CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১২

ধৰ্ম্ম, ১২শ সংখ্যা, ৬ই অগ্রহায়ন, ১৩১৬

হিন্দু সম্প্রদায় ও শাসন সংস্কার

আমরা যখন হিন্দু সভার কথা লিখিয়াছিলাম, তখন এই অর্থে মতপ্রকাশ করিয়াছিলাম যে, যদিও গবর্ণমেন্টের প্রসাদান্বেষী ও স্বতন্ত্রতা অনুমােদক মুসলমান সম্প্রদায়ের উপর বিরক্ত হইয়া স্বতন্ত্র রাজনীতিক চেষ্টা করা হিন্দুদের পক্ষে স্বাভাবিক, তথাপি সেইরূপ চেষ্টায় দেশের অনিষ্ট ভিন্ন হিত সাধিত হওয়া সম্ভব নহে ৷ এখনও আমরা সেই মত পরিবর্তন করিবার কোন কারণ অবগত নহি ৷ শাসন সংস্কারে বা নূতন ব্যবস্থাপক সভায় আমাদের কোনও কালে আস্থা ছিল না,হিন্দু-মুসলমানকে বিনা পক্ষপাতে সেই সভায় সমান প্রবেশাধিকার দিলেও আমরা সেই কৃত্রিম সভার অনুমােদন করিতাম না ৷ আমাদের ভবিষ্যৎ আমাদেরই হাতে, এই সত্য যখন সম্পূর্ণভাবে এবং দৃঢ় হৃদয়ে গ্রহণ করিবার শক্তিলাভ করিব, তখন অতি শীঘ্রই প্রকৃত প্রজাতন্ত্র বিকাশের অনুকূল ব্যবস্থাপক সভার সৃষ্টি হইবে ৷ অতএব এই কৃত্রিম স্বর্ণভূষিত ক্রীড়ার পুতুল লইয়া ভাইয়ে ভাইয়ে কলহ করা আমাদের মতে বালকোচিত মূখতা মাত্র ৷ তথাপি ইহা স্বীকার করি যে, এই নূতন সংস্কারে হিন্দু সম্প্রদায়ের অপমান ও বহিষ্কারের চেষ্টায় হিন্দু সম্প্রদায় অসন্তুষ্ট ও বিরক্ত হইবার যথেষ্ট কারণ আছে ৷ মুসলমানদের সর্বত্র স্বতন্ত্র প্রতিনিধি দেওয়া হইয়াছে, যে প্রদেশে তাহাদের সংখ্যা কম সে প্রদেশে অল্পসংখ্যক বলিয়া স্বতন্ত্র নির্বাচকবর্গের নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রতিনিধি দেওয়া হইয়াছে, এবং যে প্রদেশে তাহাদের সংখ্যা অধিক, সে প্রদেশে বহুসংখ্যক বলিয়া স্বতন্ত্র নির্বাচকবর্গের নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রতিনিধি দেওয়া হইয়াছে ৷ হিন্দুদের কোথাও এই সুবিধা দেওয়া হয় নাই ৷ যেস্থানে তাহারা অধিকসংখ্যক, সেস্থানে দেওয়া যায় না, দিলে সভায় তাহাদের প্রাবল্য হইবে ৷ যেস্থানে তাহারা অল্পসংখ্যক, সেইস্থানে দেওয়া হয় নাই, দিলে সভায় মুসলমানদের সম্পূর্ণ প্রাবল্য খর্ব হইবে ৷ মুসলমান নিৰ্বাচকবর্গ যে নিয়মানুসারে গঠিত হইয়াছে, তাহাতে নির্দিষ্ট তত্ত্ব বা উদার মত লক্ষিত হয় না, অনেক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত মুসলমান বাদ পড়িয়া গেলেন, অনেক অশিক্ষিত গবর্ণমেন্টের খয়ের খা নিৰ্ব্বাচকবর্গের মধ্যে প্রবিষ্ট হইয়াছে, তথাপি সেই নূতন সৃষ্টিতে প্রজাতন্ত্রের অস্পষ্ট দূরবর্তী ছায়ার ছায়া পড়িয়াছে, হিন্দুদের উপর সেই এক রতি পরিমাণেও অনুগ্রহ হয় নাই ৷ এইরূপে ভারতবর্ষের প্রধান সম্প্রদায়কে অপমানিত ও অসন্তুষ্ট করিয়া রাখার কৌশল কোন জগদ্বিখ্যাত রাজনীতিবিদের কল্পনায় প্রথম উদয় হইল, তাহা জানিবার জন্য মনে কৌতূহল হইল ৷ বৰ্ক ও ভল্টরের ভক্তজন মরলী না কানাডা-শাসক লর্ড মিন্টোর? না কোন গুপ্ত রত্নের?


মুসলমানদের অসন্তোষ

শাসন সংস্কারে দুইজন মুসলমান অসন্তুষ্ট হইয়াছেন, ইংলণ্ডবাসী আমীর আলী সাহেব এবং কলিকাতার ডাক্তার সহরাওয়ার্দি, কিন্তু তাহাদের অসন্তোষের কারণ এক ধরণের নহে ৷ আমীর আলী রুষ্ট, কেননা এই শাসন সংস্কারে মসলমানদের যাহা দেওয়া হইয়াছে, তাহা অত্যল্প, জজ সাহেবের বিশ্বগ্রাসী লােভ তাহাতে তৃপ্ত হয় না ৷ পূর্বেও বুঝিয়াছিলাম যে সারাসেন জাতির ইতিহাস লিখিবার ফলে আমীর আলী সাহেবের মনে অতি উচ্চ ও প্রশংসনীয় মহত্ত্বলােভ জন্মিয়াছে, তাহার মনে মধ্যযুগের মুসলমান সাম্রাজ্যের পুনরাবির্ভাবের স্বপ্ন ঘুরিতেছে ৷ বিদ্রুপ করিলাম, কিন্তু ইহা বিদ্রুপ করিবার কথা নহে ৷ মহৎ মন, মহতী আকাঙ্ক্ষা, বিশাল আদর্শ রাজনীতিক ক্ষেত্রে অতিশয় উপকারী ও প্রশংসনীয়, তাহাতে শক্তি হয়, উদার ক্ষত্রিয়ভাব হয়, জীবনের তীব্র স্পন্দন হয়, যে অম্লাশী, সে জীবন্ত ৷ কিন্তু বিদ্রপের কথা, হাস্যকর স্বপ্ন এই যে, বৃটিশ কর্মচারীবর্গের অধীনে মুসলমানদের লুপ্ত মহত্ত্ব উদ্ধার হইবে ৷ আমীর আলী কি মনে করেন যে ইংরাজ মুসলমানকে ভারতের “দেওয়ান” করিবার মানসে এই পক্ষপাত করিতেছেন? ডাক্তার সুহরাওয়ার্দির অসন্তোষের কারণ অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র ৷ তাঁহার নালিশ এই যে, বিলাতফেরৎ অনেক শিক্ষিত মুসলমানকে নির্বাচন-অধিকারে বঞ্চিত করিয়া যত গবর্ণমেন্টের খয়ের খাঁ অশিক্ষিত ওস্তাগর দফতরী বিবাহের রেজিষ্ট্রার খাঁ বাহাদুর খাঁ সাহেবকে নির্বাচক করা হইল ৷ তিনি কি ইহাও বুঝিতে পারেন না যে বিলাতে, স্বাধীনতা-বিষ আছে, যাঁহারা বিলাতফেরৎ, তাঁহারা হয়ত সেই বিষে অল্পাধিক পরিমাণে বিষময় হইয়া আসিয়াছেন, সেইরূপ লােক ব্যবস্থাপক সভায় প্রবেশ করিলে মহাবিভ্রাট ঘটিবার সম্ভাবনা আছে ৷ আর এইরূপ সংস্কারে শিক্ষিত লােক উপযুক্ত নির্বাচক, না খয়ের খাঁ ওস্তাগর দফতরী খান সাহেব খাঁ বাহাদূর বিবাহের রেজিষ্ট্রার উপযুক্ত নিৰ্বাচক? এই প্রশ্নের উত্তর ডাক্তার সাহেব বিবেচনা করিয়া দিউন, তঁাহার অসন্তোষ অজ্ঞানসম্ভূত বলিয়া স্বীকার করিতে বাধ্য হইবেন ৷


মূল ও গৌণ

আমাদের রাজনীতিক চিন্তার প্রধান দোষ ও রাজনীতিক কর্মে দৌৰ্ব্বল্যের কারণ এই যে আমরা মূল ও গৌণের প্রভেদ বুঝিতে অক্ষম ৷ যাহা মূল, তাহাই ধরিতে হয়, যাহা গৌণ, তাহা মূলের অনুকূল যদি হয় মূলকে বজায় রাখিয়া গ্রহণ করিব, কিন্তু গৌণকে গ্রহণ করিতে গেলে যদি মূলকে পাইবার পথে বিঘ্ন বা বিলম্ব হইবার সম্ভাবনা হয়, তবে কোনও রাজনীতিবিদ গৌণকে গ্রহণ করিতে সম্মত হইবেন না ৷ আমরা কিন্তু সম্মত হই, পদে পদে মূলকে ফেলিয়া গৌণকে আগ্রহের সহিত ধরিতে যাই ৷ আমাদের ধ্রুব বিশ্বাস যে গৌণকে লাভ করিলে শেষে মূল আপনিই হাতে আসিবে ৷ বিপরীত কথাই সত্য, মূলকে লাভ করিলে তাহার সহিত যত গৌণ সুবিধা ও অধিকার জুটিয়া আসে ৷ রিফরমের সম্বন্ধে অনেকের এইরূপ মজ্জাগত ভ্রম ও বুদ্ধিদৌর্বল্য দেখিয়া দুঃখিত হইলাম ৷ যাহা হউক, কিছু লাভ করিলাম, কোন সময়ে আরও লাভ করিব, শেষে অল্প অল্প অধিকার লাভ করিতে করিতে স্বর্গে পহুছিব, যাঁহাদের এইরূপ ভাব, তাহারা এই কৃত্রিম ব্যবস্থাপক সভায় প্রতিনিধি হইবার উপযুক্ত রাজনীতিক বটেন ৷ শিশু ভিন্ন খেলনার দর বােঝে কে? কিন্তু শিশুপ্রকৃতি ত্যাগ করিয়া স্বপ্নরাজ্য হইতে অবতরণ করিয়া যদি একবার কঠিন ও অপ্রিয় সত্য দেখি, এইরূপ চিন্তাপ্রণালী কি ভ্রান্ত ও অমূলক তাহা সহজে বােধগম্য হয় ৷ বিজ্ঞ শিশুগণ আমাদের সম্মুখে ইংলণ্ডের দৃষ্টান্ত উপস্থিত করিয়া স্বমত সমর্থন করেন ৷ কিন্তু এই কাল মধ্যযুগও নহে, রাণী এলিজাবেথের সময়ও নহে, প্রজাতন্ত্রের চরম বিকাশের কাল বিংশ শতাব্দী, আমরাও স্বজাতির অধীন ইংরাজ প্রজা নই, শ্বেতবর্ণ পাশ্চাত্য রাজকর্মচারীবর্গের কৃষ্ণবর্ণ আসিয়াবাসী প্রজা, অতএব এই অবস্থায় ও সেই অবস্থায় স্বর্গ-পাতালের ভেদ ৷ ইংলণ্ডেও গৌণকে উপেক্ষা করিয়া মূলকে আদায় করিবার সুবিধা বা যন্ত্র না থাকিলে ইংলণ্ড হয় আজও স্বেচ্ছাচারতন্ত্রের অধীন দেশ হইয়া থাকিত, নহে ত রক্তপাতে ও রাষ্ট্রবিপ্লবে স্বাধীন হইত ৷ সেই সুবিধা বা যন্ত্র power of the purse, রাজা আমাদের কথা প্রত্যাখ্যান করিলেন, আমরাও রাজার বজেট ভােট করিব না এই অভ্রান্ত ব্রহ্মাস্ত্র ৷ আইন সংগঠন বা বজেট প্রণয়নে অধিকার প্রজার প্রতিনিধিবর্গের হাতে থাকিলে আমরাও আর রিফরম বয়কট করিতে বলিতাম না ৷ তবে কি না, রিফরম প্রত্যাখ্যান করা বিজ্ঞের কৰ্ম্ম নহে, গবর্ণমেন্ট ত গবর্ণমেণ্ট, তাহারা যাহা দেন, তাহা গ্রহণ করিতে হয়, ইহার পরে আরও দিতে পারেন ৷ গবর্ণমেন্ট কেন এই খেলনা ভারতের পক্ককেশ শিশুগণকে দিয়াছেন, তাহা কি একবার ভাবিয়াছ? দেশময় অসন্তোষ ও অশান্তি এবং দৃঢ়ভাবে বর্জন অস্ত্র প্রয়ােগের ফলে তােমাদের এই লাভ হইয়াছে ৷ তাহারা দেখিতেছেন, এই লাভে তােমরা সন্তুষ্ট হইবে, কি আরও দিতে হইবে ৷ তােমরা যদি ইহা গ্রহণ কর, তাহা হইলে আর একবার সেইরূপ তীব্র আন্দোলন ও বয়কটনীতির প্রয়ােগ হইলে আর কিছুই পাইবে না, না আকাশের চাদ, না চাদের কৃত্রিম স্বর্ণমাখা প্রতিকৃতি ৷ যদি দেখেন যে ইহাতে হইল না – প্রকৃত অধিকার দিতে হইবে, তাহা হইলে প্রকৃত অধিকার দিবেন, অধিক না হউক, অল্প কিছু দিবেন ৷ অতএব রিফরম প্রত্যাখ্যান করিয়া দৃঢ়ভাবে বয়কট প্রয়ােগই বুদ্ধিমানের কৰ্ম্ম ৷ কিন্তু তােমাদের এই সব কথা বলা বৃথা, শিশুমহলে যে সন্দেশ রসগােল্লা প্রচলিত, সেইগুলিই তােমাদের মুখরােচক ৷ আবার তােমরাই না কি ছেলেদের বল রাজনীতিতে মিশিতে নাই, তােমরা এখনও অপক্কবুদ্ধি, রাজনীতি বুঝিতে পার না ৷ স্বয়ং ছেলেমানুষী বুদ্ধি ত্যাগ করিলে তাহার পরে এই কথা বলা উচিত ছিল ৷


একটী খাঁটী কথা

আমাদের রাজনীতিকগণকে দোষ দিব কেন, এই দেশে বৃটিশ আমলে অনেকদিন প্রকৃত রাজনীতিক জীবন লুপ্ত হইয়াছে, সেই অনুভবের অভাবে আমাদের নেতারা রাজনীতিতত্ত্ব বুঝিতে অসমর্থ হইয়াছেন ৷ কিন্তু এত দীর্ঘকাল পরাধীন দেশের শাসনে কৃতবিদ্য ও লব্ধপ্রতিষ্ঠ হইয়াও ইংরাজ রাজনীতিকগণ এই কয়েক বৎসর ধরিয়া যে বিষম ভ্রম করিয়া আসিতেছেন, তাহা দেখিয়া বিস্মিত হইতে হয় ৷ বঙ্গভঙ্গের পরে এই রিফরমই তাহাদের প্রধান ও মারাত্মক ভুল ৷ এই রিফরমের ফলে মধ্যপন্থীর প্রভাব দেশে বিনষ্ট হইবে, জাতীয় পক্ষের দ্বিগুণ বলবৃদ্ধি হইবে, কর্মচারিবর্গের পক্ষে ইহা যথেষ্ট ক্ষতি ৷ কিন্তু সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায়কে অপদস্থ ও অপমানিত করিয়া যে বিষবীজ বপন করা হইয়াছে তাহাতে আরও গুরুতর ক্ষতি হইল ৷ মিঃ র্যামসী ম্যাকডনাল্ড এম্পায়রের প্রতিনিধিকে বলিয়াছেন, এই হিন্দু-মুসলমান ভেদ রাজনীতিক্ষেত্রে স্থাপিত করিয়া কৰ্মচারীবর্গ নিজের অনিষ্টই করিয়াছেন ৷ কাচা রাজনীতিক আন্দোলন অপেক্ষা সাম্প্রদায়িক ও ধৰ্ম্মভেদমূলক অসন্তোষ ও আক্রমণ অতি গুরুতর ও গবর্ণমেন্টের ভীতির কারণ ৷ অতি খাটী কথা ৷ আমরা যদি ইংরাজজাতির বিদ্বেষে গবর্ণমেন্টের অকল্যাণই লক্ষ্য করিয়া দেশের কাৰ্য্য করিতাম, আমাদের শত্রুগণ সেই কথা রাতদিন প্রচার করেন – তাহা হইলে আমরা ইহাতে আনন্দিত হইতাম ৷ কিন্তু আমরা গবর্ণমেন্টের অকল্যাণ চাই না, দেশের কল্যাণ ও স্বাধীনতা চাই ৷ হিন্দু-মুসলমানের সংঘর্ষে যেমন গবর্ণমেন্টের তেমন দেশের ভীষণ অকল্যাণ হইবে বলিয়া এই ভেদনীতির তীব্র প্রতিবাদ করি এবং হিন্দুসম্প্রদায়কে মুসলমানের সংঘর্ষ ত্যাগ করিয়া রিফরম বয়কট করিতে বলি ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates