CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১৮

ধৰ্ম্ম, ১৮শ সংখ্যা, ১৯এ পৌষ, ১৩১৬

মুমূর্ষ কন্ভেন্সন

আমাদের কনভেন্সনপ্রিয় মহারথীগণ লাহােরে মেহতা মজলিস করিতে বদ্ধপরিকর হইয়াছিলেন ৷ পঞ্জাবের প্রজাসকল কভেন চায় না, নানা উপায়ে তাহাদের অনিচ্ছা ও অশ্রদ্ধা জ্ঞাপন করিয়াছিল, কিন্তু হরকিসনলাল নাছােড়বান্দা ৷ লােকমত দলন করিবার জন্য কভেন্সনের সৃষ্টি, পঞ্জাবের লােকমত দলন করিয়া রাজপুরুষগণের প্রসন্নতার উপর নির্ভর করিয়া যদি লাহােরে কভেন্সন বসাইতে পারেন, তবে মেহতা মজলিসের অস্তিত্ব সার্থক হয় ৷ এই হঠকারিতার যথেষ্ট প্রতিফল হইয়াছে ৷ সমস্ত ভারতবর্ষ হইতে মােট তিনশ প্রতিনিধি মেহতা মজলিসে উপস্থিত হইয়াছিলেন এবং দর্শকবৃন্দের সংখ্যা এত কম ছিল যে নাতিবৃহৎ ব্রাদলা হলের অর্ধেকভাগ মাত্র পরিপূর্ণ হইয়াছিল ৷ এই শূন্য মন্দিরে এই অল্প পূজকের হতাশ পুরােহিতগণ বৃটিশ রাজলক্ষ্মীকে নানান স্তব স্তোত্রে সন্তুষ্ট করিয়া, তাহার চরণকমলে অনেক আবেদন নিবেদনরূপ উপহার করিয়া, ভক্তদের উপযুক্ত আদর করেন না বলিয়া মৃদুমন্দ ভৎসনা শুনাইয়া তাঁহাদের আৰ্য্যকুলে জন্ম চরিতার্থ করিলেন ৷ মেহতা মজলিস জোর করিয়া নিজেকে জাতীয় মহাসভা নামে অভিহিত করে, জাতীয় মহাসভার কোন্ অধিবেশনে অর্ধশূন্য পাণ্ডালে অল্পজন প্রতিনিধি এইরূপ হাস্যকর প্রহসন অভিনয় করিয়াছেন, বল দেখি? তােমাদের মজলিস সভা বটে, কিন্তু “মহা”ও নহে, “জাতীয়ও নহে ৷ যে সভায় জাতি যােগদান ৷ করিতে অসম্মত, তাহার আবার “জাতীয়” নাম!


সখ্যস্থাপনের প্রমাণ

বৃটিশ রাজলক্ষ্মী উত্তর সমুদ্রের পারে বসিয়া যখন রয়টারের টেলিগ্ৰামরূপ দূতের মুখে এই সকল স্তবস্তোত্র শ্রবণ করিলেন, তখন তাহার মনের অন্তর্নিহিত বিদ্রপ ও অবজ্ঞা মনেই রাখিয়া প্রীত হাস্য করিলেন কিনা, আমরা জানি না ৷ হয়ত প্রতিনিধি নির্বাচনের মহারােলে মালবিয়া গােখলে সুরেন্দ্রনাথের ক্ষীণস্বর একেবারে চাপিয়া পড়িয়াছে ৷ কে জানে হয়ত, পূজ্য ইংরাজ দেবতাগণ ইহাও জানেন না যে হরকিসনলাল রাজভক্তিকে চরিতার্থ করাকে কভেন্সনের চরম উদ্দেশ্য বলিয়া নির্দিষ্ট করিয়াছেন ৷ ক্ষতি নাই, কলিকাতাস্থ ইংরাজ সংবাদপত্রের চালকগণ বৃটানিয়ার নামে পূজা গ্রহণ করিয়াছেন ৷ লাহােরের এই কেলেঙ্কারি বৃথা হয় নাই ৷ ইণ্ডিয়ান ডেলী নিউজ মুক্তহস্তে আশীৰ্বাদ বর্ষণ করিয়াছেন, ষ্টেটসম্যান সেই মধুর ভৎসনার মধুর ভাব না বুঝিয়া একটু অসন্তুষ্ট হইয়াও পূজায় সন্তোষ প্রকাশ করিয়াছেন, ইংলিশম্যানও গালাগালি দিতে না পারিয়া এদিক ওদিক বঙ্কিম কটাক্ষ করিয়াও হরকিসনলালের রাজভক্তি প্রত্যাখ্যান করেন ৷ নাই ৷ দেশবাসীর অসন্তোষ, অ্যাংলাে-ইণ্ডিয়ানদের প্রীতি ও প্রশংসা মেহতা মজলিসের পরিপােষকগণের উপযুক্ত পুরস্কার ৷


নেতা দেখি, সৈন্য কোথায়?

কভেন্সনের অপূর্ব বাহাদুরী এই যে, ভারতের যত বড় বড় নেতা আছেন, সর্বপ্রধান ফেরােজশাহ ভিন্ন সকলে উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু তাহাদের অধীন সৈন্য লাহােরের ভীষণ শীতের ভয়ে বা আর কোনও কারণে নেতাদের সাহসে সাহসান্বিত না হইয়া স্বগৃহেই খ্রীষ্টমাস ছুটি কাটাইলেন ৷ বঙ্গদেশ হইতে অম্বিকাবাব ভিন্ন যত নেতা গিয়াছিলেন সুরেনবাবু, ভূপেনবাবু, আশুবাবু, যােগেশবাবু, পৃথ্বীশবাবু, তাহাদের সৈন্যের সংখ্যা কেহ কেহ দুইজন, কেহ কেহ তিনজন, কেহ কেহ পাঁচজন বলেন ৷ মাদ্রাজ হইতে বারজন গিয়াছিলেন, একজন দেওয়ান বাহাদুর এই মহতী সেনার নেতা, আর কয়জন নেতা ছিলেন, তাহার সঠিক সংবাদ এখনও আসে নাই ৷ মধ্যপ্রদেশ হইতে পাঁচ-ছ জন, সকলে নেতা, কেন না মধ্য-প্রদেশে পাঁচ-ছ জন নেতা ভিন্ন মধ্যপন্থী আর নাই ৷ সংযুক্ত প্রদেশ হইতে মহারথী মালবিয়া গঙ্গাপ্রসাদ ও কয়েকজন রাজা, শাহেবজাদা ইত্যাদি গিয়াছিলেন, তাঁহাদের সৈন্য ছিল, কেহ বলে ত্রিশ জন, কেহ বলে ষাট, কেহ বলে আশী ৷ কেবল পঞ্জাবে এই ক্রম রক্ষিত হয় নাই, সেই প্রদেশে হরকিসনলালই একমাত্র নেতা, আর সকলে সৈন্য ৷ গ্রীক প্রতিনিধি কিনিয়াস রােমন সেনেটে উপস্থিত হইয়া বলিলেন, This is a senate of kings! এই সভার প্রত্যেক সভ্য একজন রাজা! আমরাও কনভেন্সন দেখিয়া বলিতে পারি, This is a Congress of leaders, এই মহাসভায় প্রত্যেক সভ্য একজন নেতা! কিন্তু সৈন্য কোথায়?


শ্রীরামকৃষ্ণ ও ভবিষ্যৎ ভারত

ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণদেবের উক্তি ও তাহার সম্বন্ধে যে সমস্ত পুস্তক রচিত হইয়াছে তৎপাঠে জানা যায় যে তিনি দেশে যে নূতন ভাব গঠিত হইয়াছে, যে ভাবরাশি সমগ্র ভারতবর্ষকে প্লাবিত করিয়া ফেলিতেছে, যে ভাবতরঙ্গে মত্ত হইয়া কত যুবক সমস্ত তুচ্ছ করিয়া আত্মাহুতি প্রদান করিতেছে, সে ভাবের কথা তিনি কিছুই বলেন নাই, সৰ্ব্বভূতান্তৰ্য্যামী ভগবান তাহা দেখেন নাই; এ কথা কিরূপে বিশ্বাস করিতে পারি? যাঁহার পদস্পর্শ পৃথিবীতে সত্যযুগ আনয়ন করিয়াছে, যাঁহার স্পর্শে ধরণী সুখমগ্না, যাঁহার আবির্ভাবে বহুযুগ সঞ্চিত তমােভাব বিদূরিত, যে শক্তির সামান্য মাত্র উন্মেষে দিগদিগন্তব্যাপিনী প্রতিধ্বনি জাগরিতা হইয়াছে; যিনি পূর্ণ, যিনি যুগধর্ম প্রবর্তক, যিনি অতীত অবতারগণের সমষ্টি স্বরূপ, তিনি ভবিষ্যৎ ভারত দেখেন নাই বা তৎসম্বন্ধে কিছু বলেন নাই এ কথা আমরা বিশ্বাস করি না – আমাদের বিশ্বাস যাহা তিনি মুখে বলেন নাই, তাহা তিনি কার্য্যে করিয়া গিয়াছেন ৷ তিনি ভবিষ্যৎ ভারতকে, ভবিষ্যৎ ভারতের প্রতিনিধিকে আপন সম্মুখে বসাইয়া গঠিত করিয়া গিয়াছেন ৷ এই ভবিষ্যৎ ভারতের প্রতিনিধি স্বামী বিবেকানন্দ ৷ অনেকে মনে করেন যে স্বামী বিবেকানন্দের স্বদেশপ্রেমিকতা তঁাহার নিজের দান ৷ কিন্তু সূক্ষ্মদৃষ্টিতে দেখিলে বুঝিতে পারা যায় যে তাহার স্বদেশপ্রেমিকতা তাহার পরম পূজ্যপাদ গুরুদেবেরই দান ৷ তিনিও নিজের বলিয়া কিছু দাবী করেন নাই ৷ লােকগুরু তাহাকে যে ভাবে গঠিত করিয়াছিলেন তাহাই ভবিষ্যৎ ভারতকে গঠিত করিবার উৎকৃষ্ট পন্থা ৷ তাহার সম্বন্ধে কোন নিয়ম বিচার ছিল না – তাহাকে তিনি সম্পূর্ণ বীরসাধক ভাবে গঠন করিয়াছিলেন ৷ তিনি জন্ম হইতেই বীর, ইহা তাঁহার স্বভাবসিদ্ধ ভাব ৷ শ্রীরামকৃষ্ণদেব তাহাকে বলিতেন, “তুই যে বীর রে”! তিনি জানিতেন যে, তাঁহার ভিতর যে শক্তি সঞ্চার করিয়া যাইতেছেন কালে সেই শক্তির উদ্ভিন্ন ছটায় দেশ প্রখর সূৰ্য্যকর ৷ জালে আবৃত হইবে ৷ আমাদের যুবকগণকেও এই বীরভাবে সাধন করিতে হইবে ৷ তাহাদিগকে বেপরওয়া হইয়া দেশের কাৰ্য্য করিতে হইবে এবং অহরহ এই ভগবৎ-বাণী স্মরণপথে রাখিতে হইবে “তুই যে বীর রে”!









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates