা কর ৷ তােমাদের মনের ভাব জানি ৷ জাতীয়পক্ষ যদি কাৰ্য্যশৃঙ্খলার সহিত কাৰ্য্য করিতে সমর্থ হয়, তােমাদের হয় সেই কাৰ্য্যে যােগদান করিয়া গবর্ণমেন্টের অপ্রিয় হইতে হইবে, নয় নিশ্চেষ্ট থাকিলে অকর্মণ্য ও ভীরু বলিয়া দেশবাসীর সম্মান ও তােমাদের নষ্টপ্রায় নেতৃত্বের ভগ্নাংশ হারাইতে হইবে ৷ এই জন্যই চির অভ্যাসবশে মিথ্যা একতার ভান করিয়া তােমাদের সেই প্রিয় সুখকর নিশ্চেষ্টতার জন্য উদ্বিগ্নতা প্রকাশ কর ৷


নিৰ্ব্বাসনের বিভীষিকা

আমাদের পুলিস বন্ধুগণ রটনা করিয়াছেন যে, আবার নির্বাসনরূপ ব্রহ্মাস্ত্র নিক্ষিপ্ত হইবে, এইবার নয়জন নহে, চব্বিশ জনকে মােটরকারে, রেলে, “Guide জাহাজে গবর্ণমেন্টের খরচে নানাপ্রদেশ ও বিবিধ জেল ঘুরিয়া আসিবার জন্য প্রস্থান করিতে হইবে ৷ পুলিসের এই তালিকায় শ্রীযুক্ত অরবিন্দ ঘােষ নাকি প্রথম নম্বর পাইয়াছেন ৷ আমরা কখন বুঝিতে পারি নাই, নিৰ্বাসন এমনকি ভয়ঙ্কর জিনিস যে লােকে নির্বাসন নাম শুনিয়া ভয়ে জড়সড় হইয়া দেশের কাৰ্য্য, কর্তব্য, মনুষ্যত্ব পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক কম্পিত কলেবরে ঘরের কোণে মুখ ঢাকিয়া বসিয়া পড়ে ৷ চিদাম্বরম প্রভৃতি কৰ্ম্মবীর বয়কট প্রচার দোষে যে কঠিন দণ্ড হাসিমুখে শিরােধার্য্য করিয়াছেন, তাহার তুলনায় এই দণ্ড অতি লঘু, অতি অকিঞ্চিৎকর ৷ বাহিরে পরিশ্রম করিতেছিলাম, নানা দুশ্চিন্তার মধ্যে দেশসেবা করিবার চেষ্টা করিতেছিলাম, না হয় ভগবান লর্ড মিন্টো বা মরলীকে যন্ত্র করিয়া বলিলেন, যাও, নিশ্চিন্ত হইয়া বসিয়া থাক, নির্জনে আমার চিন্তা কর, ধ্যান কর, পুস্তক পড়, পুস্তক লিখ, জ্ঞান সঞ্চয় কর, জ্ঞান বিস্তার কর ৷ জনতায় থাকার রস আস্বাদন করিতেছিলে, নির্জনতার রস আস্বাদন কর ৷ এই এমন কি ভয়ানক কথা যে ভয়ে কাতর হইতে হয়? কয়েকদিন প্রিয়জনের মুখ দেখিতে পারিব না, - বিলাতে বেড়াইতে গেলে তাহা হয়, অথচ লােকে বিলাতে বেড়াইতে যায় ৷ ধরুন, অখাদ্য খাইয়া, গ্রীষ্ম ও শীতে কষ্ট পাইয়া শরীর ভাঙ্গিয়া যাইবে ৷ বাড়ীতে বসিয়াও রােগের হাত হইতে নিস্তার নাই, বাড়ীতেও অসুখ হয়, মরণ হয়, অদৃষ্ট-লিখিত আয়ক্রম কেহ অন্যথা করিতে পারে না ৷ আর হিন্দর পক্ষে মরণে ভীষণতা নাই ৷ দেহ গেল, পুরাণাে বস্ত্র গেল, আত্মা মরে না ৷ সহস্রবার জন্মিয়াছি, সহস্রবার জন্মগ্রহণ করিব ৷ ভারতের স্বাধীনতা না হয় স্থাপন করিতে পারিলাম না, ভারতের স্বাধীনতা ভােগ করিতে আসিব, কেহ আমাকে বারণ করিতে পারিবে না ৷ এত ভয় কিসের? সস্তায় ইতিহাসে অমর নাম লিখাইলাম, স্বর্গের পথ উন্মুক্ত, অথচ কষ্ট নাই, অথবা সামান্য শরীরক্লেশে মুক্তি ও ভুক্তি পাইলাম ৷ এই ত কথা? ট্রান্সলের কুলীদের মহম্ভব এবং ভারতের শিক্ষিত লােকের এই জঘন্য কাতর-ভাব দেখিয়া লজ্জিত হইতে হয় ৷


নির্ব্বাসন অসম্ভব

আমাদের ধারণা, এই ভয় দেখান বৃথা আস্ফালন মাত্র ৷ প্রস্তাব করা হইয়াছে, হয়ত ইণ্ডিয়া গবর্ণমেন্টের অনুমতিও হইয়াছে, কিন্তু লর্ড মরলী যে সম্মত হইবেন, তাহা আমরা সহজে বিশ্বাস করিতে চাই না ৷ নয় জনকে নির্বাসন করায় লর্ড মরলীকে যথেষ্ট ভুগিতে হইয়াছে, আবার চব্বিশ জনকে নির্বাসন করিবেন? বিশেষতঃ ইহা জানার কথা যে লর্ড মরলী শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণকুমার মিত্র প্রভৃতি নয় জনকে কারামুক্তি দিতে উৎসুক, কেবল ইণ্ডিয়া গবর্ণমেন্টের জেদে পারিতেছেন না ৷ এই অবস্থায় তিনি কি সহজে আর চব্বিশ জনকে নির্বাসন করিয়া দেশের গভীর অশান্তিকে আরও গভীর করিবেন, বিপ্লবকারীদের ইচ্ছার মত কাৰ্য্য করিবেন? তিনি অনেক ভুল করিয়াছেন, কিন্তু এখনও তাহার উন্মত্ত অবস্থা হয় নাই ৷ অবশ্য লর্ড মিন্টো যদি বলেন যে নির্বাসনের অনুমতি না দিলে তিনি ভারতের শান্তির জন্য দায়ী নহেন, কিম্বা পদত্যাগ করিবার ভয় দেখান, তাহা হইলে লর্ড মরলী দায়ে ঠেকিয়া সম্মত হইতে পারেন ৷ নাও হইতে পারেন, কেন না লর্ড মিন্টো না থাকিলে বৃটিশ সাম্রাজ্য যে ধ্বংস হইবে, সেই কথায় লর্ড মরলী হয়ত সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন না ৷ যাহা হউক চব্বিশ জনকে নির্বাসন করুন, বা একশ জনকে নির্বাসন করুন, অরবিন্দ ঘােষকে নির্বাসন করুন, বা সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীকে নির্বাসন করুন, কালচক্রের গতি থামিবার নহে ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates