CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




পত্রাবলী




সাধনাবিষয়ক পত্রাবলী (“ন” কে লিখিত)

ইহা সত্য নয় যে তােমার ভিতরেই বিরুদ্ধ শক্তি আছে – বিরুদ্ধ শক্তি বাহিরে, আক্রমণ করে ভিতরে প্রবেশ করবার চেষ্টা করে – এইরকম ভয় ও উদ্বেগকে স্থান দিয়াে না ৷...

6.2.34


ন: দু-তিন দিন যাবৎ দেখছি যে আশ্রমের মধ্যে এবং আশ্রমের আবহাওয়ার মধ্যে একটি খারাপ শক্তি ও একটি ভাল শক্তি এসে ঘােরাফেরা করছে ৷ আমার অনুভূতি কি সত্য?

উ: যেমন বহির্জগতে আশ্রমেও এই দুই শক্তি আরম্ভ থেকে বিদ্যমান আছে ৷ অশুদ্ধ শক্তিকে জয় করে সিদ্ধিলাভ কৰ্ত্তে হবে ৷

6.2.34


ন: মা, সকলে সব সময় তােমাকে অনুভব করে ধ্যান করে শান্ত ভাবে চলছে ৷ আমি কেন সব সময় তােমাকে হারিয়ে দ্বন্দ্ব, মিথ্যা শক্তি ও বিরুদ্ধ শক্তির বাধায় আক্রান্ত হয়ে পড়লাম?

উ: “সকলে” কারা? দুয়েকজন ছাড়া কেহ শান্তভাবে চলে না, সকলেই বাধা মধ্য দিয়ে চলতে চলতে এগুচ্ছে ৷

8.2.34


মহেশ্বরীর দান শান্তি সমতা মুক্তির বিশালতা – তােমার এই সবের বিশেষ দরকার আছে বলে তিনি তােমার আহ্বানে দেখা দেন ৷

9.2.34


তাতে ভীত বা বিচলিত হয়াে না, যােগপথের নিয়ম এই, আলাে অন্ধকারের অবস্থা অতিক্রম করে যেতে হয় ৷ অন্ধকারেও শান্ত হয়ে থাক ৷

9.2.34


Persevere in this attitude of firmness and courage. এই দৃঢ়তা ও সাহসের ভাবকে সব সময় ধরে থাক ৷

9.2.34


(Red Lotus) — The Divine Harmony.

(Blue Light) — The Higher Consciousness.

(Golden Temple) — The Temple of the Divine Truth.

স্থির ধীর হয়ে থাক, তবে তােমার বাহিরেও, তােমার বহিঃপ্রকৃতিতে, তােমার জীবনে আস্তে আস্তে এই সকল ফলবে ৷

12.2.34


বাধা সকলের থাকে, আশ্রমে এমন সাধক নাই যার বাধা নাই ৷ ভিতরে স্থির হয়ে থাক, বাধার মধ্যেও সাহায্য পাবে, সত্য চৈতন্য সকল স্তরে ফুটবে ৷

12.2.34


সব সময় স্থির হয়ে থাক – মায়ের শক্তিকে শান্তভাবে ডেকে সব উদ্বেগ ছেড়ে দিয়ে ৷

13.2.34


প্রতিক্ষণ বাধার কথা, আমি খারাপ আমি খারাপ ইত্যাদি কথা চিন্তা করে করে চলা হচ্ছে তােমার প্রধান অন্তরায় ৷ শান্ত ভাবে মায়ের উপর নির্ভর করে, স্থির ভাবে সাধারণ প্রকৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে, আস্তে আস্তে জয় করা – এই হচ্ছে এক মাত্র পরিবর্তনের উপায় ৷

23.2.34


এটা কি মস্ত বড় অহংকার নয়, যে তােমারই জন্যে এত কাণ্ড হয়েছে? আমি খুব ভাল, খুব শক্তিমান, আমার দ্বারাই সব হচ্ছে, আমা ছাড়া মায়ের কাজ চলতে পারে না, এ ত এক রকম অহংকার ৷ আমি খারাপের চেয়ে খারাপ, আমারই বাধার জন্য সব বন্ধ হয়েছে, ভগবান তার কাজ চালাতে পারেন না, এই আর একরকম উল্টো অহংকার ৷...

23.2.34


ইহা হচ্ছে তােমার ভিতরের মন, আর মায়ের ভিতরের মনের যােগ – কপালে ওই মনের centre – সে যােগ যখন হয়, তখন সেই ভিতরের মনে ভাগবত সত্যের দিকে একটা আকর্ষণ হয় আর সে উঠতে আরম্ভ করে ৷

26.2.34


এটাই ঠিক পন্থা ৷ সব সময় ভাল অবস্থা, সব সময় ভিতরে মায়ের দর্শন শ্রেষ্ঠ সাধকেরও হয় না – সে হবে সাধনার পাকা অবস্থায়, সিদ্ধির অবস্থায় ৷ সকলের হয় মাঝে মাঝে ভরা অবস্থা আর মাঝে মাঝে শূন্য অবস্থা ৷ শূন্য অবস্থায়ও শান্ত হয়ে থাকা উচিত ৷

26.2.34


অবশ্যই অনুভবটী সত্য – রাখতে হবে, অথবা বার বার repeat করতে হবে ৷ আর বিপরীত অনুভব বা বাধা বা শূন্য অবস্থা এলে উতলা না হয়ে শান্ত হয়ে ভাল অনুভবের অপেক্ষা করা উচিত ৷

26.2.34


ন: কাল রাত্রে স্বপ্ন দেখলাম যে আমার মন প্রাণ প্রকৃতিই আমাকে তােমার পথে চলতে সাহায্য করছে ৷ ইহা কি কোন দিন সত্য হবে?

উ: আজ থেকেও তারা সাহায্য কৰ্ত্তে পারে যদি তুমি শান্ত ও স্থির হয়ে থাক ৷ তােমার এই ধারণা ভুল যে তােমার মনপ্রাণের সমস্ত প্রকৃতি যােগের বিরােধী ৷

26.2.34


...তপস্যার অগ্নি জ্বল্লে কম্প আর মাথায় একটী অসাধারণ অবস্থা অনেকের হয় ৷ স্থির হয়ে থাকলে সে আর টিকে না, সব শান্ত হয়ে যায় ৷

26.2.34


ন: কাল রাত্রি হতে মাথার উপর একটা খুব শান্ত ও গভীর জিনিষ অনুভব করছি ৷ কখনও তা বিস্তৃত হয়ে সমস্ত আধারে ছড়িয়ে পড়ে, কখনও-বা হৃদয়ে ও মনের মধ্যে নেমে কিছুক্ষণ থাকে ৷

উ: ইহা খুব ভাল ৷ এইটী হচ্ছে আসল অনুভূতি ৷ এই শান্তি যখন সমস্ত আধারে ব্যাপ্ত হয়ে যায় আর দৃঢ় নিরেট স্থায়ী হয় তখনই ভাগবত চেতনার প্রথম ভিত্তি স্থাপিত হয় ৷

27.2.34


ইহা করা সকলের পক্ষে কঠিন ৷ শান্তি সত্য ইত্যাদি আগে ভিতরে স্থাপিত হয়, তারপরে বাহিরে কার্যে পরিণত হয় ৷

28.2.34


শূন্য অবস্থাকে ভয় করতে নেই ৷ শূন্য অবস্থার মধ্যেই ভাগবত শক্তি নেমে আসে ৷ মা তােমার মধ্যে সর্বদাই আছেন – তবে শান্তি শক্তি আলাে নিজের মধ্যে স্থাপিত না হলে সে সবসময় বােঝা যায় না ৷

28.2.34


যে তােমাকে ডাকল, সে তােমার মা নয় ৷ এই সকল অভিজ্ঞতায় পার্থিব মাতা হচ্ছে পার্থিব প্রকৃতি, সাধারণ বহিঃপ্রকৃতির প্রতীক মাত্র ৷

Feb. 1934


সব বাধা ত বিরােধী শক্তির সৃষ্টি নয় – সাধারণ অশুদ্ধ প্রকৃতিরই সৃষ্টি, যা সকলের মধ্যে আছে ৷

Feb. 1934


তপস্যা শুধু এই, স্থির থাকা, মাকে ডাকা, খুব শান্ত দৃঢ়ভাবে অশান্তিকে, নিরাশাকে, কামনা-বাসনাকে প্রত্যাখ্যান করা ৷

Feb. 1934


আশ্রমে যে অসুখ বেড়াচ্ছে একে ওকে ধরে, এগুলাে তারই লক্ষণ —স্থির থাকলে এইগুলাে স্পর্শ করেই চলে যায় ৷

Feb. 1934


ন: কোন কোন সময় আমার মধ্যে এমন একটি শক্তি ও তেজ আসে যে
তখন মনে হয় আমাকে কোন মিথ্যার শক্তি স্পর্শ করতে পারবে না ৷

উ: হ্যা, এইরূপ শক্তি আধারে সব সময় থাকলে, সাধনা অনেকটা সহজ হয়ে যায় - যদি তাতে অহংকার না আসে ৷

Feb. 1934


বাধা সকলের হয় – যারা কাজ করে না, তাদেরও বিশেষ জোরে বাধা আসে ৷

1.3.34


ন: ধ্যানে বসলে আগের মত গভীরে ও সমাধির মধ্যে যেতে পারি না কেন মা?

উ: কেন হয় বলেছি – যােগশক্তির জোর এখন প্রকৃতির রূপান্তর, শান্তির ও ঊর্ধচৈতন্যের অবত্রণ ও প্রতিষ্ঠার উপর বেশী পড়েছে, গভীর ধ্যানের অভিজ্ঞতার উপর তত না – আগে যেমন হয়েছিল ৷

1.3.34


ন: আজ দেখলাম, মূলাধারের সঙ্গে মায়ের চেতনার সঙ্গে একখানা স্বর্ণদড়ির সম্বন্ধ হয়েছে ৷

উ: এর অর্থ – মায়ের চেতনার সাথে তােমার physical প্রকৃতির একটী সম্বন্ধ স্থাপিত হয়েছে – সােনার দড়ি যে সম্বন্ধের চিহ্ন ৷

2.3.34


ন: ...আমার একটু মনমরা শুষ্কভাব এসেছে ৷ আর মনপ্রাণ-চেতনা দেখি আমাকে ত্যাগ করে দুদিন ধরে বাইরের জিনিষের সাথে, চেতনার সাথে যুক্ত হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ কেমন যেন তােমাকে হারায়ে শূন্য নির্জনতার মধ্যে পড়ে আছি ৷

উ: যদি তাই হয়, তাহলে তার অর্থ এই যে তােমার ভিতরের সত্তা কতকটা স্বতন্ত্র ও মুক্ত হয়ে গেছে – বাহিরের সত্তাই বাহিরের জিনিষের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় ৷ সেই বাহিরের সত্তাকেও আলােকিত ও মুক্ত করা প্রয়ােজন ৷

3.3.34


সাদা গােলাপ মায়ের কাছে প্রেমময় আত্মসমর্পণ, তার ফল সত্যের আলােকের বিস্তার আধারের মধ্যে ৷ সাদা পদ্ম = মায়ের চেতনা প্রস্ফুটিত তােমার মানস স্তরে ৷ কমলালেবুর রংয়ের মত আলাে (red-gold) = দেহের মধ্যে পরম সত্যের alfa (Supramental in physical) |

5.3.34


সত্যের সােজা পথ খােলা আধারে ৷ যা সমর্পণ করা হয় সেই অবস্থায় আধারে, সহজ সরলভাবে উপরে মায়ের কাছে গিয়ে সত্যের সঙ্গে মিলিত হয়, সত্যময় হয়ে যায় ৷

5.3.34


ন: মা, দেখলাম যে overmind-এর ঊর্ধ্বে এক infinite জগৎ ৷ সে জগতে দেখলাম তােমার মত কতকগুলি বালিকা খেলা করছে ৷ কিছুক্ষণ পরে দেখলাম সেখান হতে দুটি বালিকা আমাকে ডাকতে ডাকতে আমার দিকে নেমে আসল ৷ মা, বালিকাগুলি কে?

উ: সত্যের জগৎ, সেই জগতের দুই শক্তি নেমেছিল ডাকতে – সত্যের দিকে উঠবার জন্যে ৷

5.3.34


ন: উপর হতে একটি খুব বড় চক্রের মত আমার মাথার মধ্যে নেমেছে ৷ ...আর তার প্রভাব দেখি একটু একটু করে সমস্ত স্তরে বিস্তৃত হচ্ছে ৷

উ: মায়ের শক্তির একটী ক্রিয়া ৷ যে উর্দ্ধ চেতনা হতে মাথায় (মনক্ষেত্রে) নেমে সমস্ত আধারে কাজ করবার জন্যে বিস্তৃত হচ্ছে ৷

7.3.34


ন: আত্মার গভীর প্রদেশে একখানা গভীরতম জগৎ আছে ৷ এই জগতের মধ্যে দিয়ে দেখলাম একখানা সােজা রাস্তার মত কি বহু ঊর্ধের দিকে উঠে গেছে ৷

উ: অর্থ – সেখানে পরম সত্যের সঙ্গে একটী সম্বন্ধ সৃষ্ট হয়েছে ৷

7.3.34


ন: নাভির উপর হতে দেখি সাপের মত আলােকিত একটা কি নেচে নেচে ঘুরে ঘুরে ঊর্ধের দিকে উঠে যাচ্ছে ৷

উ: সে হচ্ছে প্রাণ ও দেহের শক্তি ঊর্দ্ধ সত্যের সঙ্গে মিলিত হবার জন্যে উঠে যাচ্ছে ৷

7.3.34


ন: মা, যতই তােমার শক্তির শান্ত চাপ পড়ছে, ততই দেখি মাথা কামড়াছে ৷ উ: Physical mind খুল্লে সেরকম মাথা কামড়ান আর হবে না ৷

7.3.34


ন: মা, ভেতরে যেসব সুন্দর অনুভূতি হয়, তাতে মনে করি যে এবার থেকে আমি এইরকম সুন্দরভাবেই সবসময় থাকব ৷ কিন্তু বহিঃপ্রকৃতিতে ও চেতনায় আসলে সব চলে যায় কেন? তােমাকে আবার স্মরণ করতে লাগলে এবং অন্তরের দিকে দৃষ্টি ফেরালে সেই অনুভূতিগুলাে ফিরে আসে ৷

উ: ওই রকমই হয় ৷ যদি স্মরণ করে সুন্দর অবস্থা আবার দেখতে ও অনুভব করতে পার, ইহা উন্নতির লক্ষণ ৷ বহিঃপ্রকৃতির বিপরীত ভাবের জোর কমে যাচ্ছে বােধ হয় ৷

9.3.34


ন: কতকগুলি ছােট ছােট বালিকার মত কারা করুণ ও মধুর সুরে শুধু তােমাকে ডাকছে, “মা, আমরা তােমাকে চাই, আমাদেরকে তােমার করে নাও” ৷ আমি তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি না ৷ এরা কি সত্য? এরা কে, মা?

উ: হঁ্যা, সত্য ৷ বালিকারা হয় তুমি নিজে নানা স্তরে নয় তােমার চেতনার কয়েকটী শক্তি (Energies) ৷

9.3.34


জ্ঞান অনেক রকম আছে – চেতনা যেমন, জ্ঞানও তেমন ৷ উদ্ধৃ চেতনার জ্ঞান সত্য ও পরিষ্কার – নিম্ন চেতনার জ্ঞানে সত্যমিথ্যা মিশ্রিত, অপরিষ্কার ৷ বুদ্ধির জ্ঞান এক রকম, supramental চেতনার জ্ঞান আর এক রকম, বুদ্ধির অতীত ৷ শান্ত জ্ঞান ঊর্দ্ধচেতনার ৷

12.3.34


ন: মা, তােমাকে আমার মধ্যে অনুভব করলে যেন আমিত্ব ভুলে যাই ৷ আমার চেতনা, ইচ্ছা, অনুভূতি এবং সমস্ত অংশ কারাে যন্ত্র হিসাবে চালিত হয় ৷ কিছুক্ষণ পরে তা হারিয়ে ফেলি ৷

উ: এইরূপ অনুভূতিও উদ্ধৃচেতনার ৷ সে চেতনা যখন মন প্রাণ দেহে নামে, তখন জাগ্রতে এইরূপ হয় ৷

12.3.34


ন: আমি দেখলাম একটা খুব সুন্দর ছােট গাছ, তার পাতার রঙ চাদের আলাের মত উজ্জ্বল এবং সাদা ৷ গাছটি ক্রমশ বড় ও উজ্জ্বল হয়ে নিজেকে ভগবানের দিকে খুলছে ৷ আর দেখলাম একটি শান্ত ও পরিষ্কার সমুদ্র তােমার দিকে বয়ে যাচ্ছে, আর আমি যা সমর্পণ করছি তা এই সমুদ্রের সাথে মিশে যাচ্ছে ৷ উ: গাছটী আধ্যাত্মিকতার বৃদ্ধি তােমার মধ্যে – সমুদ্র তােমার vital.

12.3.34


ন: বিজ্ঞানের আলাে (Supramental light) কি কমলালেবুর রঙের মত আলাে?

উ: হ্যা, ঠিক আদি Supramental light নয়, তবে সে আলাে যখন ৷ physicalএ নামে, তখন ঐ রঙকে ধারণ করে ৷

12.3.34


ইহা খুব ভাল ৷ এইরূপ সত্যমিথ্যাকে স্বতন্ত্র হওয়া psychic সত্তার জাগ্রত ভাবের লক্ষণ ৷Psychic discrimination, চৈত্য পুরুষের বিবেকের দ্বারা এইরূপ স্বতন্ত্র হয়ে পড়ে ৷

14.3.34


সাধক-সাধিকার কথা বেশী ভাবতে নাই – তাতে মন সহজে সাধারণ বাহিরের চেতনায় নেমে যায় – এই সব মাকে সমর্পণ করে, মায়ের উপর নির্ভর করে ভিতরে বাস করতে হয় ৷

16.3.34


ন: একটী ছােট বালিকা আমার সাথে সাথে যেন আছে ও বেড়াচ্ছে ৷ তার প্রভাব যখন বহিঃসত্তায়, বহিঃসত্তা হতে কি যেন তােমাকে পাওয়ার জন্য aspire করে ৷

উ: বালিকাটী বােধ হয় নিজের psychic being – মায়ের অংশ ৷

17.3.34


এই সব বিলাপ ও আত্মগ্লানির কথা লেখায় বিশেষ কিছু উপকার হবে না ৷ শান্তভাবে মায়ের উপর নির্ভর করে চলতে হয় ৷ যদি বাধা আসে, তা শান্তভাবে সাধনা করে, মাকে ডেকে মায়ের শক্তিতে অতিক্রম করতে হয় ৷ যদি নিজের ভিতরে প্রকৃতির কোন ত্রুটি বা wrong movement দেখ তাহলেও বিচলিত চঞ্চল দঃখিত হয়ে কোন লাভ নেই – মায়ের কপায়, সাধনার উন্নতিতে অপ-সারিত হবে বলে এই শান্ত বিশ্বাস রেখে নিজেকে উপরের দিকে খুলতে হবে ৷ যােগসিদ্ধি বা রূপান্তর একদিনে বা অল্পদিনে হয় না ৷ ধীর শান্ত হয়ে পথে চলতে হয় ৷

17.3.34


ন: মাঝে মাঝে দেখছি আমার ভিতরের গভীর স্তর হতে খুব সুন্দর আলােকময় পবিত্র শান্ত জিনিষ একটি ফুলের মত হয়ে তােমাকে আহ্বান করতে উপরের দিকে উঠে ৷ কিছুদূর উঠলে দেখি উপর হতে নানা রকমের তােমার জিনিষ নেমে আসে আর এর সাথে মিলিত হয় ৷

উ: যা উঠে তাহা তােমার psychic চেতনা – যে ঊৰ্ধ চেতনার স্তরে উঠে, সেই সেই স্তরের শক্তি আলাে শান্তি ইত্যাদির সঙ্গে মিলিত হয়ে আধারে নামিয়ে আনে ৷

20.3.34


ফুল হবার অর্থ – তােমার psychic surrender হচ্ছে ৷

20.3.34


ন: মা, এখন দেখছি যে মাথার চারিদিকে একটি শান্ত শক্তিমান এবং আলােকময় কি ঘুরছে, আর এই দেহ মন প্রাণ হতে কি সব যেন শুষ্ক এবং বাসি ফুলের মত ঝরে পড়ছে ৷

উ: ইহা হচ্ছে উর্দ্ধ চেতনার অবতরণ ও আধারের উপর প্রভাব ৷

20.3.34


সাধনা হয় সময়ের প্রয়ােজন অনুসারে ৷ আগে ছিল ভিতরের সাধনার, সহজ ধ্যানের অবস্থা - এখন প্রয়ােজন অন্তর বাহিরকে এক করা - দেহচেতনা পৰ্য্যন্ত ৷

21.3.34


ন: তুমি লিখেছিলে, “...তবে কাজের সময় খুব বেশী গভীরে না যাওয়া ভাল” ৷ মা, গভীরে গেলে কি খারাপ হয়? আমার যখন এইরূপ হয় তখন দেখি, আমার বাহিরের অংশ যা কাজ করতে হয় করছে.. ৷

উ: তাহা ভাল ৷ গভীরে যাওয়া এই অর্থে লিখলাম, যেন গভীর trance মগ্ন হওয়া – কেহ যদি এসে হঠাৎ ভেঙ্গে দেয়, তাহলে ফল ভাল নাও হতে পারে ৷

21.3.34


এইসব অনুভূতি খুব ভাল ৷ এই সকল জিনিস প্রথম শুধু আসে যায় আবার আসে, থাকে না, কিন্তু আস্তে আস্তে জোর পায়, আধারও অভ্যস্ত হয়ে যায়, তার পরে বেশী স্থায়ী হয় ৷

22.3.34


বড় রাজ্য true physical (spiritual physical) হতে পারে আর বালক বালিকা সে রাজ্যের পুরুষ প্রকৃতি, বােধ হয় ৷

23.3.34

আর সব ঠিক কিন্তু Psychic সত্তা মন প্রাণ দেহের পিছনে থাকে আর এই তিনটীকেই স্পর্শ করে ৷ মনের ওই ধারে অধ্যাত্ম সত্তা ও ঊর্ধচেতনা থাকে ৷

23.3.34


যা দেখেছ তা সত্যই – তবে যাকে খারাপ শক্তি বল, সে সাধারণ প্রকৃতি মাত্র ৷ সেই প্রকৃতিই মানুষকে প্রায় সব করায় – সাধনায় তার প্রভাব অতিক্রম করতে হয় – তবে সহজে হয় না – দৃঢ় স্থির চেষ্টায় শেষে হয়ে যায় সম্পূর্ণরূপে ৷

26.3.34


ন: মা, প্রাণের নিম্নে দেখলাম একটা সমতল ভূমি আছে ৷ সেখানে একটি গাভী আছে ৷ আর মনের নিম্নেও দেখলাম একখানা সমতল ভূমি আছে, তাতে দেখলাম একটি ময়ূর আছে ৷

উ: সমতল ভূমির অর্থ মনে প্রাণে চেতনার দৃঢ় প্রতিষ্ঠা – ময়ূর সত্যের শক্তির জয়ের লক্ষণ ৷ গাভী সত্যের আলাের প্রতীক ৷

28.3.34


সাধারণ মনের তিনটী স্তর আছে ৷ চিন্তার স্তর বা বুদ্ধি, ইচ্ছাশক্তির স্তর (বুদ্ধিপ্রেরিত Wil) আর বহির্গামী বুদ্ধি ৷ উপরের মনেরও তিনটী স্তর আছে ৷ — Higher Mind, Illumined mind, Intuition ৷মাথার মধ্যে যখন দেখেছ, ওই সাধারণ মনের তিনটী স্তর হবে – উপরের দিকে খােলা, প্রত্যেকের মধ্যে একটী বিশেষ ভাগবতী শক্তি কাজ করতে নামছে ৷

30.3.34


প্রাণের উদ্ধৃগামী অবস্থা ভগবানের দিকে, সত্যের দিকে ৷ সত্যের (সােনার রঙের) ও Higher Mindএর (নীল আলাের প্রভাব মূর্ত হয়ে উঠে নেমে ঘুরছে সেই উর্দ্ধগামী প্রাণচেতনায় ৷

30.3.34


যে চক্র দেখেছ, সে প্রাণের psychic হতে পারে – সমুদ্রটী vital con-sciousness, অগ্নিকুণ্ড প্রাণের aspiration, ঈগল পক্ষীগুলি প্রাণের উর্ধ্বগামী প্রেরণা – মন্দির হচ্ছে psychic প্রভাবপূর্ণ প্রাণপ্রকৃতির মন্দির ৷

30.3.34


যখন সাধক খাঁটি চেনার মধ্যে বাস করতে আরম্ভ করে তখনও অন্য অংশগুলি থাকে, তবে খাঁটি চেতনার প্রভাব বাড়তে বাড়তে ওইগুলােকে আস্তে আস্তে নিস্তেজ করে ফেলে ৷

2.4.34


Higher Mindএ বাস করা তত কঠিন নয় – চেনা মাথার একটু উপরে যখন ওঠে তখন তাহা আরম্ভ হয় – কিন্তু Overmindএ উঠতে অনেক সময় লাগে, খুব বড় সাধক না হলে হয় না ৷ এই সব স্তরে বাস করলে মনের বাঁধন ভেঙ্গে যায়, চেতনা বিশাল হয়ে যায়, ক্ষুদ্র অহংজ্ঞান কমে যায়, সবই এক, সকলই ভগবানের মধ্যে, ইত্যাদি ভাগবত বা অধ্যাত্ম জ্ঞান সহজ হয়ে যায় ৷

2.4.34


শিশুটী তােমার psychic being, তােমার ভিতরে সত্যের জিনিষ বার করে আনছে - রাস্তাটী হচ্ছে Higher Mindএর রাস্তা যে সত্যের দিকে উঠছে ৷

6.4.34


ইহা সত্য নয় – অনেকের কুণ্ডলিনীর জাগরণের অনুভূতি হয় না, কয়েকজনের হয় – এই জাগরণের উদ্দেশ্য সকল স্তর খুলে দেওয়া আর ঊর্ধচেতনার সঙ্গে সংযুক্ত করা – কিন্তু এই উদ্দেশ্য অন্য উপায়েও হয় ৷

6.4.34


বড় স্তরটী অধ্যাত্ম চেতনা হবে, তার মধ্যে সত্যের মন্দির, তােমার vitalএর সঙ্গে এই স্তরের সম্বন্ধ স্থাপন হয়েছে, উর্ধের শক্তি vitalএ উঠা-নামা কচ্ছে ৷ যেন সেতু দিয়ে ৷

6.4.34


মায়ের মধ্যে থেকেই একটী Emanation অর্থাৎ তার সত্তা ও চেতনার অংশ, প্রতিকৃতি ও প্রতিনিধি হয়ে প্রত্যেক সাধকের কাছে একজন বেরিয়ে আসেন বা থাকেন তাকে সাহায্য করবার জন্য – প্রকৃত পক্ষে মা-ই সেই রূপ ধরে আসেন ৷

9.4.34


ন: দেখছি যে তােমার জগৎ হতে দুই বালিকা আমার প্রিয় সাথীর মত বার বার নেমে আসছে ৷ একটির রূপ নীল আলােকের ন্যায় আর একটির রূপ সূর্যের আলােকের ন্যায় ৷ একটির পােষাক নীল, অপরটির হলদে ৷

উ: ঊর্ধ্বমনের শক্তি (নীল) – তার উপর যে মন বা Intuition – সম্ভবতঃ এই দুইটীরই শক্তি ৷

9.4.34


বেদযজ্ঞে পাঁচটী অগ্নি থাকে, পাঁচটী না থাকলে যজ্ঞ পূর্ণ হয় না ৷ আমরা বলতে পারি psychicএ, মনে, প্রাণে, দেহে ও অবচেতনায়, এই পাঁচটী অগ্নির দরকার ৷

9.4.34


নীল — Higher Mind, ACÚST QUICOT – Light of divine Truth, উজ্জ্বল লাল – হয় Divine Love নয় ঊর্ধচেতনার Force.

11.4.34


ন: আমার সব সময় নীরব গম্ভীর এবং নির্জনতায় থাকতে ইচ্ছা হচ্ছে ৷ বাইরের দিকে গেলে এবং একটু বাজে কথা বললে চঞ্চল হয়ে যাই ৷

উ: Inner beingএ যা হচ্ছে, তারই ফল এই নীরবতার দিকে ভিতরের টান ৷

11.4.34

এই সকল হচ্ছে symbols যেমন পদ্ম ফুল চেতনার প্রতীক, সূৰ্য্য জ্ঞানের বা সত্যের, চন্দ্র অধ্যাত্ম জ্যোতির, তারা সৃষ্টির, অগ্নি তপস্যার বা aspira-tionএর, –

সােনার গােলাপ = সত্যচেতনাময় প্রেম ও সমর্পণ ৷ সাদা পদ্ম = মায়ের চেতনা (Divine Consciousness) ৷ গাভী চেতনা ও আলােকের প্রতীক ৷ সাদা গাভীর অর্থ উপরের শুদ্ধ চেতনা ৷

11.4.34


তুমি বলেছিলে ধ্যানে লেখা দেখেছিলে – তার উত্তরে আমি বলেছি যে যেমন ধ্যানে নানা রকম দৃশ্য দেখা যায়, সেইরকম ধ্যানে নানা রকম লেখাও দেখা যায় ৷ এই সব লেখাকে আমরা লিপি বা আকাশলিপি নাম দি ৷ এই লেখাগুলাে বদ্ধ চোখেও দেখা যায়, খােলা চোখেও দেখা যায় ৷

13.4.34


ন: দেখলাম আমার গলার নিম্নে একটি পুকুর, বুকের নিম্নে একটি পুকুর, আর নাভির উপরে একটি পুকুর আছে ৷ এই তিনটি পুকুরে জল নেই, সব শুকিয়ে গিয়েছে ৷ অনেকক্ষণ পরে দেখি খুব ঊর্ধ্বে একটি পর্বত আছে ৷ সে পর্বত হতে পবিত্র জল এসে পুকুরগুলিতে পতিত হচ্ছে ৷ আর মা, দেখলাম, এই জলের মধ্যে কমল ফুটতে আরম্ভ করছে ৷

উ: সাধারণ মন হৃদয় প্রাণই এই তিনটী শুষ্ক পুকুর – তার মধ্যে উদ্ধৃচৈতন্যের প্রবাহ নেমেছে – আর মন হৃদয় প্রাণ ফুলের মত ফুটে যাচ্ছে ৷

16.4.34


লাল গােলাপী ভাগবত প্রেমের আলাে, সাদা ত ভাগবত চৈতন্যের আলাে ৷

16.4.34


ন: কি করে আমার outer beingকে পরিবর্তন করব এবং তােমার শ্রীচরণে সমর্পণ করব? আমার সমস্ত চিন্তা, খাওয়া, পড়া, কথা বলা, কাজ, ঘুমানাে সব যেন তােমার হয় ৷ আমার প্রত্যেক শ্বাস-প্রশ্বাস যেন তােমার দিক থেকে আসছে এইরূপ অনুভব আমার হয় ৷

উ: বাহিরের এইরূপ পূর্ণ অবস্থা পরে আসে – এখন জাগ্রত চেতনায় সত্য অনুভূতিকে বাড়তে দাও, তার ফলে ওসব হবে ৷

16.4.34


গাছটী ভিতরের spiritual life, তার উপর বসেছে সত্যের বিজয়স্বরূপ স্বর্ণ ময়ূর, প্রত্যেক ভাগে – চন্দ্র = অধ্যাত্ম শক্তির আলাে ৷

18.4.34


[ন’-র মনে হয়েছে এতদিন সে মিথ্যাই সাধনা করেছে ৷ সবই ব্যর্থ হয়েছে ৷ চেতনার অগ্রগতি কিছুই হয়নি ৷]

উ: যা হয়ে ছিল, সে মিথ্যা বা ব্যর্থ নয় – তবে যেমন চেতনা খুলে খুলে যায়, দেখবার ও সাধনা কৰ্বার ধরণও বদলে যায় ৷ যা অজ্ঞানের, অহংকারের, প্রাণের বাসনার মিশ্রণ সাধনায় ছিল, তাহা খসে যেতে আরম্ভ করে ৷

20.4.34


অভিজ্ঞতাগুলি ভাল – এই অগ্নি psychic fire – আর যে অবস্থার বর্ণনা করেছ সে অবস্থা psychic condition, যার মধ্যে অশুদ্ধ কিছু আসতে পারে না ৷ 23.4.34


এই চিন্তা ও এই স্বপ্ন বােধ হয় “ম”র মন থেকে এসে অলক্ষিতে তােমার অবচেতনায় পশে প্রকাশ পেয়েছে ৷ এই রকম পরের চিন্তার আক্রমণ থেকে সব সময়, অবচেতন মন প্রাণকে রক্ষা করা কঠিন ৷ ইহা আমার কিছু নয় জেনে প্রত্যাখ্যান করতে হয় ৷

26.4.34


ন: মা, আমি আজ দেখতে পাচ্ছি যে আমার মধ্যে অহংকার, আত্মগরিমা, বাসনা, কামনা, মিথ্যা কল্পনা, হিংসা, বিরক্তি, উত্তেজনা, দাবী, আসক্তি, চঞ্চলতা, জড়তা, আলস্য ইত্যাদি অজস্র দোষে ভরা ৷ আমার কোন কিছুই তােমার দিকে খােলেনি, শুধু ক্ষুদ্র হৃদয়খানা একটু খুলেছে এবং psychic being তােমাকে চাইছে ৷

উ: এ সব দোষ অবশ্যই বের করতে হবে – কিন্তু হৃদয় যখন খুলেছে, psychic being যখন conscious হচ্ছে, তখন আর সব খুলবেই, দোষ বাধা আস্তে আস্তে খসে যাবে ৷

26.4.34


[রেখাঙ্কিত অংশটুকুর অতিরিক্ত ব্যাখ্যা সম্ভবত ‘ন’ চেয়েছিলেন ৷]

অর্থ – মানুষের মধ্যে এই সকল দুর্বলতা আছে, সেগুলাের সম্বন্ধে (নিজের দৃষ্টি থেকে লুকোতে না দিয়ে) সচেতন হতে হয় – তবে psychic being যখন সচেতন হয়েছে, তখন ভয় নেই, এই সব সেরে যাবে ৷


Psychic being যখন conscious হয় সাধকের মধ্যে, তখন মানুষের স্বভাবে যে সব দোষ দুর্বলতা, সব দেখিয়ে দেয় – নিরাশার ভাবে নয়, সমর্পণ ও রূপান্তর করবার জন্য ৷

27.4.34


ন: আজ প্রায় সময় অনুভব করেছি যে পদ্মফুলের মত কি একটা আমার ভিতর খুলে যাচ্ছে, আর উপর হতে নীল সাদা আলাে ও শান্তি নামছে ৷ যখন তােমার কথা চিন্তা করছি তখন দেখছি যে জ্যোতির্ময়ী ও চাদের আলাের মত একখানা সরু কি তােমার জগতের দিকে উঠে গিয়েছে ৷

উ: যা খুলছে তা psychic আর heartএর consciousness – উপর হতে আসছে higher mindএর ও ভাগবত চেতনার আলাে ও শান্তি ৷ যা চাদের মত উঠছে, তা psychic থেকে আধ্যাত্মিক aspirationএর স্রোত ৷

27.4.34


আক্রমণ যদি হয়, কান্না না করে মাকে ডাক – মাকে ডাকলে শক্তি আসবে, আক্রমণ সরে যাবে ৷

4.5.34


কতকটা তাই, তবে বাধা কাউকে সহজে ছাড়ে না, খুব বড় যােগীকেও নয় ৷ মনের বাধা অপেক্ষাকৃত সহজে ছাড়ান যায়, কিন্তু প্রাণের বাধা, শরীরের বাধা তত সহজে যায় না, সময় লাগে ৷

18.5.34


সাপ হচ্ছে energy (শক্তির প্রতীক ৷ ঊর্ধের একটী energy মাথার উপরে higher consciousnessএ দাড়িয়ে আছে ৷

30.5.34


ন: দেখলাম যে আমি আমার এই দেহে নাই ৷ একটি আনন্দিত মুক্ত ছােট বালিকার মত হয়ে তােমাদের শ্রীচরণে আছি ৷

উ: তােমার inner beingএর রূপ ৷

30.5.34


অবশ্য এই সব আলােচনা না করা শ্রেয়স্কর – মানুষের স্বভাব পরের সম্বন্ধে এই রকম আলােচনা [করে] – অনেক ভাল সাধকও এই অভ্যাস ছেড়ে দিতে চায় না বা পারে না ৷ কিন্তু এতে সাধনার ক্ষতি ভিন্ন উপকার হয় না ৷

1.6.34


হ্যাঁ – 436কিন্তু ভিতরে ভােগ বাসনা ইত্যাদি ত্যাগ করতে হয় – বাহিরের সব শূন্য করা দরকার নাই – মা যা দেন তা নিয়ে আসক্তিশূন্য হয়ে থাকা ভাল ৷

8.6.34


সময়ে সব বাধা চলে যাবে – উর্ধের চেতনা যেমন বাহিরের মন প্রাণে শ্রীরে বেড়ে যায়, বাধার বেগও কমে যায়, শেষে অদৃশ্য হয়ে যাবে, অরূপেও থাকবে না ৷

9.6.34


চেতনা বাহিরে যায়, সব সময় ভিতরের অবস্থা রাখতে পার না, এ কিছু গুরুতর কথা নয় – সকলের হয়, যতদিন ভিতরের সম্পূর্ণ রূপান্তর না হয় ৷ তাতে সপ্রমাণ হয় না যে অভিজ্ঞতা অনুভূতি মিথ্যা ৷

9.6.34


শান্তভাবে বসে মাকে স্মরণ করে মায়ের কাছে নিজেকে খুলে রাখ – ধ্যানের নিয়ম এই ৷

19.6.34


ইহা ত সকলেরই হয় – ভাল অবস্থায় সর্বদা থাকা বড় কঠিন, অনেক সময় লাগে – স্থির হয়ে সাধনা করাে, বিচলিত হয়াে না ৷ সময়ে হয়ে যাবে ৷

25.6.34


জাগ্রত অবস্থাতেই সব নামান, সব ভাগবত অনুভূতি পাওয়া এ যােগের নিয়ম ৷ অবশ্য প্রথম অবস্থায় ধ্যানেই বেশী হয় আর শেষ পৰ্য্যন্ত উপকারী হতে পারে – কিন্তু শুধু ধ্যানে অনুভূতি হলে সমস্ত সত্তার রূপান্তর হয় না ৷ জাগতে হওয়া সেজন্য খুব ভাল লক্ষণ ৷

25.6.34


পদ্মের ও সূর্যের অর্থ ত জান ৷ বিছানার মধ্যে দেখলে তার বিশেষ কোন অর্থ নয়, অর্থ এই যে physical পৰ্য্যন্ত এ সব নামছে ৷

25.6.34


ন: আজ দেখলাম তােমার কোলের উপর মাথা রেখে যেন ধ্যান করছি ৷ আর তােমার দেহ হতে অগ্নির মত আলাে বার হয়ে আমার সমস্ত মলিনতা দূর করে দিচ্ছে, আর শান্ত ও খুব উজ্জ্বল এক রূপ বার হয়ে আমাকে শান্ত আলােকিত করছে ৷

উ: এই হচ্ছে psychicএর সত্য অনুভূতি, খুব ভাল লক্ষণ ৷ ইহাই চাই ৷

25.6.34


বাজে চিন্তা কে না করে – সব সময় মাকেই স্মরণ করে, কেহই পারে physical mind relax করে ৷ উদ্ধৃ চৈতন্য সম্পূর্ণ নামলে, তার পর হয় ৷

26.6.34


স্বর্ণ = সত্য জ্ঞানময় চেতনা – রূপা = অধ্যাত্ম চেতনা ৷

27.6.34


[ন’এর পত্রের “সাদা আলাে” এবং “অগ্নির মত আলাে” কথা দুটির কাছে শ্রীঅরবিন্দ যথাক্রমে “ভাগবত চৈতন্যের আলাে” এবং “aspiration ও তপস্যার আলাে” লেখেন ৷]


সােনার দড়ি – সত্য চেতনার সম্বন্ধ মায়ের সঙ্গে; সােনার গােলাপ – সত্য চেতনাময় প্রেম ও সমর্পণ; সাদা পদ্ম – মায়ের চেতনা (divine conscious-ness) higher mind ও psychicএ খুলছে ৷ চক্রটির অর্থ = মায়ের শক্তির কাজ চলছে নিম্নের স্তরে ৷

28.6.34


হীরার আলাে ত মায়েরই আলাে at its strongest – এইরূপ মায়ের শরীর হতে বেরিয়ে সাধকের উপরে পড়া খুব স্বাভাবিক, সাধক যদি ভাল অবস্থায় থাকে ৷

29.6.34


কোন সাধকের সম্বন্ধে আলােচনা করা ভাল নয় ৷ তাতে কারাে উপকার হয় , বরং অনিষ্ট হয় ৷ এই আশ্রমে সকলে করে, কিন্তু এতে atmosphere troubled হয়ে থাকে, সাধনার ক্ষতিও হয় ৷ তার চেয়ে মাকে চিন্তা করা, যােগের বা অন্য ভাল কথা বলা ঢের ভাল ৷

29.6.34


বড় বড় সাধককেও বাধা আক্রমণ করতে পারে, তাতে কি? Psychic অবস্থা থাকলে, মায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, এই সব আক্রমণের চেষ্টা বৃথা হয়ে যায় ৷

29.6.34


নীল ত Higher Mindএর বর্ণ – নীল পদ্ম = সেই উদ্ধৃমনের উন্মীলন তােমার চেতনায় ৷

30.6.34


হয় ত শরীরে ধ্যানের কিছু বাধা আছে, যাতে বসা চায় না ৷ তবে ইহাও অনেকের সাধনায় ঘটে যে সাধনা আপনা আপনি চলে, জোর করে বসে ধ্যান করা আর হয় না, কিন্তু অমনি বসতে হাঁটতে শুয়ে থাকতে ঘুমােতেও পৰ্য্যন্ত সাধনা নামে ৷

2.7.34


ন: মা, দেখলাম যে আধারের মধ্যে একটি খুব বড় বৃক্ষ, যে উর্ধের দিকে বড় হচ্ছে... ৷

উ: বৃক্ষটী তােমার আধ্যাত্মিক জীবন যে তােমার মধ্যে বাড়তে আরম্ভ করেছে ৷

6.7.34


হ্যা, মাকেই চাইতে হয় কোন বাসনা দাবী ইত্যাদি পােষণ না করে ৷ ও সব এলে সায় না দিয়ে ফেলে দিতে হয় ৷ তার পরেও প্রকৃতির পুরাতন অভ্যাসের দরুণ ওগুলাে আসতে পারে, কিন্তু শেষে অভ্যাসটী ক্ষয় হয়ে যাবে, আর আসবে ৷ না ৷

6.7.34


Sex-force মানব মাত্রেরই আছে, সে impulse প্রকৃতির একটা প্রধান যন্ত্র যার দ্বারা সে মানুষকে চালায়, সংসার সমাজ পরিবার সৃষ্টি করে, প্রাণীর জীবন অনেকটা তার উপর নির্ভর করে ৷ সে জন্যে সকলের মধ্যে sex impulse আছে, কেউ বাদ যায় না – সাধনা করলেও এই sex impulse ছাড়তে চায় না, সহজে ছাড়ে না, সে প্রাণ শরীরে প্রকৃতি রূপান্তরিত হওয়া পর্যন্ত ফিরে ফিরে আসে ৷ তবে সাধক সাবধান হয়ে তাকে সংযম করে, প্রত্যাখ্যান করে, যত বার আসে ততবার তাড়িয়ে দেয় – এই করে করে শেষে লুপ্ত হয়ে যায় ৷

10.7.34


আমার কথা – যা অনেকবার বলেছি – তা ভুলে যেয়াে না ৷ উতলা না হয়ে স্থির শান্ত ভাবে সাধনা কর, তাহলেই সব আস্তে আস্তে ঠিক পথে আসবে ৷ উচ্চৈঃস্বরে ক্রন্দন ভাল নয় – শান্তভাবে মাকে ডাক, তার কাছে সমর্পণ কর ৷ প্রাণ যতই শান্ত হয়, তত সাধনা steadily এক পথে চলে ৷

17.8.34


শান্ত ও সচেতন থাক, মাকে ডাক, ভাল অবস্থা ফিরে আসবে ৷ সমর্পণ সম্পূর্ণ করতে সময় লাগে – যেখানে দেখছ হয়নি, সেখানটাও সমর্পণ কর — এইরূপ করতে করতে শেষে সম্পূর্ণ হবে ৷

27.8.34


It is good.

হৃদয় যদি মায়ের দিকে খােলা থাকে আর সব শীঘ্র খুলে যায় ৷

29.8.34


হা ভিতরেই সব আছে ও নষ্ট হবার নয় – সে জন্য বাহিরের বাধাবিপত্তিতে বিচলিত না হয়ে ওই ভিতরের সত্যে প্রতিষ্ঠিত হতে হয় আর তার ফলে বাহিরও রূপান্তরিত হবে ৷

4.10.34


যখন খুব গভীর অবস্থা হয়, তখন উঠলে বা হাঁটলে সেরূপ মাথা ঘােরা হয় – শরীরের দুর্বলতার দরুণ নয়, চেতনা ভিতরে গেছে, শরীরে আর সম্পূর্ণ চেতনা নাই বলে ৷ এইরূপ অবস্থায় চুপ করে বসে থাকা ভাল —শরীরে যখন চেতনা সম্পূর্ণ ফিরে আসে, তখন উঠতে পার ৷

24.10.34


এটা খুব বড় opening – সূৰ্য্যের জ্যোতি যে নামছে সে সত্যের জ্যোতি – সে সত্য ঊৰ্ধ মনেরও অনেক উপরে ৷

24.10.34


মূলাধার physicalএর inner centre - পুকুরটী চেতনার একটী open-ing বা formation, সে চেতনার মধ্যে শ্রীঅরবিন্দের presence = লাল পদ্ম আর inner physicalএ প্রেমের গােলাপী আলাে নামছে ৷

24.10.34


কল্পনা নয় ৷ মায়ের অনেক personality আছে, সেগুলাে প্রত্যেকের dif-ferent রূপ, সে সব সময়ে সময়ে মায়ের শরীরে ব্যক্ত হয় ৷ সাড়ীর রং যেমন, মা সে রঙের আলাে বা শক্তি নিয়ে আসেন ৷ কারণ প্রত্যেক রং এক এক শক্তির (forceএর) দ্যোতক ৷

26.10.34


ন: মা, মূলাধারের লাল পদ্ম দেখি ধীরে ধীরে ফুটে উঠছে তাতে তােমার আলােও নামতে আরম্ভ করেছে বলে মনে হয় ৷

উ: That is very good. ওখানেই শরীর প্রকৃতির রূপান্তর আরম্ভ হয় ৷

26.10.34


বাধা ত বিশেষ কিছু নয়, মানুষের বহিঃপ্রকৃতিতে যা থাকে তাই – সেগুলাে মায়ের শক্তির working দ্বারা ক্রমে ক্রমে দূরীকৃত হবে ৷ তার জন্য চিন্তিত বা দুঃখিত হবার কোন কারণ নাই ৷

12.11.34


হ্যা, যা বলছ তা সত্যই ৷ বহিশ্চেতনা অজ্ঞানময়, যা আসে উপর থেকে তার যেন একটা ভুল transcription, যেন ভুল নকল বা ভুল অনুবাদ করতে চায়, নিজের মত গড়তে চায়, নিজের কল্পিত ভােগ বা বাহ্যিক সার্থকতা বা অহংভাবের তৃপ্তির দিকে ফিরাতে চেষ্টা করে ৷ এই হচ্ছে মানবস্বভাবের দুর্বলতা ৷ ভগবানকে ভগবানের জন্যই চাইতে হয়, নিজের চরিতার্থতার জন্য নয় ৷ যখন psychic being ভিতরে সবল হয়, তখন এই সব বহিঃপ্রকৃতির দোষ কমে যেতে যেতে শেষে নিৰ্ম্মল হয়ে যায় ৷

(1934)


অজ্ঞান অহংকার ও বাসনাই হচ্ছে বাধা – মনপ্রাণদেহ যদি উর্ধচৈতন্যের আধার হয়, তা হলে এই ভাগবত জ্যোতি শরীরে নামতে পারবে ৷

8.1.35


উপরের এই জগৎ হচ্ছে উদ্ধৃচৈতন্যের ভূমি (plane), আমাদের যােগসাধনা দ্বারা নামিতেছে ৷ পার্থিব জগৎ আজকাল বিরােধী প্রাণজগতের তাণ্ডব নৃত্যে পূর্ণ ও ধ্বংসােন্মুখ ৷

8.1.35


নিম্নের প্রাণ ও মূলাধারই Sex Impulseএর স্থান ৷ গলার নীচে রয়েছে ৷ vital mindএর স্থান ৷ অর্থাৎ যখন নিম্নে sex impulse হয়, তখন vital mindএ তারই (sex impulseএর) চিন্তা বা কোনও mental রূপ সৃষ্টি হবার চেষ্টা হয়, তাতে মনের গােলমাল হয়ে যায় ৷

15.1.35


বােধ হয় বাহিরের স্পর্শ পেয়ে এই সব হয়েছে ৷ এখন এই সব প্রাণের গােলমাল কয়েকজনের মধ্যে বার বার হচ্ছে ৷ এক জন থেকে গিয়ে আর এক জনের মধ্যে যাচ্ছে একটা রােগের মত ৷ বিশেষ এই ভাব যে আমি মরব, আমি এই শরীর রাখব না, এই শরীরে আমার যােগসাধনা হবে না, এটাই প্রবল ৷ অথচ, এই দেহ ত্যাগ করে অন্য দেহ হতে বিনা বাধায় যােগসিদ্ধ হব, এই ধারণা অত্যন্ত মিথ্যা ৷ এই ভাবে দেহ ত্যাগ করলে পর জন্মে বরং আরও বাধা হবে আর মায়ের সঙ্গে সম্বন্ধ থাকবেই না ৷ এই সব হচ্ছে বিরুদ্ধ শক্তির আক্রমণ, তার উদ্দেশ্য সাধকদের সাধনা ভেঙে দিতে, মায়ের শরীরকে ভেঙে দিতে, আশ্রমকে আর আমাদের কাজকে ভেঙে দিতে ৷ তুমি সাবধান হয়ে থাক, এই সব তােমার মধ্যে ঢুকতে দিয়াে না ৷

বাহিরের লােক আমাকে শাসন কচ্ছে, আমার খুব লেগেছে, আমি মরে যাব, এ হচ্ছে প্রাণের অহংকারের কথা, সাধকের কথা নয় ৷ আমি তােমাকে সতর্ক করেছি, অহংকারকে স্থান দিয়াে না ৷ কেহ যদি কোন কথা বলে, অবিচলিত হয়ে শান্তসম নিরহংকার ভাবে থাক, মায়ের সঙ্গে যুক্ত রয়ে ৷

27.1.35


সূর্য্যের অনেক রূপ আছে, অনেক বর্ণের আলাের সূৰ্য্য ৷ যেমন লাল, তেমনই হিরন্ময়, নীল, সবুজ ইত্যাদি ৷

29.1.35


এইরূপ মায়ের মধ্যে মিশে যাওয়াই প্রকৃত মুক্তির লক্ষণ ৷

31.1.35


এইরূপ শরীরে মায়ের আলাে ভরে গেলে, physical চেতনার রূপান্তর সম্ভব হয় ৷

31.1.35


It is very good. নিদ্রার সময়ে চেতনা স্তরের পরে স্তরে যায় ৷ জগতের পর জগতে —যেমন জগৎ, তেমন স্বপ্ন দেখে ৷ খারাপ স্বপ্ন প্রাণের জগতের কয়েকটী প্রদেশের দৃশ্য ও ঘটনা মাত্র – আর কিছু নয় ৷

2.2.35


ন: মা, আজ দুই দিন যাবৎ প্রণাম হতে আসবার পর যেন অন্য রকম অবস্থা ৷ হয়, কিছুতেই ভাল লাগে না ৷ কোথায় যাব, কোথায় গেলে মাকে ভগবানকে পাব, শান্তি আনন্দ পাব ও কখন নিজেকে মাকে দেওয়া হবে এইরূপ ভাব হয় ৷

উ: এই অবস্থাকে ঢুকতে দেবে না – এই অবস্থাই অনেকজনের মধ্যে ঢুকে তাদের সাধনার বিষম ব্যাঘাত সৃষ্টি করেছে – তাতে মায়ের উপর অসন্তোষ, অস্থির চঞ্চলতা, চলে যাবার ইচ্ছা, মরবার ইচ্ছা, স্নায়বিক দুর্বলতা ইত্যাদি ঢােকে ৷ যে এক তামসিক শক্তি আশ্রমে ঘুরছে কাকে ধরব খুঁজে, সেই শক্তি এই সব অজ্ঞানের ভাব ঢুকিয়ে দেয়, ওসব feelingএর মাথামুণ্ড নেই – মাকে ছেড়ে কোথায় গিয়ে মাকে পাবে, শান্তি আনন্দ পাবে ৷ এক মুহূর্তকাল এই সবকে স্থান ৷ দিয়াে না ৷

22.4.35


সাপ হচ্ছে প্রকৃতির শক্তি – মূলাধার (physical centre) তার একটী প্রধান স্থান – সেখানে কুণ্ডলিত অবস্থায় সুপ্ত হয়ে থাকে ৷ যখন সাধনা দ্বারা জাগ্রত হয়, তখন উপরের দিকে ওঠে সত্যের সঙ্গে যুক্ত হবার জন্য ৷ মায়ের শক্তির অবতরণে সে এর মধ্যে স্বর্ণময় হয়েছে, অর্থাৎ ভাগবত সত্যের আলােয় ভরা ৷

25.4.35


না এ কল্পনা বা মিথ্যা নয় – উপরের মন্দির ঊৰ্ধ চেতনার, নীচের মন্দির এই মন প্রাণ শরীরের রূপান্তরিত চেতনা – মা নীচে নেমে এই মন্দির সৃষ্টি করেছেন আর সেখান থেকে সত্যের প্রভাব সর্বত্র তােমার মধ্যে বিস্তার কচ্ছেন ৷

26.4.35


ন: মা, আমি তােমার পায়ের কাছে কিছু দেখি না ও অনুভব করি না কেন, সব তােমার কোল হতে আর বুক হতে অনুভব করি কেন?

উ: তা প্রায় সকলেরই হয় – বুক থেকেই মায়ের সৃষ্টি শক্তি বাহিরে এসে সকলের মধ্যে নিজের কাজ করে ৷ আর সব স্থান হতেও করে, কেন্দ্রীকৃত ৷

26.4.35


সাধনা ত মাকে feel করা কাছে ও ভিতরে, মা সব কচ্ছেন বলে অনুভব করা, মায়ের সব জিনিস ভিতরে receive করা ৷ এই অবস্থা থাকলে পড়াতে মন দিলে কোন ক্ষতি হতে পারে না ৷

29.4.35


মা তােমাকে চান আর তুমি মাকে চাও ৷ মাকে তুমি পাচ্ছ এবং আরও পাবে ৷ তবে হয়ত তােমার physical consciousnessএ একটা আকাঙ্ক্ষা আসতে পারে মাঝে মাঝে যে মায়ের বাহিরের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ শারীরিক সান্নিধ্য ইত্যাদি থাকা চাই ৷ মা ওসব দিচ্ছেন না কেন, মা হয়ত আমাকে চান না ৷ কিন্তু জীবনের ও সাধনার এই অবস্থায় তাহা হতে পারে না ৷ এমন কি মা তাহা দিলে সাধক তাতে মজবে আর ভিতরের আসল সাধনা ও রূপান্তর হবে না ৷ চাই মার সঙ্গে ভিতরের ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ সান্নিধ্য এবং চাই রূপান্তর – বাহিরের মন প্রাণ দেহ পৰ্য্যন্ত তাহা সম্পূর্ণভাবে অনুভূতি করবে ও রূপান্তর হবে ৷ ইহাই মনে রেখে চল ৷

17.5.35


ন: মাঝে মাঝে মনে হয় যে সমস্ত সত্তা খুলে কাদলে অনেক পরিবর্তন হবে ৷ মা, আমার কি তােমার জন্য এখন কঁাদার দরকার?

উ: কান্না যদি psychic beingএর হয়, খাঁটি চাওয়ার বা খাঁটি psychic ভাবের কান্না, তা হলে সেই ফল হতে পারে ৷Vital দুঃখের বা বাসনার বা নিরাশার কান্নায় লােকসানই হয় ৷

17.5.35


আমি এ কথা ত অনেকবার লিখেছি মানুষের বাহির চেতনার পূর্ণ রূপান্তর করা অল্প সময়ে হয় না ৷ ভাগবত শক্তি সেটাকে আস্তে আস্তে বদলিয়ে দেয় – যাতে শেষে কোন ফাক থাকে না, কোন ক্ষুদ্রতম অংশেও নিম্ন প্রকৃতির কোন পুরাতন গতি না থাকে ৷ সেজন্যে অধৈৰ্য্য বা haste করতে নাই ৷ শুধু সবকে যেন সমর্পিত হয়, মায়ের কাছে open হয়, তাহাই দেখতে হয় ৷ আর সব আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে ৷

1.6.35


ন: ...সব সময় একই অবস্থা – শান্ত নীরব ও আনন্দিত – কাজে কর্মে চলায় ফেরায় বাহিরে অন্তরে ৷

উ: ইহা খুব ভাল – পূর্ণ সমতা ও আসল জ্ঞানের অবস্থা – যখন ইহা স্থায়ী হয়, তখন সাধনাকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত বলা যায় ৷

7.6.35


মূলাধারের স্বর্ণ সর্প – রূপান্তরিত সত্যময় শরীরচেতনার প্রতীক ৷

13.6.35


তুমি যদি ভিতরে শান্ত ও সমর্পিত হয়ে থাক, তাহলে বাধাবিঘ্ন ইত্যাদি তােমাকে বিচলিত করবে না ৷ অশান্তি চঞ্চলতা আর “কেন হচ্ছে না, কবে হবে এই ভাব ঢুকতে দিলে বাধাবিঘ্ন জোর পায় ৷ তুমি বাধাবিঘ্নের দিকে অত নজর দাও কেন? মায়ের দিকে চাও ৷ নিজের ভিতরে শান্ত সমর্পিত হয়ে থাক ৷ নিম্নপ্রকৃতির ছােট ছােট defect সহজে যায় না ৷ তা নিয়ে বিচলিত হওয়া বৃথা ৷ মার শক্তি যখন সমস্ত সত্তা অবচেতনা পৰ্য্যন্ত সম্পূর্ণ দখল করবে তখন হবে – তাতে যদি অনেকদিন লাগে তা হলেও ক্ষতি নাই ৷ সম্পূর্ণ রূপান্তরের জন্য অনেক সময়ের দরকার ৷

19.6.35


উপর খুব বড় একটী যে আছে, সে ঊর্ধচেতনার অসীম বিশালতা ৷ তুমি যে অনুভব কচ্ছ যে মাথা যে ঘুরে ঘুরে নেমে আসে সে ত স্থূল মাথা অবশ্য নয় কিন্তু মনবুদ্ধি ৷ সে ওই বিশালতার মধ্যে উঠে সেইভাবে নামে ৷

22.6.35


কতদূর এসেছি, আর কতদূর এই সব প্রশ্নেতে বিশেষ কোনও লাভ নাই ৷ মাকে কাণ্ডারী করে স্রোতে এগিয়ে চল, তিনি তােমাকে গন্তব্য স্থানে পছিয়ে দিবেন ৷

25.6.35


মাথার উপরে একটী পদ্ম আছে, সে হচ্ছে ওই উৰ্ধচেতনার কেন্দ্র, সে পদ্মই হয়ত ফুটতে চায় ৷

24.8.35


মাথার উপরেই আছে ঊর্ধচেতনার স্থান, ঠিক মাথার উপরে সে আরম্ভ হয় ৷ আর সেখান থেকে ওঠে আরও উপরে অনন্তে ৷ সেখানে যে বিশাল শান্তি ও নীরবতা আছে তারই pressure তুমি অনুভব কর ৷ সে শান্তি ও চেতনা সমস্ত আধারে নাবতে চায় ৷

24.8.35


যখন চেতনা বিশাল ও বিশ্বময় হয় আর সমস্ত বিশ্বেই মাকে দেখা যায় তখন ৷ অহং আর থাকে না, থাকে শুধু মায়ের কোলে তােমার আসল সত্তা, মায়ের সন্তান মায়ের অংশ ৷

24.8.35


দুঃখ কেন পাচ্ছ? মায়ের উপর নির্ভর করে সমতা রাখলে দুঃখ পাবার কথা নাই ৷ মানুষের কাছে সুখ ও শান্তি ও আনন্দ পাবার আশা বৃথা ৷

8.9.35


তুমিই আমার কথা বুঝতে পার নি ৷ আমি একথা বলি নি যে তােমার অসুখ নাই, আমি বলেছি যে সে অসুখ nervous স্নায়ুজাত ৷ এক রকম বদহজম আছে ৷ যাকে ডাক্তারেরা বলে nervous dyspepsia স্নায়ুজাত অজীর্ণ ৷ যে সব sen-sation তুমি অনুভব করেছ, গলায় ছাতিতে খাওয়া ওঠা আটকান ইত্যাদি সে সব ওই রােগের লক্ষণ, nervous sensation ৷এ রােগকে সারান অনেকটা মনের উপর নির্ভর করে ৷ মন যদি রােগের suggestionএ খায় দায়, তাহলে অনেকদিন টিকতে পারে ৷ মন যদি সে সব suggestionকে প্রত্যাখ্যান করে, তবে সারান সহজ হয়, বিশেষ যখন মায়ের শক্তি আছে ৷ আমি তাই বলেছিলাম বমির ভাবকে accept করাে না, মাকে ডাক ৷ অসুখটী সেরে যাবে ৷

আমি বারবার একটী কথা তােমাকে লিখেছি, সে কথাটী ভুলে যাও কেন? শান্ত ভাবে দৃঢ় ভাবে মায়ের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে পথে এগুতে হবে ৷ অধৈৰ্য্য, চঞ্চলতাকে স্থান দেবে [না], সময় লাগলে বাধা এলেও বিচলিত অধীর বা উদ্বিগ্ন হয়ে চলতে হবে ৷ অধীর হলে, অস্থির উদ্বিগ্ন হলে বাধা বেড়ে যায়, আরাে বিলম্ব হয় ৷ এ কথাটী সৰ্ব্বদা মনে রেখে সাধনা কর ৷

একেবারে না খেয়ে থাকতে নাই – তাতে দুর্বলতা বাড়ে, দুর্বলতা বাড়লে অসুখ টিকবার কথা ৷ নিদান দুধ ত খেতেই হয় আর যদি পার ত সাধারণ খাওয়ায় আবার পেটকে অভ্যস্ত করতে হয় ৷ মা বলেছে yellow কলা দিতে, lithineও খাওয়া ভাল ৷

এ রােগে যকৃতের disturbances হতে পারে ৷ খেলেই একটু পরে বমির ভাব হওয়া ৷ এটা nervous dyspepsiaর লক্ষণ ৷

10.9.35


উভয় রকম করা শ্রেষ্ঠ ৷ যদি দূরে থেকে শুধু সাধনা করা সম্ভব হত, তা হলে তাই সর্বশ্রেষ্ঠ হত, কিন্তু তা সব সময় করা যায় না ৷ কিন্তু আসল কথা এই যে psychicএর মধ্যে তােমার দৃঢ় স্থান বা নিরাপদ দুর্গ করে সাধনা করতে হয় – অর্থাৎ স্থির ধীরভাবে মায়ের উপর নির্ভর করা, অধীর না হয়ে প্রসন্ন চিত্তে চলা ৷ তুমি যা বলছ, তা সত্য – এই ছােট ছােট অসম্পূর্ণতা ইত্যাদিই এখন আসল অন্তরায় বড় বাধার চেয়ে ৷ কিন্তু এগুলাে আস্তে আস্তে বার করতে হয়, অসম্পূর্ণতাকে পূর্ণতায় রূপান্তরিত করতে হয়, হঠাৎ করা যায় না ৷ অতএব সেগুলাে দেখে দুঃখিত বা অধীর হতে নাই, মায়ের শক্তিই আস্তে আস্তে সে কাজ করে ফেলবে ৷

12.9.35


যেমন এই সাধনায় চঞ্চলতা দূর করতে হয়, দুঃখকেও স্থান দিতে নাই ৷ মায়ের উপর নির্ভর করে স্থির চিত্তে শান্ত প্রসন্ন মনে এগুতে হয় ৷ যদি মায়ের উপর নির্ভর থাকে, তাহলে দুঃখের স্থান কোথায় ৷ মা দূরে নন, সৰ্ব্বদা কাছেই থাকেন, সে জ্ঞান সে বিশ্বাস সব সময় রাখতে হয় ৷

17.9.35


তাতে ব্যস্ত হয়াে না ৷ সব সময়ে চেষ্টা করে মনে রাখা সহজ নয় —যখন মায়ের presenceএ সমস্ত আধারে ভরে যাবে, তখন সেই স্মরণ আপনিই থাকবে, ভুলে যাবার যাে থাকবে না ৷

23.9.35


যা feel করছ তাহা সত্যই – ইহাই মানুষের বাধা দুঃখ ও অবনতির কারণ ৷ মানুষ নিজেই নিজের অশুভ সৃষ্টি করে, সায় দেয়, আঁকড়ে ধরে ৷

26.9.35

যদি গভীর হৃদয়ের (psychicএর) পথ ধর, মার কোলে শিশুর মত থাক, তা হলে এই সব sex impulse ইত্যাদি আক্রমণ করেও কিছু করতে পারবে না, শেষে আর আসতেও পারবে না ৷

30.9.35


যদি মায়ের উপর শুদ্ধ প্রেম ও ভক্তি থাকে, নির্ভর থাকে, তা হলে মাকে পাওয়া যায়, না থাকলে তীব্র চেষ্টা দ্বারাও পাওয়া যায় না ৷

2.10.35


এ সব হচ্ছে বাহিরের প্রকৃতি যা সাধকের চারিদিকে ঘােরে প্রবেশ করবার জন্য ৷ নিজের মন প্রাণ দেহ এই বাহিরের প্রকৃতির কবলে থাকলে সেইরূপ পর্দা হয় বটে, কিন্তু মায়ের উপর নির্ভর করলে, মায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলে, মায়ের শক্তি সে পর্দা সরিয়ে মন প্রাণ দেহ চেতনাকে মায়ের যন্ত্রে পরিণত করবে ৷

2.10.35


শরীরে মায়ের শক্তি ডেকে এ সব ব্যথা ও অসুখবােধ তাড়াতে হবে ৷

9.10.35


Yes, this is the true psychic attitude. যে এই ভাবটী রাখতে পারে সব সময়ে, সব ঘটনার মধ্যে, সে গন্তব্য পথে সােজা চলে যায় ৷

11.10.35


মানুষের মনই অবিশ্বাস কল্পনা, ভুল চিন্তায়, অশ্রদ্ধায় ভরা, অজ্ঞানে ও দুঃখেও ভরা ৷ সে অজ্ঞানই সে অশ্রদ্ধার কারণ, সে দুঃখের উৎস ৷ মানুষের বুদ্ধি অজ্ঞানের যন্ত্র; প্রায়ই ভুল চিন্তা ভুল ধারণা আসে, অথচ সে মনে করে আমারই চিন্তা সত্য ৷ তার চিন্তায় ভুল আছে কি নাই আর ভুল কোথায় তা দেখে বিবেচনা করবার ধৈৰ্য্য তার নাই ৷ এমন কি ভুল দেখালে অহংকারে লাগে, ক্রোধ হয় বা দুঃখ হয়, স্বীকার করতে চায় না ৷ অথচ অপরের ভুল দোষ দেখাতে পারলে তার খুব তৃপ্তি হয় ৷ পরের নিন্দা শুনলে সত্য বলে গ্রহণ করে অমনই, কতদূর সত্য তা বিবেচনাও করে না ৷ এরূপ মনের মধ্যে শ্রদ্ধা বিশ্বাস সহজে হয় না ৷ সেজন্য মানুষের কথা শুনতে নাই, তার প্রভাব নিজের মধ্যে গ্রহণ করতে নাই, যদি [বা] শুনতে হয় ৷ আসল কথা নিজের ভিতরে গিয়ে psychic beingকে ৷ জাগাতে হয়, তার মধ্যে থেকে আস্তে আস্তেসত্য বুদ্ধি মণে বেড়ে যায়, সত্য ভাব ও feeling হৃদয়ে আসে, সত্য প্রেরণা প্রাণে উঠে, psychicএর আলােতে মানুষ বস্তু ঘটনা জগতের উপর নূতন দৃষ্টি পড়ে, মনের অজ্ঞান ও ভুল দেখা ভুল চিন্তা অবিশ্বাস অশ্রদ্ধা আর আসে না ৷

22.10.35


[কেউ ‘ন’এর সঙ্গে অতিশয় দুর্ব্যবহার করেছে]

এই সময়ে প্রায়ই সাধকদের অহংকার উঠে সাধনায় ঘাের অন্তরায় কচ্ছে, অনেককে অনুচিত ব্যবহার করিয়ে দিচ্ছে ৷ তুমি নিজে অটল হয়ে ভিতরে থাক, তাকে স্থান দিয়াে না ৷

23.10.35


This is very good. এই সব আক্রমণ যদি ঢুকতে না পারে বা ঢুকেও টিকতে না পারে, বুঝতে হবে যে outer beingএর চেতনা জাগ্রত হয়েছে আর তার শুদ্ধি অনেকটা progress করেছে ৷

27.10.35


আত্মাই এইরূপ অসীম বিরাট ইত্যাদি, ভিতরের মন প্রাণ physical con-sciousness যখন সম্পূর্ণরূপে খােলে তারাও তাই – বাহিরের মন প্রাণ দেহ শুধু যন্ত্র এই জগতের বাহিরের প্রকৃতির সঙ্গে ব্যবহার ও খেলার জন্য ৷ বাহিরের মন প্রাণ দেহও যখন আলােময় চৈতন্যময় হয় তখন তারা আর সঙ্কীর্ণ আবদ্ধ বলে বােধ হয় না, তারাও অনন্তের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় ৷

30.10.35


যখন Physical consciousness প্রবল হয়ে আর সকলকে ঢেকে সমস্ত স্থান ছড়িয়ে থাকতে চেষ্টা করে, তখন এই রকম অবস্থা হয় – কারণ এই দেহচেতনার স্বতন্ত্র প্রকৃতি যখন প্রকাশ হয় তখন সব বােধ হয় জড়বদ্ধ তমােময়, জ্ঞানের প্রকাশ রহিত, শক্তির প্রেরণা রহিত ৷ এই অবস্থাতে সম্মতি দেবে না ৷ – যদি আসে, মায়ের আলাে ও শক্তিকে এই দেহচেতনার মধ্যে প্রবেশ করে আলােময় ও শক্তিময় করবার জন্যে ডেকে আনবে ৷

30.10.35


হ্যা, খাওয়া ভাল —দুর্বল হয়ে থাকলে তমােময় অবস্থা আসবার সম্ভাবনা বেশী হয় ৷

31.10.35


ন: মা, তােমার হয়ে শুধু তােমার জন্যে কাজ করছি ৷ ক আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলে আমি নীরব ও শান্ত থাকি ৷ ...কারাে কোন ব্যবহার, কোন কথা আমাকে কিছু করতে পারে না ৷

উ: কাজের মধ্যে এই ভাবই ভাল ৷ সব সময় রাখতে হয়, তাতে কাজে মায়ের সঙ্গে যুক্ত হওয়া সহজ হয় ৷

2.11.35


তাহাই চাই – হৃদয়পদ্ম সর্বদা খােলা, সমস্ত nature হৃদয়স্থ psychic beingএর বশ হওয়া, এতেই নবজন্ম হয় ৷

3.11.35


ন: আমি আজও তােমা হতে বহুদূরে আছি বলে কেন মনে করছি, মা? উ: কেন মনে করছ? তােমার physical mindকে [= দ্বারা] তােমার inner beingকে ঢেকে দিতে allow করছ বলে ৷ তােমার inner being অর্থাৎ psychic beingই সৰ্ব্বদাই আমি মায়ের শিশু বলে নিজেকে চেনে, মায়ের কাছে, মায়ের কোলে থাকে – physical mind সেই কথা ভাবতে সেই সত্য উপলব্ধি করতে সহজে পারে না ৷ সেই জন্য সর্বদা গভীরে psychicএ থাকতে হয় ৷ যা ভিতরে তােমার soul জানে তা বাহির থেকে physical mind দিয়ে খোঁজা দরকার কি? যখন বাহিরের মনে সম্পূর্ণ আলাে আসবে তখন সেও জানবে ৷

6.11.35


হ্যা, সমস্ত সত্তাকে (physical mind ও physical vital পৰ্য্যন্ত) একদিকেই ফিরাতে হয় ৷ তারাও যখন ওইভাবে ফিরে তখন কোনও serious difficulty আর থাকে না ৷

7.11.35


যা বলেছি কত বার, তা আবার বলতে হয় ৷ শান্ত সমাহিত হয়ে সাধনা কর, সব ঠিক পথে চলবে, বহিঃপ্রকৃতিও বদলাবে, কিন্তু হঠাৎ নয়, আস্তে আস্তে ৷ অপরদিকে যদি বিচলিত চঞ্চল হও, কল্পনা বা দাবী উঠে, তাহলে নিরর্থক গােলমাল ও কষ্ট সৃষ্টি করবে ৷ মা গম্ভীর হয়েছে, আমাকে ভালবাসে না ইত্যাদি – এইসব মায়ের উপর আক্রোশ কোন কামনার বা দাবীর লক্ষণ, বাসনা বা দাবী কৃতার্থ হয় না বলে এই সব ধারণা ৷ এই সবকে স্থান দিয়াে না, এ সবেতে নিরর্থক সাধনার ক্ষতি হয়ে যায় ৷

29.11.35


এই অবস্থা, এই বুদ্ধিই সত্য, সব সময় রাখা উচিত ৷ অহংকারের বুদ্ধিতে আর লােককে ও ঘটনাকে না দেখে এই অধ্যাত্মবুদ্ধিতে আর ভিতরের psychicএর দৃষ্টিতে দেখতে হয় ৷

7.12.35


মায়ের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা যার আছে সে সব সময় মায়ের কোলে, মায়ের মধ্যে থাকে ৷ বাধা উঠতে পারে, কিন্তু হাজার বাধা তাকে বিচলিত করতে পারে না ৷ সে বিশ্বাস, সে শ্রদ্ধা সব সময়, সব অবস্থায়, সব ঘটনায় অটুট রাখা, এ হল যােগের মূল কথা ৷ আর সব গৌণ, এটাই হচ্ছে আসল ৷

16.12.35


এই সময় physical consciousnessএর উপর শক্তি কাজ কচ্ছে, সেই জন্য অনেকের এই physical consciousnessএর বাধা প্রবলভাবে উঠেছিল – তােমার চঞ্চলতার কারণ এই যে এই বাহিরের physical consciousnessএর সঙ্গে নিজেকে identify করেছিলে যেন সে চেতনাই তুমি ৷ কিন্তু আসল সত্তা ভিতরে যেখানে মায়ের সঙ্গে সংযােগ থাকে ৷ সেই জন্য physical consciousnessএর অজ্ঞান, তামসিকতা, ভুল বােঝা ইত্যাদি নিজের বলে গ্রহণ করতে নেই ৷ যেন বাহিরের যন্ত্র, সেই যন্ত্রের যত দোষ অসম্পূর্ণতা সব মায়ের শক্তি সারিয়ে দেবে এই জ্ঞানই রেখে ভিতর থেকে সাক্ষীর মত অবিচলিত হয়ে দেখতে হয় – মায়ের উপর সম্পূর্ণ বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা রেখে ৷

16.12.35


ভিতরে সবই আছে ও মায়ের কাজ ভিতরে হচ্ছে ৷ তবে বাহিরের মনের সঙ্গে যুক্ত হলে সে সব টের পাওয়া যায় না, যতদিন সে মন পূর্ণ আলােকিত না হয়, ভিতরের সঙ্গে এক না হয় ৷

19.12.35


তুমি যা বর্ণনা করেছ, “ভিতরে গভীরে শান্তিময় প্রেমময় বেদনা, তখন ভিতরে কিসে আমাকে টানে” psychic বেদনা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না ৷ এই সবই psychic sorrowএর লক্ষণ ৷

20.12.35


এই সব বাধা দেখে বিচলিত হয়াে না ৷ ভিতরে যেয়ে স্থিরভাবে দেখে যাও, ভিতর থেকে জ্ঞান বাড়বে ৷ মায়ের শক্তিই এই সব বাধাকে আস্তে আস্তে সরিয়ে দেবে ৷

20.12.35


আসল কথা এই যে কাজের মধ্যে অহংকারের বা বহিঃপ্রকৃতির বশ হবে না ৷ তা যদি হও কাজ ত আর সাধনার অংশ হয় না, তা হয়ে যায় সামান্য কাজের সমান ৷ কাজকেও সমর্পিত ভাবে ভিতর থেকে করতে হয় ৷

27.12.35


ন: মা, আজ কয়েকদিন ধরে দুঃখ নিরানন্দ ও হতাশাব্যঞ্জক নানা কল্পনা ও প্রেরণা আসতে আরম্ভ করেছিল ৷ আমি শুধু ছােট শিশু হয়ে মা মা ডেকে চলেছি ৷ কিছুক্ষণ পরে দেখি old পাতার মত সব ঝরে পড়ে গেল এবং তারপর দেখি তােমার শান্তি আলাে পবিত্রতা ও আনন্দ নেমে আসল ৷


উ: এই রকম reject করে, ফেলে ফেলে দিয়ে ওসব suggestions নষ্ট হয়ে যায় – তাদের জোর ক্রমশঃ কমে গিয়ে আর তাদের প্রাণ থাকবে না ৷

4.1.36


ন: শুধু বাধা নিয়ে বড় চঞ্চল হয়ে পড়েছিলাম ও বাধার কথা বেশী চিন্তা করেছিলাম, তাই এত দুঃখকষ্ট ও আঘাত পেয়েছিলাম ৷ আর তােমাকে ভুলব না ৷

উ: এই ভাল ৷ তা করতে পারলে, বাধা ত বাধা বলে আসবে না বরং রূপান্তরের সুবিধের জন্য আসবে ৷

4.1.36


এই সব গােলমালের সম্বন্ধে একটা কথা বলা আবশ্যক হয়েছে, সে এই – এই সময় খুব সাবধান হও কার সঙ্গে তুমি ঘনিষ্ঠতা কর বা বেশী মেশ ৷ যেমন D. R.এ ‘চ’, ‘জ’ ৷ ‘চ’র মধ্যে অশুদ্ধ শক্তির খুব খেলা হয়, তখন [তার] ৷ শরীরের মধ্যে একটা জ্বালা হয় আর বুদ্ধির বিপরীত অবস্থাও হয়, hunger-strike করে মাকে জোর করে নিজের ইচ্ছার অধীন করতে চায়, বিদ্রোহ করে আমাদের নিন্দাও করে, সাধিকাদের [মনে] আমাদের উপর অসন্তোষ সৃষ্টি করতে চেষ্টা করে ৷ আমি দেখেছি ‘চ’র সঙ্গে [যারা] বেশী মেশে এই পেটে আগুনের জ্বালা গােলমাল ও বুদ্ধির বিপরীত অবস্থা তাদের মধ্যে সংক্রামক রূপে আরম্ভ হয়েছিল ৷ জ’র [ক্ষেত্রে] তত হয় না, তবে অহঙ্কার ও অশুদ্ধ অবস্থা সহজে উঠে, তখন শরীরের ভিতরেও আগুনের জ্বালা ও নানা গােলমাল হয় ৷ তােমার গােলমালের, unsafe conditionএর feeling আর red pepper কাটা গায়ে লাগার feeling তাদের সেই অশুদ্ধ শক্তির আক্রমণের চেষ্টা হতে পারে ৷ সে জন্য বলছি সাবধান হয়ে থাক, ছাড়া আর কারাে কাছে নিজেকে open করাে না ৷ এই কথা তােমারই জন্য লিখেছি, আর কারও কাছে প্রকাশ করতে নেই ৷ প্রণামে মা তােমার ভিতরে দেখছিলেন কেন গােলমালের feeling হচ্ছে ৷ প্রকৃতির বাধা সকলেরই হয় – কিন্তু গােলমাল যাতে না হয় এই দিকে সাবধান থাকা ভাল ৷

21.1.36


এই অনুভূতি খুব ভাল ৷ প্রণামে মা ভিতর থেকে কি দিচ্ছেন, তাই feel করতে হয় – শুধু বাহিরের appearance দেখে লােকে কত ভুল বুঝে ভিতরের দান নিতে ভুলে যায় বা নিতে পারে না ৷

22.1.36


এই change (পিছনের দিকে খুব ভাল, অনেকবার পিছন থেকে এই ধরণের আক্রমণ আসে, কিন্তু মায়ের শক্তি ও চৈতন্য সেখানে থাকলে আর প্রবেশ করতে পারে না ৷ সাদা পদ্মের অর্থ এই যে সেখানে মায়ের চৈতন্য প্রকাশ হচ্ছে ৷

পিছনের দিকে psychic beingএর স্থান আর সেখানে যত কেন্দ্র, যেমন heart centre, vital centre, physical centre যেখানে মেরুদণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়, সেখানে তাদের প্রতিষ্ঠার স্থান ৷ এই জন্য এই পিছনের দিকটার চেতনার অবস্থা বড় important.

24.1.36


এই যে feeling যে মা দূরে আছে, এটী ভুল ধারণা ৷ মা তােমার কাছেই, তবে বাহিরের মন প্রাণের পর্দা পড়ে, তখন এই ধারণা হয় ৷ যে একবার ভিতরে ভিতরে মায়ের কোলে রয়েছে তার পক্ষে এই পর্দা সরান কঠিন নয় ৷

31.1.36


এ মনে রাখ যে মা দুরে যান না, সৰ্ব্বদা নিকটে ভিতরে আছেন – যখন বহিঃপ্রকৃতির কোনও রকম চঞ্চলতা হয়, তখন সে ভিতরের সত্য ঢেকে ফেলে ঢেউর মত, তাই ওরূপ বােধ হয় ৷ ভিতরে থাক, ভিতরে থেকে সব দেখ, কর ৷

12.2.36


এই সবই সত্য ৷ বাহিরের অহংকার, অজ্ঞান অসত্য ৷ বাহিরকার নিজের নয়, আত্মার নয় বলে reject করতে হয় ৷ তার জন্য ভিতরে থাকতে হবে, সেখান থেকে সব বুঝতে দেখতে করতে হবে ৷

13.2.36


যখন বাহিরের physical consciousnessএ অবস্থান হয়, তখন এইরূপ সাধনাশূন্য অনুভূতিশূন্য অবস্থা হয় – তা সকলের হয় ৷ তা না হবার একমাত্র উপায় তােমাকে বলেছিলাম – ভিতরে থাকা, বাহিরের অজ্ঞান অহংকার সাধারণ প্রাণবৃত্তির বশ না হয়ে ভিতরের psychic being থেকে এসবকে দেখা, প্রত্যাখ্যান করা ৷ ভিতর থেকে মায়ের শক্তি আস্তে আস্তে এসব অন্ধকার অংশকে আলােকিত রূপান্তরিত করে ৷ যারা তাই করে, তাদের বাধাও বাধা দিতে পারে না ৷ অনেকে তা করে না, physicalএই অবস্থান করে সে, physicalএর উপর যত দিন উপর থেকে আলাে শক্তি ইত্যাদি না আসে ৷

23.2.36


এই কথার উত্তর আগেই দিয়েছি ৷ ভিতরে থাক, ভিতরে থেকে সব দেখ, বাহিরের চক্ষুতে নয় ৷ বহিশ্চৈতন্যে থাকলে চিন্তায় আচরণে অনেক ভুল হবার কথা ৷ ভিতরে থাকলে psychic being ক্রমশঃ প্রবল হয়, psychic beingই সত্য দেখে, সব সত্যময় করে দেয় ৷

25.2.36


এই চিন্তা ও ভয়ের বদলে এই নিশ্চয়তা ও শ্রদ্ধা রাখতে হয় যে যখন একবার মায়ের সঙ্গে ভিতরে যােগ হয়েছে, তখন হাজার বাধা হলেও বহিঃপ্রকৃতির কতই দোষ বা অসম্পূর্ণতা থাকলেও মায়ের জয় আমার মধ্যে অবশ্যম্ভাবী, অন্যথা হতেও পারে না ৷

26.2.36


যখন এই শূন্য অবস্থা আসে, তখন মনকে খুব শান্ত কর, মায়ের শক্তি আলােককে ডাক বহিঃপ্রকৃতিতে নামবার জন্যে ৷

7.3.36


এই সব বহিঃপ্রকৃতি থেকে আসে ৷ যখনই আসে আমার নয় বলে reject করতে হয় ৷ বাহিরের যা আসে তাতে সায় না দিলে শেষে আর আসতে পারবে না ৷

9.3.36


“লােকে আঘাত দিলে” মানে তােমার অহংকারে আঘাত পড়লে ৷ অহংকার যতদিন থাকবে ততদিন তার উপর আঘাত পড়বেই ৷ অহংভাবকে ছেড়ে দিয়ে শুদ্ধ সমর্পিত অন্তঃকরণে সমভাব সহিত কাজ করতে হয়, ইহাই সাধনার একটী প্রধান অংশ ৷ তাই করলে আঘাত লাগবে না, মাকে পাওয়াও সহজ হবে ৷

18.3.36


ভিতর থেকে যা বলা হয়েছে, তা সত্যই ৷ বহিশ্চেতনার অজ্ঞানে থেকে কেবল ভুলভ্রান্তি মিথ্যা কষ্ট হয়, সেখানে সব ক্ষুদ্র অহমের খেলা ৷ ভিতরেই থাকতে হয় – আসল সত্য চেতনা সত্য ভাব সত্য দৃষ্টি যার মধ্যে, অহংকার অভিমান বাসনার দাবীর লেশ মাত্র থাকবে না, তাহাই grow করতে দাও, তখন মায়ের চৈতন্য তােমার মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হবে, মানব প্রকৃতির অন্ধকার বিরােধ বিভ্রাট আর থাকবে না ৷

18.3.36


এই কথা ৷ মাকে প্রথম পেতে হবে ভিতর থেকে, বাহির থেকে নয় – বাহির থেকে পেতে গেলে, তাও হয়, ভিতরটাও কখনও তার সান্নিধ্য দ্বারা আলােকিত হয় না ৷ ভিতরে সম্পূর্ণরূপে পেলে তার পরে বাহিরটা যা আবশ্যক তা realised হতে পারে ৷ এই সত্য দু’একজন ছাড়া কেহ এখনও ভাল করে বুঝতে পারেনি ৷

22.3.36


ন: স্বপ্ন দেখলাম একটি পুরুষমানুষ আমার কাছে এসেছে ৷ আমি তার বুকের উপর উঠে তাকে মেরে ফেললাম ও তার পুরুষাঙ্গ কেটে দিলাম ৷ ...তখন দেখি আমার চেহারা মহাকালীর মত ভীষণ হয়েছে ৷

উ: এই পুরুষটী কোন vital force হবে, হয়ত sex impulseএর একটা force ৷এই অনুভূতিতে তােমার vital being তাকে কেটে ফেলেছে ৷ সাধকের vital being এইরূপ যােদ্ধা হওয়া চাই – খারাপ vital forceর বশ না হয়ে, ভীত না হয়ে তাকে meet করবে আর বিনাশ করবে ৷

23.3.36


ন: মা, আমি দেখছি আমার মাথাটা খুব শান্ত পবিত্র আলােকিত হয়ে বিশ্বময় হচ্ছে ৷

উ: খুব ভাল অনুভূতি ৷ এতে বােঝা যায় যে mindএ ঊর্ধচেতনা নামছে, আত্মার উপলব্ধি নিয়ে নামছে ৷ তখনই এইরূপ শান্ত পবিত্র আলােময় বিশ্বময় হয় – কারণ আত্মা বা true সত্তা সেরূপ শান্ত পবিত্র আলােময় বিশ্বময় ৷

27.3.36


ভাল, এইরূপ করে ঊর্ধচেতনা নামা চাই শান্ত বিশ্বময় ভাব নিয়ে, প্রথম মাথায় (মানস ক্ষেত্রে) তার পর হৃদয়ে (emotional vital ও psychicএ) তার পরে নাভিতে ও নাভির নীচে (vital) শেষে সমস্ত physicalকে ব্যাপ্ত করে ৷

28.3.36


নীল আলাে আমার, সাদা আলাে মায়ের – যখন ঊর্ধচেতনা (higher consciousness) বিশ্বময় ভাব নিয়ে আধারে প্রথম নামতে আরম্ভ করে তখন নীল আলাে খুব দেখা স্বাভাবিক ৷

28.3.36


ভিতরে মায়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে থাকতে হয় আর সেখান থেকে বাহিরের প্রকৃতির বাধা দোষ ত্রুটি দেখতে হয়, দেখে বিচলিত বা বিষন্ন বা নিরাশ হতে নাই ৷ স্থিরভাবে প্রত্যাখ্যান করে মায়ের আলাে ও শক্তির জোরে শুধরিয়ে নিতে হয় ৷

16.4.36


যে চিন্তার কথা বল, সে চিন্তা দূর করতে হয় ৷ আমি যা চাই, তা হয়নি, যা পাবার আশা ছিল তা পাইনি ৷ কেমন [করে] করব, আমার হবে না – এ সব হচ্ছে অশ্রদ্ধার কথা, প্রাণের চাওয়া ও পাওয়া না-পাওয়ার চিন্তা ৷ আমি কি পাব মার কাছে এই চিন্তা হচ্ছে অহমের, – মাকে কেমন করে নিজেকে সব দেবে, এই চিন্তাই হচ্ছে অন্তরাত্মার – সাধকের প্রায় সব বাধার লুক্কান মূল এই পাওয়ার ভাব ৷ যে সব দেয় ভগবানকে, সে ভগবানকে আর ভগবানের সব পায়, না চেয়েও ৷ যে পেতে চায় এটা ওটা, সে এটা ওটা পায়, কিন্তু ভগবানকে পায় না ৷

18.4.36


কেহ যদি সচেতন হয়ে বাধার সম্মুখীন হয়ে মায়ের উপর নির্ভর করে, মায়ের শক্তির জোরে ধীর ভাবে ঠেলে দেয় যতবার আসে, শেষে সে বাধামুক্ত হবেই হবে ৷

20.4.36


It is good. সব সময় মায়ের উপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখতে হয় যে তারই হাতে আছি, তার শক্তিতে সব হবে ৷ তা হলে বাধার জন্য দুঃখ বা নিরাশা আসতে পারবে না ৷

17.5.36


এমন অবস্থা হওয়া চাই যে চেতনা ভিতরে থাকবে মায়ের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আর মায়ের শক্তি কাজ করাবে, বাহিরের চেতনা সে শক্তির যন্ত্র হয়ে কাজ করবে – কিন্তু এই অবস্থা পুরােপুরি রূপে সহজে আসে না ৷ সাধনা করতে করতে আসে আর আস্তে আস্তে complete হয়ে যায় ৷

23.5.36


সাধনার পথে শূন্যতা অনেকবার আসে – শূন্য অবস্থায় বিচলিত হতে নাই ৷ শূন্যতা অনেকবার নূতন উন্নতিকে prepare করে ৷ তবে দেখতে হবে যেন শূন্যতার মধ্যে বিষাদ চঞ্চলতা না আসে ৷

25.5.36


ইহাই ঠিক ৷ দেহের মরণে মুক্তি হয় না, এই দেহেই নূতন দেহচেতনা ও সেই নূতন চেতনার শক্তি চাই ৷

25.5.36


এই অবস্থাই চাই – সব ভিতরে বিরাট শান্ত নীরব মাময় আনন্দময় ৷

28.5.36


‘স’ সম্বন্ধে লিখেছিলাম যে ‘প’র আধখাওয়া রুটি গ্রহণ করা বড় ভুল ৷ এইরূপ স্থলে সে লােকটীর মধ্যে যদি কোন খারাপ শক্তি অধিকার করে থাকে তাহলে ঐ আহারকে অবলম্বন করে সেই শক্তি যে খায় তার শরীরের উপর প্রাণস্তরের উপর আক্রমণ করতে পারে ৷

3.6.36


ন: “ত” ও “স’র সঙ্গে অন্যদিনের চেয়ে বেশী কথা বলাতে আমার খুব মাথা কামড়েছিল ও অস্বস্তি বােধ করেছিলাম ৷ কিন্তু যখন একটু শান্ত নীরব হয়ে তােমায় ডাকলাম ও আমার ভিতরে একটি তােমাময় তীব্র ইচ্ছা ও বিশ্বাস হল যে ইহা দূর হইবে ৷ একটু পরে দেখি, সত্যই দূর হয়েছে আর আমি অসীম শান্তি আনন্দ প্রেম পবিত্রতায় ও তােমাতে ভরে উঠছি ৷

উ: এই হচ্ছে আসল উপায় - এই উপায়েই চেতনার যত lowering বা deviation (নিম্নগতি বা ভ্রান্তগতি) সারান যায় ৷

9.6.36


ন: সারারাত যেন অন্ধকারময় অচৈতন্যময় তমােময় জগতে মড়ার মত পড়ে থাকি ৷ সকালে উঠতে পারি না ৷ জোর করে উঠে দেখি শরীরটা বড় জড় অলস বলহীন উৎসাহহীন শান্তি ও আনন্দশূন্য হয়ে যায় ৷ মা এমন হলে আমার ঘুম দূর করে দাও ৷

উ: অবচেতনার ঘুম ওরকমই হয় – কিন্তু না ঘুমালে অবচেতনায় ছাপ বেড়ে যায়, কমে না ৷ এ সবের মধ্যে উপরের আলাে ও চেতনাকে ডেকে আনা হচ্ছে একমাত্র উপায় ৷

20.6.36


কখনও বাধার অবস্থা স্থায়ী থাকতে পারে না – মায়ের কোল থেকে তুমি দূরে যেতেও পার না – মাঝে মাঝে পৰ্দা পড়ে মাত্র, সে জন্যে বাধা উঠলে ভয় করতে নাই, দুঃখ করতে নাই, বাধাকে reject করতে করতে মাকে ডাকতে ডাকতে ভাল অবস্থা ফিরে আসে – শেষে বাধা উঠলেও আর স্থায়ী সত্যি অবস্থাকে cover করতে পারবে না ৷

22.6.36


এই হচ্ছে ঊর্ধচেতনার সােপান – এই চেতনার অনেক plane বা সমতল ভূমি, এই সােপানে ভূমির পর ভূমিতে উঠে শেষে supermindএ উঠে, ভগবানের সীমাহীন আলােময় আনন্দময় অনন্তে ৷

27.6.36


যখন অজ্ঞানের মিথ্যা ওঠে তখন পথ ঢাকা হয়ে পড়ে – তার উপায় আছে ৷ এই —এই মিথ্যায় বিশ্বাস না করা, এ suggestionকে reject করা এ সব সত্য হতে পারে না বলে ৷ বাধা আছে তাতে কি, সােজা পথে চল, বাধা শেষে আপনি খসে পড়বে ৷

27.6.36


এইটী বাহিরের গােলমালের ফল ৷ শরীরের উপর আক্রমণ – শান্ত ভাবে নিজের মধ্যে সংযত হয়ে বাহির করতে হবে ৷

1.7.36


এ ত ভালই – বাহিরে প্রিয় বা অপ্রিয় যাহা ঘটুক, সব সময় অবিচলিত থাকা, ভিতরে মায়ের সঙ্গে যুক্ত ৷ ইহাই সাধকের অবস্থা হওয়া উচিত ৷

2.7.36


এখনও শরীর বাহিরের সাধারণ influencesএর উপরে ওঠেনি – এ সর্দি এ সব বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা ভিজে বাতাসের ফল হবে ৷ কিন্তু শরীর মায়ের শক্তির দিকে খুলেছে, যে শক্তিকে ডাকলে এ সব বাহিরের স্পর্শ শীঘ্র মুছে যায় ৷

12.7.36


ন: এখন আর দুঃখ কান্না হতাশা ও মরে যাব, চলে যাব, মা আমাকে ভালবাসেন ৷ ইত্যাদি মানব প্রকৃতির জিনিস আমার মধ্যে আসতে পারছে না ৷ যদি কোন রকমে আসে, কে আমাকে সচেতন করে দেয় এবং আমি ছােট শিশুর মত মা মা ডাকি ও হৃদয়ের গভীরে যাই... ৷

উ: It is very good. এই ভাবে চললে মানব প্রকৃতির ঐ সব পুরাতন movement খসে যাবে, আর আসতে পারবে না ৷

18.7.36


ন: মা, এখন আমি feel করি তুমি আমার ভিতর দিয়ে সব কাজ করছ ও আমার ভিতরে আছ... আজকাল কাজের জন্য কেহ বকাবকি করলে শান্ত ভাবে থাকি ও সতর্ক হয়ে ভিতরের আনন্দে কাজ করতে চেষ্টা করি ৷ কিন্তু মাঝে মাঝে বাহিরের ও মানব প্রকৃতির জিনিষ এসে আমাকে ঢেকে ফেলে আর তখন আমি একটু গােলমাল চিন্তা ও চঞ্চলতা অনুভব করি ও তােমাকে ভুলে যাই ৷

উ: This also is very good. বাহির, ভুলে যাওয়া এই সব প্রকৃত্রি habitএর জন্য হয় ৷ কিন্তু এই ভিতরের ভাব যদি সব সময় যত্ন করে রাখ, তা হলে এই সব habit খসে যাবে, শেষে আর আসবে না ৷ সত্য চেতনার movementই মন প্রাণের natural habit হয়ে যাবে ৷

18.7.36


আমরা ত তােমাকে ছেড়ে দিইনি ৷ যখন depression হয় তখন তুমি এ সব কথা ভাব ৷ মাঝে মাঝে তুমি বাহিরের চেতনায় এসে আর মাকে feel কর ৷ না, তাই বলে ভাবা উচিত নয় যে মা তােমাকে ছেড়ে দিয়েছেন ৷ আবার ভিতরে যাও, সেখানে তাকে feel করবে ৷

5.9.36


যখন চেতনা physicalএ নামে তখন এইরূপ অবস্থা হয় ৷ তার অর্থ এই নয় যে সব সাধনার ফল বৃথা হয়েছে বা উপরে চলে গেছে – সব আছে কিন্তু আবরণের মধ্যে পিছনে রয়েছে ৷ এই obscure physical মায়ের চেতনা আলাে ও শক্তি নামাতে হয় – সেটা যখন প্রতিষ্ঠিত হবে তখন আর এ অবস্থা ফিরে আসবে না ৷ কিন্তু যদি বিচলিত হও, depressed হও বা এই সব চিন্তা প্রবেশ করে যে আমার আর এ জীবনে হবে না, মরা ভাল ইত্যাদি, তা হলে একটা বাধা হয় সে চেতনা শক্তি আলাে নামবার পথে ৷ সেজন্য এগুলােকে reject করে মায়ের উপর নির্ভর রাখা আর শান্তভাবে aspire করা ও তাকে ডাকা উচিত ৷

19.9.36


মা ত ওরকম কিছু বলেননি তােমার সম্বন্ধে ৷ এই কথা সত্য যে একটী মুখ্য কাজ আছে সকলের যা মা দিয়েছেন, সেটা ত প্রধান কাৰ্য্য ৷ তার পর অন্য সময়ে যা তারা করতে চায়, সে স্বতন্ত্র কথা ৷ সব কাজ right spiritএ করতে হয়, বাহিরে কিছু না চেয়ে, মায়ের চরণে সমর্পণ করে, ইহাই আসল কথা ৷

21.9.36


ওই সােজা আলােকময় পথই আসল পথ, তবে তার মধ্যে পহুচতে সময় লাগে ৷ একবার ঐ পথে পহুচলে আর বিশেষ কোনও কষ্ট বাধা স্থলন হয় না ৷

21.9.36


আমি ত বলেছি কেন হঠাৎ সম্পূর্ণভাবে হয় না – বাহিরের physical consciousness ওঠার জন্য ৷ এইরূপ অবস্থা সকলের হয় – তখন ধৈর্য্য ধরে তার মধ্যে মায়ের চেতনা নামাতে হয়, অনেক সময় লাগলেও ক্ষতি নাই ৷ রূপান্তর ত খুব কঠিন ও মহৎ কাজ – সময় লাগা স্বাভাবিক ৷ ধৈৰ্য্য ধরতে হয় ৷

26.9.36


এটা সত্য যে বাহিরের মন, চোখ, মুখ সব মাকে দিতে হয় নিজের নয় ভেবে, যাতে সব তারই যন্ত্র হয়, আর কিছু নয় ৷

1.10.36


এসব বিলাপ ও আক্রোশ তামসিক অহংকারের লক্ষণ – আমি পারি না, আমি মরব, আমি চলে যাব ইত্যাদি করলে বাধা আরও ঘনিয়ে এসে তামসিক অবস্থাকে বাড়িয়ে দেয়, এতে সাধনার কোন উন্নতির সাহায্য হয় না ৷ আমি একথা তােমাকে বার বার লিখেছিলাম ৷ আসল কথা আর একবার লিখি ৷ তােমার সাধনা নষ্ট হয়নি, যা পেয়েছিলে তাও চলে যায় নি, পর্দার পিছনে পড়েছে শুধু ৷ সাধনার পথে একটা সময় আসে যখন চেতনা একেবারে physical plane নেমে যায় ৷ তখন ভিতরের সত্তার উপর, ভিতরের অনুভূতির উপর একটা অপ্রবৃত্তির ও অপ্রকাশের পর্দা পড়ে, এমন বােধ হয় যে সাধনা আর কিছুই নাই, aspi-ration নাই, অনুভূতি নাই, মায়ের সান্নিধ্য নাই, একেবারে সাধারণ মানুষের মত হয়েছি ৷ এই অবস্থা যে শুধু তােমারই হয়েছে তা নয়, সকলের হয় বা হয়েছে ৷ বা হবে, এমন কি শ্রেষ্ঠ সাধকদেরও হয় ৷ কিন্তু সত্য কথা হচ্ছে এই যে এটা সাধনপথের একটা passage মাত্র, যদিও বড় দীর্ঘ passage ৷এ অবস্থায় না ৷ নামলে পুরাে রূপান্তর হয় না ৷ এই ভূমিতে নেমে সেখানে স্থির হয়ে মায়ের শক্তির খেলা, রূপান্তরের কাজ ডেকে আনতে হয়, আস্তে আস্তে সব cleared হয়ে যায়, অপ্রকাশের বদলে দিব্য প্রকাশ হয়, অপ্রবৃত্তির বদলে দিব্য শক্তি ও অনুভূতির প্রকাশ হয়, শুধু ভিতরে নয়, বাহিরে, শুধু উচ্চ ভূমিতে নয়, নিম্ন ভূমিতে, শরীর চেতনায়, অবচেতনায়ও হয় ৷ আর যে সব অনুভূতির উপর পর্দা পড়েছিল, সেগুলাে বেরিয়ে আসে, এই সব ভূমিকেও অধিকার করে ৷ কিন্তু সহজে শীঘ্র হয় না, আস্তে আস্তে হয় – ধৈৰ্য্য চাই, মায়ের উপর বিশ্বাস চাই, দীর্ঘকালব্যাপী সহিষ্ণুতা চাই ৷ যে ভগবানকে চায় তাকে ভগবানের জন্য কষ্ট স্বীকার করতে হয় ৷ যে সাধনা চায়, তাকে সাধনা পথের কষ্ট বাধা, বিপরীত অবস্থাকে সহ্য করতে হয় ৷ শুধু সাধনায় সুখ ও বিলাস চাইলে চলবে না, বাধা ৷ আছে বলে, বিপরীত অবস্থা আসে বলে কেবল কান্নাকাটি ও নিরাশা পােষণ করলে চলবে না ৷ তাতে পথ আরও দীর্ঘ হয় ৷ ধৈৰ্য্য চাই, শ্রদ্ধা চাই, মায়ের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর চাই ৷

14.12.36


এই attitudeই ভাল ৷ যখনই বাধা হয়, চেতনার উপর পর্দা পড়ে, তখন বিচলিত না হয়ে শান্তভাবে মাকে ডাকতে হয় যতক্ষণ পর্দা খসে না যায় ৷ পর্দা পড়ে বটে কিন্তু পিছনে সবই আছে ৷

15.12.36


মা ইচ্ছা করে আঘাত করেন নি! তবে যদি ভিতরে কোন বাসনা বা অহংকার থাকে, সেগুলাে উঠে মায়ের কাছে স্বীকৃতি বা পােষণ না পেয়ে নিজেকে আহত বােধ করে আর সাধক মনে করে মা আমাকে আঘাত দিচ্ছেন ৷ যদি বা কখন আঘাত দেন, অহংকার ও বাসনাকে আঘাত দেন, তােমাকে নয় ৷ অহংকার ও বাসনাকে বর্জন করে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করলে প্রকৃতির সব দোষ ক্রমে ক্রমে অন্তর্হিত হয়, এবং মায়ের চিরসান্নিধ্য পাওয়া যায় ৷

15.1.37


এই নীচে নামা শারীরিক চেতনায় সকল সাধকেরই হয় – না নামলে সে চেতনায় রূপান্তর হওয়া কঠিন ৷

24.1.37


ন: আমি প্রায় সময় চেষ্টা করছি আমার মধ্যে তােমার আলাে ও চেতনাকে ডেকে আনতে কিন্তু আমার ভিতরে তেমন কিছু হচ্ছে না মা, আমি কি করব? উ: ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা করলে শেষে ফল হতে আরম্ভ হয় ৷ শরীরচেতনা খােলে, অল্পে অল্পে পরিবর্তন আরম্ভ হয় ৷

24.1.37


এতে বিচলিত হয়াে না ৷ যােগপথে এইরূপ অবস্থা আসেই – যখন নিম্নতম শরীরচেতনায় ও অবচেতনায় নামবার সময় আসে – সে সমস্ত অনেকদিন টিকতে পারে ৷ কিন্তু এ পর্দার পিছনে মা আছেন, পরে দেখা দেবেন, এই নিম্নরাজ্য উপরের আলােকের রাজ্যে পরিণত হবে, এই দৃঢ় বিশ্বাস রেখে সব সমর্পণ করতে করতে এই বাধাপূর্ণ অবস্থার শেষপর্যন্ত এগিয়ে চল ৷

8.3.37


মা তােমা থেকে দূরে যাননি, সঙ্গেই আছেন – বহিশ্চেতনার পর্দার জন্য অনুভব কর না – তবে বিশ্বাস রেখে থাকতে হয় যে মা আছেন তােমার সঙ্গে, ভিতরেই রয়েছেন, সে বিশ্বাসে চলতে হয় ৷ এই সব বাধা ত কিছুই নয়, মানুষমাত্রেই রয়েছে, “উপযুক্ত’ ত কেহই নাই —এই সব ভাল খারাপের গণনা বৃথা ৷ মায়ের উপর বিশ্বাস ও অটুট aspiration রাখাই সব, তাতে শেষে সব বাধা অতিক্রম করা হয় ৷

14.3.37


যতই নিম্নে ও অতল গভীরে যাও, মা সেখানে তােমার সঙ্গে আছেন ৷

18.3.37


মা ভগবান ছাড়া তুমি নও – মা ত তােমার সঙ্গেই আছেন – সাধক পাতালে নামে সেখানে উপরের আলাে ও চেতনা আনবার জন্য – এই বিশ্বাস রেখে ধীরচিত্তে চল, সে আলাে সে চেতনা নামবেই ৷

3.4.37


শেষ পত্রে যা লিখেছ, সবই সত্য – এইরূপ সচেতন হয়ে সব সময় থাক – বাহিরের স্পর্শে বা মিথ্যার শক্তির suggestionএ আর বিচলিত বা বিমূঢ় হতে হবে না ৷ নিজের ভিতরে থাক যেখানে মা আছেন – বাহির ত বাহির, বাহিরকে ভিতর থেকে সত্যের চক্ষু দিয়ে দেখতে হয়, তা হলেই সাধক নিরাপদ হয়ে থাকে ৷ সাধকরাই অজ্ঞানে ডুবে মায়ের কাছ থেকে দূর হয়ে যায় ৷ মা ত কখন দূর হন না, চিরকাল ভিতরে সঙ্গেই আছেন ৷ ভিতরে থাকলে তাকে হারায় না ৷

পুনশ্চ – অসুখটা বােধ হয় এই আক্রমণের ফল, শান্ত হয়ে মায়ের দিকে শরীর-চেতনা খুলে রাখ – সেরে যাবে ৷

3.6.37


ন: এখন প্রতি মুহূর্তে শ্বাসে প্রশ্বাসে প্রত্যেক চিন্তাতে ও দৃষ্টিতে অসংখ্য ছােট ছােট শিশিরবিন্দুর মত বাধা অনুভব হচ্ছে ৷ প্রায়ই মাথা কামড়ায়, বিশেষ করে যখন ভিতরে ডুবে থাকি তখন অসহ্য হয় ৷ কখনও কখনও বুকের মধ্যে ভয়ের মত একটি কম্প হয় ও মনপ্রাণ বেশী ছটফট করে, কোন সময় গলাতে কঁাটার মত কি আসে... ৷

উ: শরীরচেতনা ত এ সব বাধা উঠিয়ে দেবেই ৷ এগুলােকে উপেক্ষা করে দৃঢ় হয়ে মায়ের কাছে যাবার দৃঢ় সঙ্কল্প রাখবে, তবে বাধাগুলাে শেষে আর পথ রােধ করতে পারবে না ৷ 6.6.37


মায়ের সাহায্য ত আছেই – বাধার জন্য নিরাশ না হয়ে ভিতরে নীরব হয়ে নিজেকে খুলে থাক, সে সাহায্য পাবে, গ্রহণ করতে পারবে ৷ 31.8.37


মায়ের ভালবাসা ও সাহায্য সব সময়ই আছে, তাহার অভাব কখনও হয় না ৷ 26.9.38


ন: এখনও পর্যন্ত কেন আমি সব সময় মাকে কাজের মধ্যে স্মরণ করতে পারি না?

উ: ইহা মনের স্বভাব সে যাহা করে তাতেই মগ্ন থাকে – সাধনার অভ্যাসের বলে মনের এই সাধারণ গতি অতিক্রম করা যায় ৷


সমস্ত সত্তা সব detailএ খােলা ও সম্পূর্ণ সমর্পিত হতে সময় লাগে – বিশেষ lower vital ও physicalএ (নাভির নীচে ও পায়ের তল পৰ্য্যন্ত) উপরের চৈতন্য নামতে সময় লাগে ৷ তােমার higher vital বেশ খােলা আছে, নিম্ন প্রাণ ও শরীরচেতনা খুলছে – কিন্তু সম্পূর্ণ খােলে নি, সেই জন্য এখনও বাধা আছে – কিন্তু তাতে বিচলিত হতে নেই ৷ মায়ের কাজ তােমার ভিতরে দ্রুত হচ্ছে, সব হয়ে যাবে ৷


আমি লিখেছিলাম যে কোন বাসনা বা দাবীকে আশ্রয় না দিয়ে মাকেই চাইতে হয় ৷ বাসনা ইত্যাদি আসে প্রাণের পুরাতন অভ্যাস দরুণ – তবে যদি সায় না দাও আর ফেলে দাও প্রত্যেকবার, অভ্যাসে জোর কমে যাবে, শেষে বাসনা দাবী আর আসবে না ৷


It is very good – ভিতরের পরিবর্তন যখন হয়েছে, বাহিরেরও আস্তে আস্তে হয়ে যাবে, বহিঃসত্তা ভিতরের প্রকাশ, মায়ের যন্ত্র হবে ৷


ন: আমি সমস্ত আধারে তােমার শক্তির অবতরণ ও কাজ feel করছি ৷ পিছনে অর্থাৎ পিঠের মধ্যে কিছু খুলছে বােধ হচ্ছে এবং তার মধ্যে তােমার শান্তি ও আলাে দেখছি ও feel করছি ৷

উ: ইহা খুব ভাল ৷ পেছনের সত্তাটা প্রায়ই অচেতন হয়ে থাকে আর তার দ্বারা বাধা ঢুকতে পারে সহজে ৷ এই পেছনের ভাবটা খােলা ও সচেতন হওয়ায় খুব ভাল ফল হয় ৷


মা ত আছেন তােমার ভিতরে ৷ যে পর্দা পড়েছে physical প্রকৃতির, তারই উপর শক্তির কাজ করা হচ্ছে, সে মায়ের আলােকে শেষে transparent হয়ে যাবে ৷


ঘুম না হওয়া, শরীর দুর্বল হওয়া কিছুতেই ভালাে নয় ৷ ঘুম না হলে শরীর দুৰ্বল হবেই ৷ ঘুমেও সাধনার অবস্থা থাকতে পারে ৷ অর্থাৎ মায়ের কোলে ঘুমােন, কিন্তু ঘুম চাই-ই ৷


একবার বিশদ অবস্থা, একবার বাধার অবস্থা, এ সকলের হয় ৷ সাধনার ক্রম এই ৷ স্থির হয়ে থাক, আস্তে আস্তে বিশদ অবস্থা বাড়বে, বাধার অবস্থা কমে যাবে, শেষে আর আসবে না ৷


অশান্তি ও অচৈতন্যতা এলে, শান্ত হয়ে প্রত্যাখ্যান করে মায়ের নিকট সমর্পণ কর – তা হলে ওগুলাে টিকতে পারবে না ৷


মায়ের সাহায্য তােমার সঙ্গে আছেই – নিজেকে খুলে রাখলে তােমার ভিতরে তার কাজ সফল হবে ৷


ইহাই চাই – যদি বাধা এসেও টলাতে না পারে, তা হলে সে চেতনার যেন ৷ একটী দৃঢ় প্রতিষ্ঠা হয়ে যাচ্ছে – যেমন ভিতরে, তেমনই বহিঃপ্রকৃতির মধ্যে ৷


ক্লান্তিবােধ শরীরচেতনার – তমােগুণ যার প্রধান লক্ষণ ৷ যখন এ শরীরচেতনা ভাবে যে আমি কাজ কর্ডি’ তখন এই ক্লান্তিবােধ হয় ৷ আজকাল আশ্রমে শরীরচেতনায় এই তমােগুণ খুব খেলছে, একজনের চেতনা থেকে অপরের ৷ প্রসার হচ্ছে ৷


‘মা আজ গম্ভীর হয়ে রয়েছেন, আমার উপর তিনি অসন্তুষ্ট ৷ আমি যােগের অযােগ্য, আমার কিছু হবে না' এই সব মনের খেয়াল করে আশ্রমের অনেকে বিরুদ্ধ শক্তির আক্রমণ নিজের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়, যন্ত্রণা ভােগ করে, এমন কি চরম বিপদে পড়বার উদ্যোগ করে ৷ তুমি ওদের মত করাে না ৷ এই সব চিন্তা যখন আসে, তখন তাড়িয়ে দাও ৷Confidence in the Mother হচ্ছে ৷ এই যােগের প্রধান অবলম্বন, সেই confidence কখন হারাতে নাই ৷


অবশ্য বাকসংযম সাধনার পথে খুব উপকারী ৷ অতিমাত্র (অনাবশ্যক) কথা বলায় শক্তিক্ষয় হয় আর নিম্ন চেতনায় অবতরণ সহজে হয় ৷


বহিৰ্ম্মনের বাধা অতিক্রম করা প্রায় সময় সাপেক্ষ কারণ তার মূল স্বভাবের মাটিতে পোঁতা, শক্ত ও গভীরে যায় ৷ এই বাধায় বিচলিত হওয়া উচিত নয়, এই stageএ সে স্বাভাবিক ৷Patience ও perseverence চাই তাকে সম্পূর্ণ নির্মূল করতে ৷


বলেছি কতকটা বাধা থাকবে উপরে উপরে, ভিতরে শান্ত স্থির থাকলে ভিতরে ঢুকতে পারবে না – সাধনা করতে করতে সে উপরের বাধা ক্রমে ক্রমে চলে যাবে – এগুলাে প্রায়ই হঠাৎ যায় না ৷


ন: মা, ধ্যানে যেমন শান্তি আলাে পাই, জাগ্রতেও যেন তা পা এখন আবার আমার মধ্যে নেমে এসেছ? তােমার চরণ দুখানা মনে হচ্ছে আমার ভিতরে নেমে এসেছে ও উপস্থিত আছে ৷


উ: It is very good. সব ছিল ভিতরে, কিছুই হারাও নি —দেখছ, সব ফিরে আসছে ৷


ন: মা, কাল যে সারাদিন আমি ক্রন্দন করেছিলাম কেননা আমি সব সময় তােমার সঙ্গে যুক্ত নই কেন এবং কেন আমি pure ও তােমার দিকে সম্পূর্ণভাবে open নই, আজ সে দুঃখ আমার চলে গেছে ৷ আজকে আমি সব সময় সব কিছুতে তােমাকে feel করছি আর তুমি যেন ধীরে ধীরে আরাে আমার কাছে এগিয়ে আসছ এবং আমাকে তােমার আলাে ও শান্তি দিয়ে ভরে তুলছ ৷


উ: এ সব ভালই ৷ এখনও যে সবসময় সম্পূর্ণভাবে হয় না, ইহা আশ্চৰ্য্য নয়, দুঃখের কথা নয় ৷ এত শীঘ্র যে এতদূর এগিয়েছে সাধনা, ইহাই আশ্চর্য্য ও সুখের কথা ৷


ন: মা, আজ প্রণাম করবার সময় আমার ভিতর হতে কি সে তােমার কাছ থেকে কিছু পেতে চেয়েছিল ৷ কি কারণে আমার ভিতরে এরকম হল? কেন আমি প্রফুল্ল অন্তরে মুক্তভাবে সব তােমার শ্রীচরণে দিতে পারলাম না?

উ: বােধ হয়, পুরােন অভ্যাসের দরুন ঐ কিছু পেতে চাওয়া এসেছিল ৷ বাসনাতে দুঃখ আসে ৷ একটু সাবধান হয়ে প্রত্যাখ্যান করলে চলে যাবে ৷


ন: সৰ্ব্বদা মাকে সর্বত্র দেখতে পাওয়ার বােধ হচ্ছে, আর চোখ অশ্রুতে ভরে আসছে ৷ এই অশ্রু ত আমার নিজের দুঃখের জন্য নয় ৷ তবে ইহা কিসের জন্য?

উ: অশ্রু যখন দুঃখের নয়, তখন প্রেমভক্তিরই অশ্রু ৷


ন: মা, তুমি তােমার শিশুকে এবং তােমার শিশুর সব নিয়ে নিয়েছ এবং তােমার আর আমার মাঝে কোন ভেদ নেই ৷ এই সব কি দেখছি মা, দৃশ্যের মত, কাল্পনিক জিনিসের মত?

উ: এই অবস্থা ভালই ৷ ভেদ যখন নাই, তখন ভিতরের চেতনা মায়ের সঙ্গে মিলে আছে বলে সে রকম বােধ হয় ৷


ন: হৃদয়ে তােমার আসনের দুপাশে খুব উপর হতে দুটো সিঁড়ি নেমে এসেছে, একটি রূপার আর একটি সােনার ৷ এই সিঁড়ি দিয়ে ছােট বালিকার মত অনেক শক্তি নামছে; তাদের রূপ, পােশাক, আলাে দুই রকম – বিশুদ্ধ সাদা আর উজ্জ্বল সূর্যের মত ৷

উ: আধ্যাত্মিকতার পথ ও আধ্যাত্মিক শক্তি ও ঊর্ধের সত্যের পথ ও সেই সত্যের শক্তি ৷


ন: মাঝে মাঝে feel করি যে খুব উপর হতে কে আমাকে মধুরভাবে বলছেন, “আয়, আয়, সব ছেড়ে সমর্পণ করে উঠে আয় ৷ আর এই বাণী শােনার সাথে খুব উজ্জ্বল নীল আলােও পাই ৷ মা, কে আমাকে ডাকছেন?

উ: একদিন উপরে – মনের উপরে উঠতে হবে ৷ উপরের শান্তি শক্তি নামা ও উপরে উঠে মনের উপরে থাকা এই যােগের পক্ষে অতি প্রয়ােজনীয় ৷


ন: আজ আমার সাথে কোন কিছুর সম্বন্ধ নেই, আমি যেন সব কিছু হতে মুক্ত হয়ে গভীর শান্তি মাতৃময় চেতনার মধ্যে ডুবে আছি ৷ আজ দুইবার দুইটী খারাপ শক্তিকে দেখেছিলাম ও বােধ করেছিলাম তারা আমার পুরনাে চেতনা ও অন্ধকারের মধ্যে দিয়ে আমার মধ্যে ঢুকতে চাচ্ছে ৷ কিন্তু আমি অচঞ্চল থেকে সব তােমাদের শ্রীচরণে বলি দিয়েছি ৷

উ: It is good. খারাপ শক্তি বা অবস্থা আসতে চাইলেই, এমনই শান্ত ও সচেতন মনে মাকে ডাকলে তা চলে যাবে ৷


ন: মা, তুমি যেন এখন তােমার শিশুর কপালের মাঝখানে আছ ৷ আগে তােমাকে হৃদয়ে feel করতাম ও দেখতাম, এখন কেন কপালের মধ্যে দেখছি?

উ: বােধ হয় মা তােমার মন ঊর্দ্ধ চৈতন্যের দিকে বিশেষভাবে খুলতে চান বলে কপালে তার স্থান করেছেন ৷


ন: মা, এখন দেখছি আমার গলায় একটি সাদা পদ্মের মালা কে পরিয়ে দিয়েছে ৷ আমার এখন এত আনন্দ কেন হয়েছে জানি না ৷

উ: It is very good. তারঅর্থ physical mindএমায়ের চেতনার আলােকের স্থাপন ৷


[স্বপ্নে সাধিকা দেখেছে যে শ্রীমা তাকে কঠোরভাবে তিরস্কার করছেন ৷ কিন্তু সাধিকার বিশ্বাস যে শ্রীমার রূপ ধরে কোন বিরােধী শক্তি তাকে বিচলিত ও ব্যস্ত করছে ৷]

উ: এই সব মিথ্যা স্বপ্ন আসে প্রাণের অবচেতনা হতে – জাগ্রত অবস্থায় আর না পেরে ঘুমে অবচেতন অবস্থায় মিথ্যা দেখিয়ে যদি বিচলিত করে, ভালাে অবস্থা নষ্ট করতে পারে, এই চেষ্টা বিরুদ্ধ শক্তি কচ্ছে ৷ এই রকম স্বপ্নে কোন আস্থা স্থাপন করবে না, জেগে ঝেড়ে ফেলে দেবে ৷


এই sex-difficulty আশ্রমে অধিকাংশ সাধকদের প্রধান বাধা ৷ একমাত্র মায়ের শক্তি তাহা অপসারণ করতে পারে – নিজেকে খুলে রাখ সে শক্তির কাছে আর সমস্ত মন প্রাণে তার অপনােদনের জন্য aspiration কর ৷


এত দুর্বলতা হয়েছে না খেয়ে না ঘুমিয়ে ৷ এই মত [না] খাওয়ার ইচ্ছা তাড়িয়ে দিতে হবে – জোর করে খেতে হবে আর ক্রমে খাওয়া বাড়িয়ে দিতে হবে, যতদিন আগেকার মত না হয় ৷ ব্যথা ইত্যাদি সব দুর্বলতার জন্যে হয়েছে ৷ ভাল খেলে ঘুমও হয় ৷ ...আসল কথা তুমি রােগ হলে বড় বেশী চঞ্চল হও, সেই জন্য এই সব হয় ৷ শান্ত হয়ে থাকলে অল্পেতে ও শীঘ্র সেরে যায় ৷ তারপর ঔষধ খেতে চাও না, সে আর একটা মুস্কিল – ঔষধ খেলে শীঘ্র সেরে যায় ৷ অথবা ঔষধ যদি না খাও তাহলে খুব শান্ত সচেতন হয়ে থাকতে হয়, তাহলেও শীঘ্র সারবার সম্ভাবনা হয় ৷ যাই হৌক এখন খেলে ঘুমােলে শান্ত হয়ে বিশ্রাম করলে শরীরের ভালাে অবস্থা শীঘ্র ফিরে আসবে ৷

এই সাধনায় প্রাণ শরীরকে তুচ্ছ করা, ফেলে দিতে চাওয়া মস্ত একটী ভুল ৷ এ ত প্রাণহীন অশরীরী যােগসাধনা নয় ৷ প্রাণ শরীর মায়ের যন্ত্র, বাসস্থান, মন্দির ৷ পরিষ্কার করে রাখতে হয়, সবল সজাগ করে রাখতে হয় ৷ খাওয়া, ঘুম ইত্যাদি neglect করতে নাই, যাতে শরীর ভাল থাকে তাই করতে হবে ৷ এই কথা আর ভুলে যেও না, শরীর হচ্ছে সাধনার ধন ৷ তাহাকে সম্মান করতে হবে, ভালাে অবস্থায় রাখতে হবে ৷


ন: মা, আমি দূরে থেকে আর কোন কিছু অনুভব করতে দেখতে চাই না ৷ মার শিশু কেন মার কাছ থেকে দূরত্ব অনুভব করবে?

উ: সে কথা নিয়ে চিন্তা কর না – ভিতরেই সব স্থাপন কর, বাহিরটার সব পরে হবে ৷


ন: মা, এখন আমি মাঝে মাঝে সাধারণ চেতনায় ও আমােদে আহ্লাদে পড়ে ভুল করি, সাংসারিক বিষয় চিন্তা করি ও আলােচনা করি ৷

উ: মায়ের চৈতন্য যত তােমার মধ্যে স্থান পেয়ে সমস্ত আধার দখল করে ততই ওগুলাে বহিষ্কৃত বা রূপান্তরিত হবে ৷ ততদিন স্থির ধীর ভাবে সাধনা করে চল ৷


ন: মা, চিঠি লিখতে বসলে কত মিথ্যা জল্পনা কল্পনা বাসনা আসছে...

উ: বাধাকে নিজের না ভেবে স্বতন্ত্র হয়ে তাকে দেখবে আর আমার নয় বলে reject করবে ৷ তা হলে অতিক্রম করা বেশী সহজ হয় ৷


ন: মা, আমার মনের মধ্যে এই ভাব আসছে যে তুমি আমার উপর বিরক্ত ও অসন্তুষ্ট, সে জন্য তুমি আমাকে দেখে হাসছ না, চেয়েও দেখছ না ৷ আরও মনে হচ্ছে যে আমি খুব খারাপ, তােমার যােগের অনুপযুক্ত ৷

উ: এ সব হচ্ছে বাহিরের প্রাণপ্রকৃতির suggestion তােমাকে নিরাশায় ফেলবার জন্য ও বাধা সৃষ্টি করার জন্য – এই সব কল্পনাকে স্থান দিতে নাই ৷


ন: হঠাৎ দৈববাণীর মত কে আমাকে বলল, “তােমার এই বাধা শেষ বাধা, একে জয় করতে পারলে আর নয়, তােমার স্থূল চেতনাকে পরিবর্তন ও রূপান্তর করবার জন্য বাধা এসেছে ৷ সবকিছু রূপান্তর হয়ে মাতৃময় হয়ে থাকতে হবে ৷” এই সব কি সত্য, মা?

উ: যে দিন psychic সব সময় জাগ্রত থাকবে আর উপরেও থাকতে পারবে, সে দিন এই বাণী সফল হতে পারে ৷ এখন তারই জন্য প্রস্তুত হচ্ছ ৷


ধ্যান করবার চেষ্টার দরকার নাই – আপনি যা হয় তাই যথেষ্ট ৷


ন: মা, কে আমাকে যেন বলল, “তােমার আর কিছু করবার দরকার নাই, কোন দিকে মন দিতে বা দেখতে হবে না ৷ শুধু নিজেকে মার কাছে নিঃশেষে দিয়ে দাও আর মাকে সব সময় ডেকে চল ৷ মা ও মার শক্তি সব করে নেবেন ৷”

উ: এই কথা সত্য ৷Psychicএরই কথা ৷ যেখানে মায়ের বিরুদ্ধে বা মায়ের কৃত ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সাধকদের অহংকার উঠবে, সেখানে সংঘর্ষ হবেই – তার মধ্যে যেয়াে না, মায়ের শক্তি যা করবে তাই হবে ৷


ন: কেমন করে ও কখন তােমার রাজ্য বহিঃসত্তায় স্থাপিত হবে?

উ: কখন হবে তা এখনই বলা যায় না – কিন্তু ভেতরের চৈতন্য মাময় হলে, তারই বলে বহিঃপ্রকৃতিও বদলানাে হবে, ইহাই বলা যায় ৷


আমি ত তােমাকে বার বার বলেছি যে তােমার যেমন স্বভাব ও বাধা, প্রায় সকলের সেরূপ মানুষ-স্বভাব ও বাধা – এদিক ওদিক difficulties থাকতে পারে সাধকদের মধ্যে, কিন্তু আসলে সকলেই মানুষ, বহিঃপ্রকৃতি এখনও অশুদ্ধ ও অসিদ্ধ ৷


ন: একটি কিসের মালা আমার গলায় ঝুলছে, আর তা হতে তােমার আলাে বার হয়ে তােমার শিশুর সব আলােকিত ও তােমাময় করছে ৷

উ: গলায় অর্থাৎ মনবুদ্ধির বহির্গামী অংশে (physical mind), এখানে যে কাজ হচ্ছে ও কাজের ফল হচ্ছে তা বােঝা যাচ্ছে ৷


দুৰ্বল যদি বােধ হয়, আস্তে আস্তে মায়ের শক্তিকে শরীরে ডেকে আন ৷ – বল আসবে ৷


ন: মা, তােমার চেয়ে মানুষের কথা আমার বেশী মনে হয় ৷ সংসারের দিকে বারবার মন যেতে চাচ্ছে ৷ আমার প্রকৃতি খুব চঞ্চল, unconscious ৷মনের প্রাণের চেতনার মধ্যে অসংখ্য অদিব্য জিনিষ ভেসে উঠছে ৷

উ: তুমি তােমার শান্ত সাধনার গতি রাখতে পার নি বলে আর বাধার জন্যে উতলা হয়ে অশান্তি ও চঞ্চলতাকে স্থান দিয়েছিলে বলে, এই সব বাহিরের লােকে যে বাহিরের atmosphere এখানে আনায় আশ্রমের atmosphereএ একটা কোলাহল ও confusion এসেছিল, তার প্রভাব তােমার উপর পড়েছে ৷ স্থির হয়ে যাও, অশান্তিকে স্থান না দিয়ে দৃঢ়ভাবে মাকে ডেকে ডেকে সেই আগেকার ভাল অবস্থা ফিরিয়ে আন ৷


ন: মা, আজ দুপুরবেলা দেখি আমাকে অন্ধকার এসে আবৃত করতে চাইছিল, নীচের দিকে কিসে যেন টানছিল, আর এরই মধ্যে দেখলাম উপর হতে শান্তি আর আলাে নামছিল ৷ প্রথমে ভয় পেলেও দৃঢ়ভাবে বললাম যে আমার মধ্যে মা আছেন, আমাকে এরা কিছুই করতে পারবে না ৷ কিছু পরে দেখলাম সব চলে গেছে ৷

উ: হ্যা, এই রকমই করতে হয়, দৃঢ় হয়ে থাকতে হয় – তা হলে নিম্নপ্রকৃতির আক্রমণ সহজে এড়ান যায় ৷


ন: মা, আমি কেন এখনও কাজ করতে করতে, পড়তে গিয়ে তােমাকে খানিকক্ষণের জন্য ভুলে যাই?

উ: পড়ার সময়, কাজ করার সময় মাকে স্মরণ করা সহজ নয় – মন ৷ কাজ বা পড়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে ভুলে যায় ৷ চেষ্টা করতে করতে স্মরণ করার অভ্যাস হয়ে যায় ৷


ন: মাঝে মাঝে শরীর যখন শান্তভাবে বিশ্রাম করে, দেখি ও অনুভব করি সত্তার সমস্ত অংশ তােমাকে সমর্পিত হচ্ছে এবং সুন্দরভাবে সবকিছু তােমাময় হয়ে উঠছে ৷ জোর করে নিজেকে বাহিরের দিকে ও কাজের দিকে নিয়ে গেলে এই সুন্দর অবস্থা কেমন যেন নষ্ট হয়ে যায় ৷

উ: চেতনার খুব উন্নতির লক্ষণ – শেষে কাজের সময়ে এই মাময় চেতনা সম্পূর্ণরূপে থাকে, কিন্তু এখন জোর [করে] কাজের দিকে turn করা দরকার নাই ৷


ন: বর্তমানে আমার ঘুম যেন শান্ত আলােকিত এবং সচেতন হয়েছে ৷ মনে হয় যেন আমি আলাে আর শান্তির মধ্যে ঘুমােচ্ছি ৷

উ: এই ঘুমের অবস্থা বড়ই ভাল ৷ ঘুম এইরূপই সচেতন হওয়া চাই ৷ এই সকল অনুভূতি বেশ – দিন দিন সাধনার উন্নতি হচ্ছে ৷


ন: মা, মাঝে মাঝে তােমার ভাব দেখে মনে হয় তুমি আমাকে দেখে হাসনি কারণ আমার মধ্যে কিছু উন্নতি হয় নি ৷ আমার ভিতরে হয়ত সব খারাপ জিনিস আছে ৷

উ: এটাই আমি বারণ করেছিলাম কারণ এই হচ্ছে মনের কল্পনা ৷ প্রথম কথা, সাধকরা কেবলই ভুল দেখে মায়ের সম্বন্ধে – দ্বিতীয় কথা, সাধকদের ভাল অবস্থা বা খারাপ অবস্থার সঙ্গে মায়ের হাসি বা গম্ভীর হওয়ার কোন সম্বন্ধ নাই ৷ তারপর এই সব কল্পনার মধ্যে প্রাণের দাবী মেশা আছে ৷ সেজন্য নিরাশা কান্নাকাটি ইত্যাদি আসে ওসব নিয়ে ৷ সেই জন্য এই সব কল্পনা বা নিরর্থক অনুমান করতে নাই ৷


ন: আমার ভিতরে সব সময় যেন একটি অগ্নি জ্বলছে ও বেদনার মত কি হচ্ছে, আর আমার কিছু ভাল লাগছে না ৷

উ: এই রকম জ্বালা ও ভাল না লাগা অশান্ত প্রাণের লক্ষণ, একে আশ্রয় দিতে নাই ৷


Sex impulse মনুষ্য স্বভাবের একটী প্রবল অংশ সেজন্য বার বার আসে ৷ কোন রকম সহি না দিয়ে (মনের কল্পনায় ইত্যাদি) অবিচলিত হয়ে এ আর আমার নয় বলে প্রত্যাখ্যান করলে, শেষে তার জোর আর থাকবে না, এলেও আর চেতনাকে স্পর্শ করতে পারবে না, তারপর তার আসাও বন্ধ হবে ৷


তােমাকে বলেছি একবার, মানুষের মধ্যে এক নয়, অনেক ব্যক্তি আছে ৷ many persons in one being – সকলেই বিভিন্ন ৷ তবে central being যদি সাধনা করে স্থিরভাবে, সকলে শেষে মায়ের বশে আসে ৷


যেমন দৃশ্য তেমনই লেখা দেখা যায় ধ্যানে – এমনকি খােলা চোখ দিয়ে দেখা যায় ৷ ইহাকে লিপি বা আকাশলিপি বলে ৷


ন: মা, তােমার নিকট যাহা দরকার মনে হয় তা লিখতে ইচ্ছা হয় ৷ কিন্তু তুমি দিলে তা নির্ভয়ে গ্রহণ করতে পারি না ৷ অথচ না দিলে দুঃখ হয় ৷

উ: যদি না দিলে দুঃখ করে, তাতে প্রমাণ হয় যে চাওয়ার মধ্যে বাসনা ছিল ৷ বাসনাশূন্য হতে হয় সাধককে ৷


বাধা যতই হৌক, সাধনা নষ্ট হতে পারে না – এখানে হৌক বা অন্যত্র হৌক সাধনা করতে গেলেই বাধা উঠে কারণ প্রকৃতির রূপান্তর করতে হয়, সে রূপান্তরের চেষ্টার ফলে সব উঠে দেখা দেয় পুরাতন প্রকৃতির যত জিনিস, সাধক তাতে ভীত হয় না, মায়ের শক্তির সাহায্যে সব রূপান্তরিত করে দেয় ৷


ন: দেখছি যে উপর হতে খুব মধুময় গাঢ়তম শান্তি আধারের একটী স্তরে নামছে ৷

উ: এই শান্তিকে সর্বত্র নামাতে হয় – যেন সমস্ত শরীর চিরশান্তিতে ভরে যায় ৷


ন: ... মাথার উপর দেখি একটি আলােকময় চক্রের মত কি ঘুরতে থাকে, মা ৷ ইহা কি?

উ: আলােকময় চক্র ঘােরার অর্থ উপরের আলাের শক্তি কাজ কচ্ছে মনের উপরে ৷


পাঁচ বৎসর ত কিছুই নয় – বড় বড় যােগী ত ওর চেয়ে খুব বেশী সময় চেষ্টা করে ভগবানকেও পান নাই, রূপান্তরও পান নাই – এর জন্য চিৎকার করা ও যােগসাধনা ছেড়ে দিয়ে চলে যাব বলা এমন দাবী ও অহংকার করা উচিত নয় ৷ শান্ত হয়ে ধৈৰ্য্য ধরে সাধনা কর – যদি বিশেষ কোন গুরুতর স্থলন হয়, সেটা ফুল্লভাবে মাকে বলে দাও আর সাহায্য চেয়ে নাও ৷ সাধারণ বাধা ত সকলেরই আছে, তার জন্য ভিতরে ভিতরে মাকে ডেকে থাক, শেষে ফল হবে ৷ কিন্তু এ সব নিরাশার কথা ও কিছু হল না, কিছু হল না ইত্যাদি বুলি ছেড়ে দাও ৷


এ ঔষধ খেয়ে কাহারও কখন বমি হয় নি – তােমার nervous mindএর কল্পনা বড় প্রবল বলে বােধ হয় শরীরের উপর এই ফল হয়েছে ৷ তবে যদি ঔষধের উপর এত ঘৃণা থাকে, খেয়ে কোন লাভ নাই ৷ ওমনই যা হয় forceর দ্বারা – শরীরকে খুলতে হবে Forceর কাছে ৷


ন: মা, আমি কাপড় বড় বেশী তাড়াতাড়ি ছিড়ে ফেলি ৷ ছােটবেলাতেও এরূপ হত, সেজন্য আমার মা-বাবা খুব বিরক্ত হতেন ৷

উ: ইহা, শরীরচেতনা শান্ত স্থির হয়ে গেলে, শুধরে যাবার কথা ৷


ন: মা, আমি মশারী ছাড়া আনন্দে ঘুমাতে পারি, আমাকে মশা কামড়ায় না ৷আমি আর যা অদরকারী তা ব্যবহার করব না, তােমার শ্রীচরণে আমার মশারীটা আর দুইখানা ক্ষুদ্র জিনিষ অর্পণ করলাম ৷

উ: এগুলাে কেন দিয়েছ? মায়ের দরকার নাই, তােমার আছে ৷ মশা গরমের সময় তত কামড়ায় না – কিন্তু বর্ষার পরে আবার আসবে ৷ মা এ সব ফিরিযে দিচ্ছেন, মায়ের দান বলে গ্রহণ কর ৷ মাকে কিছু দিতে হলে নিজেকে দাও, মা সানন্দে গ্রহণ করবেন ৷


Very good. অশুদ্ধ যা আছে, শান্ত হয়ে মায়ের শক্তির আগুনে দিয়ে দাও ৷ উপরের সব আধারে নামুক – শেষে নীচের কিছুর জন্য জায়গা আর থাকবে না ৷


ন: কেন এত নেমে গিয়েছিলাম? মনে হয় সমস্ত কিছুকে তােমার শ্রীচরণে সমর্পণ করতে যাতে তারা তােমার জগৎ হতে সমূলে ধ্বংস হয় ৷ হে ভগবান, ইহা কি কল্পনা?

উ: ইহা কল্পনা নয় ৷ নিম্নে যাওয়ার উদ্দেশ্যই এই, নীচে যাসব আছে সমর্পণ করা, আলােকিত রূপান্তরিত করা ৷


ন: মাঝে মাঝে মাথায় কেমন কেমন অনুভব হচ্ছে: কোন সময় অবশ এবং শান্ত, আর কোন সময় শিন শিন্ করে এবং তা হতে কি যেন ঊর্ধের দিকে উঠে যায়, আর কোন সময় মনে হয় উপর হতে কি নেমে খুলছে ৷

উ: উপর থেকে শক্তি মাথায় নামায় কখন কখন এইরূপ অনুভব হয় ৷


ন: খুব উর্দ্ধে একটি তরঙ্গহীন প্রশান্ত মহাসাগর দেখছি ৷ সে সাগরটি যেন অনন্তের সাথে যুক্ত হয়ে এক খানা স্বর্ণ তরণীকে বুকে করে নিম্নের দিকে ধীরে ধীরে নেমে আসছে ৷

উ: ঊর্ধচৈতন্যের স্রোত নামবার লক্ষণ ৷


ন: উপর হতে সূর্যের মত আর নীল আলাের মত দুই আলাে গােল হয়ে শুধু হৃদয়ের মধ্যে নামছে ৷

উ: অর্থ এই, সত্যের আলাে ও ঊর্ধ্বমনের আলাে আবার নামছে ৷


ন: মা, আমার চারিদিকে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাধা দেখছি ৷ মনে হয় আমি সব বাধাকে খুঁজে বার করে দৃঢ় হয়ে সম্পূর্ণরূপে তাদের জয় করতে চাচ্ছি বলে বাধা এমনভাবে দেখা দিচ্ছে ৷ আমার অনুভূতি কি সত্য?

উ: তােমার অনুভূতি সত্য ৷ বাধাকে ভয় করাে না – সব দেখে সব জেনে সরিয়ে দিতে হয়, সে জন্যে দেখা দিচ্ছে ৷


শরীরচেতনার বহিৰ্ম্মনই সাধনার এই stageএ বিশেষ বাধা দেয়, সে বড়ই obstinate, ছাড়ে না – সাধককে তার চেয়েও obstinate হতে হয়, ধীর স্থির, মাকে ভিতরে পাবার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ৷ শেষে হাজার obstinate হৌক, এই মন ৷ আর পারবে না, পথে আসবেই ৷


ন: শুনলাম, কে আমাকে বলছে, “তুমি, তােমার ভিতরে মনে প্রাণে দেহে যেসব বাধা আছে তাদেরকে রূপান্তরিত করে অথবা দূর করে তবে নূতন জন্ম নিয়ে মার কাছে যেতে পারবে ৷” মা, ইহা কি সত্য?

উ: এ সব কথা সত্য, সকল সাধকের পক্ষে খাটে ৷ তবে এ সব বাধার মধ্যে, দীর্ঘ পরিবর্তনের ক্রমের মধ্যে মা যে সর্বদা কাছে রয়েছে, সাহায্য করছে – এ কথা মনে রাখতে হবে, তা হলে শান্ত মনে নিরাপদে পথে চলা সহজ হবে ৷


ন: অনুভব করছি যে মন প্রাণ চেতনা ভিতরে না থেকে বাহিরের দিকে চলে যাচ্ছে ৷

উ: ইহা সকলেরই হয় ৷ অনেক এগিয়ে গেলে সাধনার পথে, তার পরে ভিতর বাহির এক হয়ে যায়, তখন আর হয় না ৷


ন: মাঝে মাঝে যখন করুণাময়ী মাকে অনুভব করি ও ডাকি, তখন প্রবল বেগে কান্না আসে আর তার সাথে সাথে হৃদয়ের গভীরতম প্রদেশে একটি মধুময় ও শান্তিময় জিনিষ অনুভব করি ৷

উ: এইরকম কান্না প্রায়ই psychic being থেকে আসে – যে চিন্তা আসে তার সঙ্গে, সে psychic beingএর চিন্তা ৷


স্থির ভাবে সাধনা করে চল – বাধাগুলাে সময়ে খসে যাবে ৷


ন: মা, আমি এখন কেবল শুষ্ক মরুভূমির মধ্যে পড়ে রয়েছি ৷ ভিতরে তােমাদের জন্য কিছু নাই বলে মনে হচ্ছে ৷ এত নিম্নে কেন পড়ে গেলাম?

উ: সাধনায় চেতনা ওঠা নামা অনিবাৰ্য – যখন নামে, তখন বিচলিত না হয়ে ধৈর্য্য ধরে মায়ের আলাে শক্তি সে শুষ্ক অংশে ডেকে আনতে হয় – ইহাই হচ্ছে right attitude ও উৎকৃষ্ট উপায় ৷


ন: মা, আমার প্রাণজগতের একটি শক্তিকে উপর হতে আর একটি শক্তি এসে তােমাদের শ্রীচরণে বলি দিল ৷ কিছুক্ষণ পরে এই বলির রক্তের মধ্যে দেখি পদ্মফুল ফুটল ৷

উ: অর্থ – নিম্ন প্রকৃতির একটী শক্তির বিনাশ হয়ে প্রাণের এক ভাগে সত্য চেতনা খুলে গেল ৷


এখন বােঝা যায় যে তােমার অসুখ nervous, কারণ এই সব sensation nervous ছাড়া কিছুই নয় ৷ এই বমির suggestion তাড়িয়ে দাও – যখন এ সব sensation আসে তখন শান্ত হয়ে থাক, মাকে ডেকে যাও শ্রদ্ধার সহিত ৷ Suggestionএর জোর কমে গেলেই অসুখটী সেরে যাবে ৷


যখন কোন বাধাকে বের করবার চেষ্টা চলছে, ও রকমই হয় – একদিন ৷ সব মুক্ত হয়, বােধ হয় যেন সব চলে গেছে, পরদিন আবার সে বাধা দেখা দেয় ৷Persevere করলে শেষে বাধাটী দুর্বল হয়ে আর আসে না, যদি বা আসে তার কোন জোর থাকে না ৷


ন: মা, বর্তমানে আমি অন্য জিনিসের চেয়ে বাণী কেন বেশী শুনতে পাচ্ছি, এবং লিপি কেন বেশী দেখতে পাচ্ছি?

উ: সাধনার গতির বেগ বাড়তে বাড়তে এই সব আসে ৷ তবে খুব সাবধান হয়ে লিপি ও বাণীকে দেখে লও ও শুনে লও – কারণ এগুলাে সত্য ও উপকারী হতে পারে, মিথ্যা ও বিপজ্জনক হতে পারে ৷


ন: যখন ক, খ ইত্যাদির সঙ্গে কথা বলি, শরীর দুর্বল লাগে, ভিতরে অশান্তি অস্বস্তি বােধ হয়, মাথা ধরে, কিছু ভাল লাগে না ৷ কিন্তু দ, স ইত্যাদির সঙ্গে কথা বললে কখনও এরকম হয় না ৷ কেন, মা?

উ: যখন মেশা হয় ও কথা বলা হয়, তখন সে লােকের চেতনার vibra-tions তােমার উপর পড়ে ৷ দুজনে মেলামেশা কথাবার্তা বেশী করলেই সেই রকম হয়, কিন্তু সাধারণ অবস্থায় কেহ কিছু বােধ করে না, conscious effectও হয় না বা যদি হয় তা লােকে টের পায় না যে এর জন্য হয়েছে ৷ কিন্তু যখন সাধনা করে চেতনা সজাগ হয় ও sensitive হয়, তখন feel করা যায় আর এরকম ফলও হয় ৷ যাদের চেতনার সঙ্গে তােমার চেতনার মিল হয়, তাদের সঙ্গে করলে কিছু হয় না, কিন্তু যেখানে চেতনার মিল নাই অথবা সে লােকের মধ্যে ৷ খারাপ ভাব থাকে তােমার উপর তখন এরকম effect হতে পারে ৷


এ হচ্ছে পুরান vital প্রকৃতি যে একটা দাবীর ভাব নিয়ে ওঠে, কই আমি যা চাই তা আমি পাই না এই ভাব ৷ এই ভাব থেকে যত কল্পনা ওঠে – মা আমাকে দূরে রাখে, ভালবাসে না ইত্যাদি ৷ এ যখন ওঠে, তখন বুঝতে হবে, প্রত্যাখ্যান করতে হবে, psychic এ সব চায় না ৷ শুধু মাকে ভালবাসতে চায়, জানে যে মাকে ভালবাসা শ্রদ্ধা ভক্তি দিলে সব হয় ৷ গভীরে psychicএর মধ্য থাকতে হয় সব সময় ৷


ন: আমি প্রায় সব সময়ই আমার সামনে একটি সােজা পথ দেখতে পাই ৷ কে যেন ভিতর হতে বলে, “সব কিছু দূরে ফেলে, কিছুর দিকে লক্ষ্য না করে শুধু মা মা বলে এগিয়ে যাও – মা নিয়ে যাবেন ৷”

উ: এটাই সত্য পথ – সে পথে বাধা ইত্যাদি এলে তাতে disturbed হয় না, মাই এই সব শুধরিয়ে নেবেন, আমার ভয় বা দুঃখ করবার কিছুই নাই এই বলে সােজা পথে এগিয়ে যায় ৷


কি করা যায়, “স’র বৃদ্ধ বয়স, স্বভাবের পরিবর্তন সহজে হয় না ৷ তার সঙ্গে patient হয়ে যতদূর possible কাজ করতে হয় ৷ যে দিন psychic at-mosphere সর্বত্র স্থাপিত হবে, সে দিনই এই সব আর হবে না ৷


তুমি কি green কলা খেয়েছিলে? যাদের পিত্ত আছে, তাদের পক্ষে এগুলাে ভাল নয় ৷ খেলে বমির ভাব হয় ৷ এইগুলাে খেতে নাই ৷

আজকে কি হয়, তা দেখে আমাকে জানাও তারপরে বলব খাবে বা বন্ধ করতে হবে কি বদলাতে হবে ৷


যে রকমই হয় ধ্যানে কর্মে বা ওমনি বসলে মায়ের চৈতন্য মায়ের শক্তি আধারে নামা ও কাজ করাই আসল – যে ভাবে, যে উপায়েই হৌক ৷


ন: এখানে দেখছি সাধক সাধিকাদের মধ্যে হিংসা ও পরের সম্বন্ধে নিন্দা করা স্বভাব খুব আছে ৷

উ: তুমি যা বলছ তা সত্য – মানুষের মন প্রায় এই সব দোষে পূর্ণ – সাধকরা এখনও এইসব ক্ষুদ্রতা মন প্রাণ থেকে ঝেড়ে ফেলতে চায় না, ইহাতে মায়ের কাজের অনেক বিঘ্ন আসে ৷ তবে তুমি এই সব দেখে বিচলিত হয়াে না – নিজেকে এই সব... থেকে স্বতন্ত্র রেখে সকলের কল্যাণেচ্ছা করে নিজের সাধনা শান্ত মনে কর ৷


হ্রদের অর্থ – চেতনায় এমন একটা স্থায়ী স্রোত যাতে উদ্ধৃ স্তর ও physicalএর সম্বন্ধ হয় – এই রকম সম্বন্ধ থাকলে ঊর্ধ্ব স্তরের আলাে physicalএ নামতে পারে ৷


যদি তাতে ভিতরের চৈতন্য হারানাে না যায়, তা হলে বিশেষ ক্ষতি নাই ৷ যা কর, তার মধ্যে সচেতন থেকে মায়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা চাই, ইহাই আসল ৷


তুমি আমার কথা ভুল বুঝেছ – আমি লিখেছিলাম দুইরকম অহংকার আছে ৷ – একটী হচ্ছে রাজসিক অহংকার যে মনে করে আমি শক্তিমান আমার দ্বারাই সব হচ্ছে – আর একটী আছে ঠিক উল্টো – তামসিক অহংকার যে মনে করে আমি সকলের চেয়ে খারাপ ইত্যাদি যেমন তুমি বার বার বলছ “আমার মত খারাপ আর কেউ নাই আশ্রমে ৷” তার উপর যদি বল “আমার জন্য সব বন্ধ হয়েছে আমারই বাধায় আশ্রমের এই অবস্থা ৷ তবে এইটী যে শেষােক্ত তামসিক অহংকার ছাড়া আর কি হতে পারে?


আগে যে অবস্থা ছিল, যা পেয়েছিলে, সে সব নষ্ট হয় নি, নষ্ট হবারও নয়, কিন্তু তােমার অশান্তিতে ও অসাবধানতায় ঢাকা পড়েছিল ৷ শান্ত ও সচেতন হলেই সব ফিরে আসে ৷ তাহাই এখন হচ্ছে ৷ এখন আগেকার মতন সাধনা কর - আবার দ্রুত উন্নতি হবে ৷


যখন ঊৰ্ধ চেতনাময় অবস্থার বদলে নিম্ন চেতনার অবস্থা আসে – এ রকম ত সকল সাধকের হয় – তখন নিজেকে quiet রেখে মায়ের শক্তিকে ডাকতে হয় আর নিজেকে খুলে দিতে হয় যতক্ষণ ঊৰ্ধ অবস্থা ফিরে না আসে ৷ নিম্ন অবস্থা স্থায়ী হতে পারে না, ভাল অবস্থা ফিরবেই ৷ এ রকম করলে প্রত্যেক বার নিম্ন প্রকৃতির কতকটা উন্নতি হয়, এক অংশ – যা আগে খােলা ছিল না – খুলে যায় – শেষে সব খুলে থাকবে আর সব উৰ্ধ চেতনাময় অবস্থায় স্থায়ীভাবে থাকবে ৷


মা তােমাকে ছেড়ে দেন নাই, ছাড়বেনও না ৷ চেতনা শরীরচেতনায় নেমেছে ৷ বলে এ বাধা দাড়িয়ে গিয়েছে, অনেকের হয়েছে ৷ এ ত চিরস্থায়ী নয় – ধৈৰ্য্য রেখে চল বাধার মধ্যেও – ভাল অবস্থা আসবে ৷


‘ত’র সম্বন্ধে আমি তােমাকে প্রথম থেকেই সতর্ক করেছিলাম আর এ সবেতে প্রবেশ না করে মায়ের কাজ মায়েরই জন্য করতে বলেছিলাম, তুমিও তাহাতে সম্মত হয়েছিলে ৷ তা ছাড়া এই সব সহ্য না করিতে শিখলে সাধকের উচিত সমতা কোত্থেকে আসবে? অপ্রিয় ব্যবহার, অপ্রিয় কথা, অপ্রিয় ঘটনা এই সকলই সাধককে ভগবানের একনিষ্ঠ ও জগতের সব ঘটনায় অবিচল হবার oppor-tunity করে দেয় ৷ আর সব যা লিখেছ, তার উপায় কান্না নয়, উপায় নিজের psychic beingএ বাস করে মায়ের শক্তির উপর নির্ভর করে অগ্রসর হওয়া, যাতে সব বাধা, সব অপূর্ণতা quietly কমে যাবে, বিনষ্ট হয়ে যাবে ৷ তােমার ভাল অবস্থা ফিরেছে শুনে সুখী হলাম, সে অবস্থা যেন অচল হয়ে থাকুক ৷


Vitalএর গােলমাল যখন আর হবে না, physicalএ যখন শান্তি পুরােভাবে সব সময় থাকবে, এই সব শরীরের গলদ আর থাকবে না ৷


ন: আজ কদিন নিম্ন প্রকৃতি হতে অসংখ্য বাধা এসে গ্রাস ও অধিকার করতে চাইছে ৷ কিন্তু এই সব কিছুর মধ্যেও আমার হৃদয়ে তােমার স্মৃতি ও তােমার কাছে আত্মসমর্পণের ইচ্ছা এবং তােমার জন্য প্রেম অনুভব করছি ৷

উ: বাধার মধ্যেও [যদি] সেই ভাব সেই স্মৃতি রাখতে পার, তা হলে লেশমাত্র ভাবনার কারণ নাই, তাতেই শেষে সব বাধাকে অতিক্রম করে মায়ের চৈতন্যের মধ্যে স্থায়ীভাবে নিবাস করবে ৷


এ সব ত প্রাণের তামসিক কল্পনা, নিম্ন প্রকৃতির suggestion ৷বিরুদ্ধ শক্তিও এ সব অযােগ্যতার মরণের idea suggest করে নিরাশা ও দুর্বলতা আনবার জন্য ৷ এই সব suggestionকে কখন ভিতরে প্রবেশ করতে দিতে নাই ৷


Sex-impulse কি ভাবে উঠছে? সাধারণভাবে না কারও উপর আকর্ষণ ৷ কেন, তাকে আশ্রয় না দিয়ে প্রত্যাখ্যান করে মাকে ডাক, মায়ের শক্তিকে আধারে ডেকে নামিয়ে দাও – আবার সত্য চৈতন্য এসে শরীরে স্থাপিত হবে ৷


ন: ...মাথার উপর হতে কিছুর অবতরণ ও চাপ অনুভব করি, তখন মাথা কামড়ায় কেন?

উ: সে মাথা কামড়ান গ্রাহ্য করতে নেই ৷ উপরের জিনিষ নামতে নামতে সেরে যায় ৷


ন: মা, গতকাল স্বপ্নে আমার পার্থিব মাকে দেখেছি ৷ সে বলল, “মাকে সম্পূর্ণরূপে নিজেকে দিয়ে সাধনা কর, আমি তােকে আর বাধা দেব না ৷ তুই মাকে পেলে আমি মুক্তি পাব ৷”

উ: এই সব স্বপ্নে পার্থিব মা আসে physical natureএর প্রতীক হয়ে ৷ যে এই সব কথা বলছিল, সে ছিল তােমার পার্থিব মা নয়, পার্থিব মার রূপ গ্রহণ করে পার্থিব প্রকৃতি ৷


ন: আজ হতে আমি ধৈৰ্য্যহীন অশান্ত অধীর হব না ও বাধা দেখে ভয় করব ... এখন যতই বাধা আসুক শান্তভাবে গভীর বিশ্বাসে তােমার দিকে আসব ও তাদেরকে তােমার পায়ে দিয়ে দেব ৷

উ: ইহাই right attitude ৷সৰ্ব্বদা এই attitude রাখতে হয়, তাহলে মায়ের শক্তি ভিতরে ভিতরে সহজে কাজ করতে পারবে এই অবচেতনার ক্ষেত্রকে রূপান্তরিত করবার জন্য ৷


ন: মা, আমি তাকে [একটি খুব শান্ত ভাব] অনুভব করছি কিন্তু চোখে দেখছি ৷ না ৷সে অরূপে কেন থাকছে?

উ: শান্তির কাজ প্রায় অরূপেই হয় ৷


ন: আমি মাঝে মাঝে নিজের চেতনা কেন হারিয়ে ফেলি? ইহা খারাপ না ভাল? কোন কিছু করতে করতে দেখি যে চেতনাটা হঠাৎ কোথায় চলে গেছে, আবার আপনা আপনি ফিরে আসে ৷

উ: চেতনা যখন ভিতরে যায় তখন ঐ রকম হয় ৷ খারাপ নয়, তবে কাজের সময় বেশী গভীরে না যাওয়া ভাল ৷


ন: মা, আমার মধ্যে একটি ভাব আছে যে তুমি আমাকে বড় বড় সাধক-সাধিকার মত ভালবাস না, দেখ না, চাও না, ও তােমার করে নিচ্ছ না... ৷

উ: যা দেখছ তা সত্যই ৷ শুধু তােমার নাই, আশ্রমময় এই ভাব রয়েছে, অনেকের সাধনার বিষম বাধা সৃষ্টি কচ্ছে ৷ এর মধ্যে আছে তামসিক অহঙ্কার ও ক্ষুদ্র vitalএর দাবী ৷ এ ভাবকে কখনও স্থান দিয়াে না ৷ যে মাকে কিছু না চেয়ে নিজেকে দেয়, সে মাকে সম্পূর্ণভাবে পায়, মাকে পেলে সবই পাওয়া যায়, ভাগবত চৈতন্য, শান্তি, বিশালতা, ভাগবত জ্ঞান ও প্রেম ইত্যাদি ৷ কিন্তু ক্ষুদ্র দাবী করতে গেলে, শুধু বাধাই সৃষ্টি হয় ৷


ন: দু’তিন দিন যাবৎ আমার মাথাধরা হয়েছে... ৷ মাথার উপর আগের মত বড় একটি কিছু আছে বলে মনে হচ্ছে, আর এখন মাথা হতে সমস্ত শরীরে পৰ্য্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে ৷

উ: হয় ত এই “বড় কিছুর অবতরণে শরীরে একটু difficulty আছে, সেই জন্য এই মাথা ধরা ৷ তা যদি হয় মনকে খুব শান্ত ও wide করে খুলে দিলে সেই difficulty চলে যায় ৷


ইহাই চাই —সমস্ত স্তরে psychic beingএর প্রভাব ও আধিপত্য ৷


এটাও কতবার বলেছি – শান্ত হয়ে ভিতরে থাক – যে সময়ই সত্য চেতনা আসে, এই সব চঞ্চলতা সত্যকে দূর করে, কেবলই মিথ্যা নিরাশা ইত্যাদি আসে ৷ মায়ের উপর নির্ভর করে শান্ত ধীর চিত্তে থাক, বাধা সকলের হয়, বাধা সত্ত্বেও স্থির হয়ে পথে এগুতে হয় ৷


একটা আবরণ এখনও আছে – সম্পূর্ণ শক্তি এখনও নামতে পারে ৷ তাছাড়া অনেক সাধকের আধ ঘুমন্ত অবস্থা – পুরাে জাগতে চায় না ৷


হতাশ হতে নেই ও দুঃখ কান্না করতে নেই ৷ শান্ত হয়ে দেখ এবং স্থির শান্ত হয়ে [দোষ-ত্রুটি শুধরে লও ৷


ন: আজ দেখছি যে উপর হতে একটি চক্র নাভির নীচের অংশে নামছে ৷ উ: অর্থ শক্তির working lower vitalএ নেমে এসেছে ৷


‘ক’র সঙ্গে দেখা হবার ফলে তােমার জাগ্রত মনের উপর নয় কিন্তু অবচেতনায় যে সব পুরােনাে ঘটনার ছাপ রয়েছে – তার উপর স্পর্শ পড়েছিল, যে জন্য রাত্রে এই স্বপ্ন ৷ এই সব অবচেতনার পুরােনাে ছাপ ও স্মৃতি স্বপ্নে প্রায়ই ওঠে, তাতে বিচলিত হবার কোন কারণ নেই ৷ এই সব ছাপ আস্তে আস্তে একেবারে মুছে যাবে – তখন আর এই রকম হবে না ৷


ন: মা, এখন একটু বেশী কথা বললে মাথা ঘােরে এবং মাথা কাপতে থাকে আর আমি শেষে দুৰ্বল ও একটু চঞ্চল হয়ে পড়ি ৷

উ: এই সব না থাকা ভাল – যেমন ভিতরে শান্ত হয়ে থাকা, তেমন শরীরেও সব শান্ত সুখময় অচঞ্চল থাকা চাই ৷Peace in the cells, শরীরের অণু পৰ্য্যন্ত শান্তিপূর্ণ হয়ে যাবে, এই মাথা ঘােরা ইত্যাদি আর থাকবে না ৷


ন: কাজের কথা বলতে বলতে অনেক অনাবশ্যক কথা বলে ফেলি ৷ তারপর দেখি যে এতে আমার ভিতরের শান্ত ও গম্ভীরভাব নষ্ট হয়ে যায় ৷

উ: ভিতরে থেকেই, সেখান হতে সচেতন হয়ে কথা বলা —ইহাই চাই ৷ এ অভ্যাস দৃঢ় হলে আর এ বাধা থাকবে না ৷


ও বাড়ীতে যে একটী disturbance in the atmosphere আছে, তাহা সত্য – কিন্তু বাহির থেকে হৌক বা ভিতর থেকে হৌক সব disturbanceএ ধীর ভাবে দৃঢ়তার সহিত মায়ের উপর নির্ভর করলে কোন Force কিছুই করতে পারবে না ৷


Very good. মায়ের জয় হবেই এই বিশ্বাস সব সময় রেখে শান্ত ধীর ভয়শূন্য হয়ে সাধনা করতে হয় ৷


বাধা আসে মায়ের শক্তি নেমে বাধাকে বিনষ্ট করবে বলে ৷ নিম্ন প্রকৃতিতে নেমে যাও সে প্রকৃতিকে মায়ের আলাে শান্তি শক্তিতে ভরে দিয়ে রূপান্তরিত করবার জন্য ৷


ইহাই ঠিক জ্ঞান - মূলাধার হচ্ছে শরীরচেতনার কেন্দ্র, সেখানে sex impulseএর স্থান, সেখানে মায়ের রাজ্য স্থাপন করতে হবে ৷


ন: ...দেখছি সত্যের, জ্ঞানের, শান্তির, চেতনার, পবিত্রতার সিঁড়ির মত কি নেমে এসেছে; তা দিয়ে মাঝে মাঝে ঊর্ধ্বে যেন উঠে যাই এবং সেখানে অনেক বালিকার সাথে আমার মিলন হয় ৷

উ: যে বালিকাদের কথা লিখেছ তারা মায়ের শক্তি নানা স্তরে ৷ তােমার অভিজ্ঞতাগুলি বেশ ভাল —অবস্থাও ভাল – সাধনা ভাল চলছে – বাধাগুলাে আসে বহিঃপ্রকৃতি থেকে অবস্থা disturb করবার জন্য – গ্রহণ করাে না ৷


দুটী অগ্নি, মনের শান্ত ও প্রাণের তীব্র aspiration উঠে যায় – তার ফলে উর্দ্ধে চৈতন্যের জ্যোতির্ময় আলাে নামে ৷


ন: ...গলা হতে বাম হাত পৰ্য্যন্ত যেন কিছু হয়েছে ও হচ্ছে... feel করেছি ৷ যে এইটুকু অংশ ঝিন্ ঝিম্ করে শান্ত হয়ে অবশ হয়ে যাচ্ছে আর প্রত্যেক লােমকূপের মধ্যে নীল আলােকের মত বিন্দু বিন্দু কি পড়ছে ৷

উ: উর্দ্ধ চৈতন্যই নামছে ৷ গলায় আছে বহির্দর্শী বুদ্ধির কেন্দ্র, বাহু কৰ্ম্মেন্দ্রিয়ের একটী স্থান – গলা কাধ বাহু বুকের উপরি অংশ (হৃদয়ের উপরে) কৰ্ম্মোন্মুখ vital mindএর জায়গা ৷ সেখানে উপরের Force বিস্তার হচ্ছে ৷


সাদা জবা – মায়ের শুদ্ধ শক্তি ৷


ন: মা, সিঁড়ি দিয়ে প্রণাম hallএ নামবার সময় আমি অনুভব করি যে তুমি উপর হতে আমার মধ্যেই নেমে আসছ ৷ আর মাঝে মাঝে অনুভব করি যে তােমার stepএ আমার মধ্যে পদ্মফুল ফুটছে ৷

উ: ইহা সত্য অনুভব ৷ মা তখন তােমার মধ্যে নেমে চেতনা (পদ্ম)কে ফুটিয়ে দেয় ৷


শান্তি নামা ভালই – সমস্ত ভিতরে ও বাহিরে গাঢ় হয়ে নামুক ৷


ন: অহংকার, বাসনা, কামনা, দাবী, হিংসা, গর্ব, আসক্তি, অচৈতন্যতা কোথা হতে আসে? তাদের স্থান কোথায়? মা, এইসব কখন এবং কেমন করে পরিপূর্ণভাবে দূর হবে?

উ: তাদের স্থান ভিতরে কোথাও নাই – বহিঃপ্রকৃতি থেকে আসে ৷ তবে যখন মানুষে স্থান পেয়েছে, তখন তারা প্রাণভূমিকে দখল করে বসে রয়েছে, যেন অতিথি আহত হয়ে বাড়ীকে দখল করে বসে ফেলে ৷ যােগসাধনা দ্বারা আমরা তাদের বাহির করি, তখন বাহিরে রয়ে আবার দখল করবার চেষ্টায় থাকে – যতদিন তারা বিনষ্ট হয় ৷


Physical consciousnessএর পুরাতন অভ্যাস এমন সাধারণ চৈতন্যে নামা সকলের সহজে হয়ে যায় ৷ তার জন্য দুঃখ করাে না, স্থির হয়ে আবার ঊর্ধ্ব চৈতন্যে ফিরে যাও ৷ সে ফিরে যাওয়া এখন আগেকার চেয়ে সহজ হয়েছে ৷

...সকলের বহিঃসত্তায় এইরূপ জন্মলব্ধ অন্ধকারময় অংশ আছে ৷ তা নিজেদের নয়, বংশের ৷ এইটী নূতন করে গড়তে হয় ৷


It is very good – যা দেখেছ বুঝেছ তা সত্য ৷ যে ভিতরে পথ দেখেছ, তাতেই চলতে হবে, যে ভিতরের অবস্থা লক্ষ্য করেছ তাহাই রাখতে হবে ৷ বাহিরের যা তা দেখে নেবে, যা দরকার তাই করে নেবে কিন্তু তাতে মজবে না, যুক্ত হবে ৷ না, বাসনা করবে না ৷ এই অবস্থা যদি কেহ রাখতে পারে, তবেই সে সাধনপথে শীঘ্র এগােয়, বাধা বিঘ্ন ইত্যাদি এলেও তাকে স্পর্শ করতে পারবে না – তার বহিঃপ্রকৃতিও আস্তে আস্তে অন্তর প্রকৃতির সুন্দর অবস্থা পাবে ৷


ন: কেহ আমাকে “ন” বলে চিনতে পারছে না, “ন” বললে সকলে অবাক হয়ে যায় ৷ মা, কালকে এমন স্বপ্নে যেন সারারাত চলে গেছে ৷ সকালে জাগবার অনেকক্ষণ পর পর্যন্ত এর প্রেসার দেহে পৰ্য্যন্ত feel করছিলাম ৷

উ: স্বপ্নের অর্থ ছিল পুরােনাে দেহস্বভাবের মৃত্যু আর দেহচৈতন্যে নবজন্ম লাভ ৷


প্রাণ সমর্পিত হলে আর সব সমর্পণ করার বিশেষ বাধা হয় না ৷


যে সব অমিল হয় ‘ক’র সঙ্গে বা ‘খ’র সঙ্গে সে তাদের মানব প্রকৃতির natural movementএর ফল, psychic পরিবর্তন ছাড়া তার কোন উপায় নাই ৷ এই সবকে ভিতরের একটী শান্ত সমতার ভূমি থেকে দেখে অবিচলিত ভাবে observe করা শিখতে হবে ৷ মানব প্রকৃতি সহজে বদলায় না – ভিতরে যাদের psychic জাগরণ ও অধ্যাত্ম ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে তাদেরও পথে এই প্রকৃতিকে সম্পূর্ণ অতিক্রম করা, রূপান্তরিত করা সহজ নয় ৷ এদের কাছে যারা এখনও ভিতরে কাচা তাহা এখন করা অসম্ভব ৷


মাকে সর্বদা স্মরণ কর, মাকে ডাক, তাহলে বাধা চলে যাবে ৷ বাধাকে ভয় করাে না, বিচলিত হয়াে না – স্থির হয়ে মাকে ডাক ৷


বাধা অনন্ত appear করে বটে, সে appearance সত্য নয়, রাক্ষসী মায়া মাত্র – ঠিক পথে চলতে চলতে শেষে পথ পরিষ্কার হয়ে যায় ৷


Very good – স্থির ভাবে সাধনা করে চল – ক্রমে ক্রমে পুরাতন প্রকৃতির যা কিছু এখনও আছে আস্তে আস্তে চলে যাবে ৷


এই বাধা সকলেরই আছে ৷ প্রতি মুহুর্ত্তে যুক্ত হওয়া সহজে হয় না ৷ ধীরভাবে সাধনা করতে করতে হয়ে যায় ৷


মনের অনেকরকম গতি হয় যাদের কোন সামঞ্জস্য নাই ৷ সাধকেরও হয়, সাধারণ মানুষেরও হয়, সকলেরই হয় তবে —সাধক দেখে ও জানে, সাধারণ মানুষ নিজের ভিতর কি হচ্ছে তা বােঝে না ৷ ভগবানের দিকে সব ফিরাতে ফিরাতে এক মন হয়ে যায় ৷


মায়ের সঙ্গেই যখন ভিতরে সংযােগ হয়েছে তখন আর ভয় নাই ৷ যা পরিবর্তন ৷ করতে হয়, তা মায়ের শক্তিই করে দেবে ৷ ওসব পরিবর্তন করতে সময় লাগে কিন্তু তার জন্য ভাবনা নাই ৷ কেবল মায়ের সঙ্গে সংযুক্ত মায়ের নিকট সমর্পিত হয়ে থাক, আর সব নিশ্চয় হবে ৷


ন: মা, আমি এখন তােমার নীরবতা শান্তি পাচ্ছি, কিন্তু তােমার চেতনা পাচ্ছি ৷ না ৷সব সময় চেষ্টা করি যে কোন অবস্থায় – কাজকর্ম কথাবার্তা সবসময় তােমার সম্বন্ধে conscious হয়ে থাকতে... ৷

উ: প্রথম শান্তি আসে – সমস্ত আধার শান্ত না হলে জ্ঞান আসা কঠিন ৷ শান্তি স্থাপিত হলে মায়ের বিশাল অনন্ত চৈতন্য আসে, তার মধ্যে ব আমিত্ব মগ্ন হয়ে যায়, হ্রাস হয় – শেষে আর চিহ্ন থাকে না ৷ থাকে কেবল মা ও মায়ের সনাতন অংশ ভাগবত আনন্ত্যের মধ্যে ৷


বাধা সহজে সম্পূর্ণ যায় না ৷ খুলতে খুলতে, চেতনা বাড়তে বাড়তে শরীর-চেতনা পৰ্য্যন্ত যখন রূপান্তরিত হয় তখন বাধা সম্পূর্ণ চলে যায় ৷ তার আগে কমে যাবে, বেরিয়ে যাবে, বাহিরে বাহিরে থাকবে, – তুমি বাধায় বিচলিত না হয়ে নিজেকে স্বতন্ত্র করে রাখ ৷ বাধাকে নিজের বলে আর স্বীকার করাে না – তা হলে তার জোর কমে যাবে ৷


প্রাণকে ধ্বংস করতে নাই, প্রাণ ভিন্ন কোন কাজ করা যায় না, জীবনও থাকে না ৷ প্রাণকে রূপান্তর দিতে হয় ৷ ভগবানের যন্ত্র করতে হয় ৷


নিজের ভিতরে শান্তি, মায়ের শক্তি ও আলাে রেখে শান্তভাবে সব কর – তাহলে আর কিছুর দরকার নাই – সব পরিষ্কার হয়ে যাবে ৷


দুরকম শূন্য অবস্থা হয় – একটা physical তামসিক জড় নিশ্চেষ্টতা ভিতরে আর একটা শূন্যতা নিশ্চেষ্টতা হয় ঊৰ্ধ চেতনার বিরাট শান্তি ও আত্মবােধ নামবার আগে ৷ এই দুটোর মধ্যে কোনটী এসেছে তা দেখতে হবে, কারণ দুটোতেই সব থেমে যায়, ভিতরের চেতনা শূন্য হয়ে পড়ে থাকে ৷


যখন শূন্য অবস্থা হয়, তখন শান্ত হয়ে মাকে ডাক ৷ শূন্য অবস্থা সকলেরই হয়, তবে শান্ত শূন্য অবস্থা হলে সাধনার উপকারী হয় – অশান্ত হলে তার ফল হয় না ৷


খারাপ শক্তি ছাড়া কি এমন নীচে টানবে ও দুর্বল ব্যতিব্যস্ত করে ফেলতে পারে? Atmosphereএ এইরূপ শক্তি অনেক ঘুরছে সাধকরা আশ্রয় দেয় বলে ৷ যদি আসে তােমার উপর, মাকে ডেকে প্রত্যাখ্যান করে দাও ৷ কিছু করতে পারবে না, টিকতে পারবে না ৷


ইহা ত মানুষ মাত্রই করে – প্রশংসায় হৃষ্ট, নিন্দায় দুঃখিত হয় – কিছু অদ্ভুত ব্যাপার নয় ৷ তবে সাধকের পক্ষে এই দুর্বলতা অতিক্রম করাই নিতান্ত প্রয়ােজন – স্তুতিনিন্দায় মান অপমানে অবিচলিত থাকবে ৷ কিন্তু তাহা সহজে হয় না – সময়ে হবে ৷


এই বিরাট অবস্থা মাথার যখন হয়, ওর অর্থ মন বিশাল হয়ে বিশ্বমনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে ৷ গলা ইত্যাদির বিরাট হওয়ার অর্থ – সে সে কেন্দ্রের যে চেতনা তারও সেই অবস্থা আরম্ভ হচ্ছে ৷


যদি বাসনা পােষণ কর, অধীর হয়ে যাও সাধনার ফলের জন্যে, তা হলে শান্ত নীরব কেমন করে থাকবে ৷ মানুষের স্বভাবের রূপান্তরের মত বড় কাজ, তা কি এক মুহূর্তে হয়? স্থির হয়ে মায়ের শক্তিকে কাজ করতে দাও, তা হলে সময়ে সব হয়ে যাবে ৷


আমরা দূরেও যাই নি ত্যাগও করি নি ৷ তােমার মন প্রাণ যখন অশান্ত হয়, তখন এই সব ভুল কল্পনা তােমার মনে ওঠে ৷ বাধাও যদি উঠে, অন্ধকারও যদি আসে, মায়ের উপর ভরসা হারাতে নেই – স্থিরভাবে তাকে ডাকতে ডাকতে অচঞ্চল থাক, বাধা অন্ধকার সরে যাবে ৷


প্রণামে বা দর্শনে মায়ের বাহিরের appearance দেখে তিনি সুখী বা দুঃখিত ইহা অনুমান করা উচিত নয় ৷ লােকে তাই করে কেবলই ভুল করে, মিথ্যা অনুমান করে মা অসন্তুষ্ট, মা কঠোর, মা আমাকে চায় না, দূরে রাখছে ইত্যাদি কত মিথ্যা কল্পনা আর তাতে নিরাশ হয়ে নিজের পথের নিজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে ৷ এই সব না করে নিজের ভিতরে মায়ের উপর, মায়ের love ও helpএর উপর অটল বিশ্বাস রেখে প্রফুল্ল শান্ত মনে সাধনায় এগুতে হয় ৷ যারা তাহাই করে, তারা নিরাপদ থাকে – বাধা এলে অন্ধকার এলে সে তাদের স্পর্শ করতে পারে না, তারা বলে “না, মা-ই আছেন, তিনি যা করেন তাই ভাল – তাকে আমি এ মুহূর্তে না দেখতে পেলেও আমার কাছে রয়েছেন, আমাকে ঘিরে রয়েছেন, আমার কোন ভয় নাই ৷” ইহাই করতে হয় —এই ভরসা রেখে সাধনা করতে হয় ৷


তামসিক সমর্পণ সাথে তামসিক অহংকারের কোন সম্বন্ধ নাই ৷ তামসিক অহংকার মানে “আমি পাপী, আমি দুর্বল, আমার কোন উন্নতি হবে না, আমার সাধনা হতে পারে না, আমি দুঃখী, ভগবান আমাকে গ্রহণ করে নি ৷ মরণই আমার একমাত্র আশ্রয়, মা আমাকে ভালবাসেন না, আর সকলকে ভালবাসেন ইত্যাদি ইত্যাদি ভাব ৷Vital nature এ রকম নিজেকে হীন দেখিয়ে নিজেকে আঘাত করে ৷ সকলের চেয়ে খারাপ, দুঃখী দুষ্ট নিপীড়িত বলে দেখিয়ে অহং ভাবকে চরিতার্থ করতে চায় – বিপরীত ভাবে ৷ রাজসিক অহংকার ঠিক উলটো, আমি বড় ইত্যাদি বলে নিজেকে ফাপিয়ে দেখাতে চায় ৷


সাদা আলাে divine consciousnessএর আলাে – নীল আলাে higher consciousnessএর – রৌপ্যের মত আলাে আধ্যাত্মিকতার আলাে ৷


ইহা হচ্ছে মনের উপর উর্দ্ধ চৈতন্য, যেখানে থেকে আসে শান্তি শক্তি আলাে ইত্যাদি – সাদা পদ্ম মায়ের চৈতন্য, লাল পদ্ম আমার চৈতন্য – সেখানে জ্ঞান ও সত্যের আলাে সর্বদা আছে ৷


ন: দুই তিন দিন যাবৎ প্রায় সময়ই feel করি যে তােমার হাত আমার মাথার উপরে, তুমি আশীৰ্বাদ করছ যেন তােমার গভীরতম শান্তিতে ও চেতনায় ডুবে থাকি ৷ আমি সৰ্ব্বদাই তােমার মধুময় প্রেমময় আহ্বান শুনছি ৷

উ: ইহাই সত্য চেতনার অবস্থা ও দৃষ্টি, গভীরে থাকলে বা বাহিরের চৈতন্যে এলে ইহা যদি থাকে, তা হলে সব ঠিক এগিয়ে যাবে ভাগবত উদ্দেশ্যের দিকে ৷


বহির্জগতের সঙ্গে সম্বন্ধ ত থাকা চাই, কিন্তু সে সব উপরি-উপরি (on the surface) থাকা উচিত – তুমি নিজে ভিতরে মায়ের নিকট থাকবে আর সেখান থেকে ওই সব দেখবে – ইহাই চাই, ইহাই কৰ্ম্মযােগের প্রথম সােপান – তার পর ভিতর থেকে মায়ের শক্তি দ্বারা সব বাহিরের কৰ্ম্ম ইত্যাদি চালিয়ে দেবে, ইহা হচ্ছে দ্বিতীয় অবস্থা ৷ ইহা করতে পারলে আর কোন গােলমাল থাকে না ৷


ভিতরের দিক দিয়ে প্রথম মাকে পেতে হয় ৷ পরে বাহিরটা যখন সম্পূর্ণ বশে আসে, বাহিরেও সর্বদা অনুভব করা যায় ৷


এইটী সব সময় মনে রাখতে হয় যে, যেই অবস্থা হৌক, যতই বাধা আসুক, যতই সময় লাগুক কিন্তু মায়ের উপর সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখে চলতে হয়, তাহলে গন্তব্য স্থানে পঁহুচে যাওয়া অনিবাৰ্য – কোনও বাধা, কোনও বিলম্ব, কোনও মন্দ অবস্থা সে শেষ সফলতাকে ব্যর্থ করতে পারবে না ৷


সত্য দেখা ৷Psychic consciousnessএর রাস্তা উপরের সত্য চেতনায় — সেই psychicকে কেন্দ্র করে সব স্তর একভাবে ভগবানের দিকে ফিরতে আরম্ভ করেছে ৷ সেই রাস্তা উপরের দিকে উঠছে – ছােট শিশু তােমার psy-chic being.


কমলালেবুর রংয়ের অর্থ Divineএর সঙ্গে মিলন ও অপার্থিব চেতনার স্পর্শ ৷


শান্তভাবে সাধনা করতে করতে অগ্রসর হও – দুঃখ বা নিরাশাকে স্থান দিও না - শেষে সব অন্ধকার সরে যাবে ৷


এই feeling, এই শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস সব সময় রাখতে হয়, সাধকের এই শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস, faith, conviction, মায়ের শক্তির প্রধান সহায় ৷


সাধনা করতে হয় দৃঢ় শান্ত মনে, মায়ের উপর অটুট শ্রদ্ধা ও নির্ভর রেখে ৷ Depressionকে কখনও স্থান দিতে নাই ৷ যদি আসে ত প্রত্যাখ্যান করে দূর করে দিতে হয় ৷ আমি নীচ, অধম, আমার দ্বারা হবে না, মা আমাকে দূর করেছেন, আমি চলে যাব, আমি মরব, এ সব চিন্তা যদি আসে তবে জানতে হবে যে এই সব নিম্ন প্রকৃতির suggestions, সত্যের ও সাধনার বিরােধী ৷ এই সব ভাবকে কখন আশ্রয় দিতে নাই ৷


অর্থ এই – যে ভাল সাধক ভাল সাধনা করে, সে ভাল সাধনার মধ্যেও অহংকার, অজ্ঞান, বাসনার ছাপ অনেকদিন বয়ে থাকে – কিন্তু চেনা যখন আরও খুলে খুলে খাঁটি হয় – যেমন তােমার হতে আরম্ভ হয়েছে – তখন ওসব অজ্ঞানের মিশ্রণ খসে যেতে আরম্ভ করে ৷


এই সব হচ্ছে প্রাণের নিরর্থক disturbance, শান্ত হয়ে যােগপথে চলতে হয়, ক্ষোভ ও নিরাশাকে স্থান দিতে নাই ৷


অবশ্য এইরূপ কথার মধ্যে প্রাণের অনেক অশুদ্ধ গতি ঢুকতে পারে, ক্ষোভ, মায়ের উপর অসন্তোষ, অপরের উপর হিংসা, বিষাদ, দুঃখ ৷ এই সব নিয়ে না থাকা ভাল ৷


শিশুটী তােমার psychic being ৷যা বুক থেকে উঠে ও নাবে, তা বহিঃপ্রকৃতির বাধা, ভিতরের সত্যকে স্বীকার করতে চায় না, ঢেকে রাখতে চায় ৷


সে স্থান পিছনে মেরুদণ্ডের মাঝখানে psychic beingএর স্থান ৷ যা বর্ণনা কচ্ছ সে সবই psychic beingএর লক্ষণ ৷


হ্যা, মানুষের চেতনার কেন্দ্র বুকে যেখানে psychic beingএর স্থান ৷


মূলাধার থেকে পায়ের তলা পর্যন্ত physical স্তর বলা যায়, পায়ের নীচে অবচেতনার রাজ্য ৷


অনেক স্তর আছে – উপরে ও নিম্নে, তবে মুখ্যত আছে ওই নীচে চারটী স্তর, মনের স্তর, psychic স্তর, vital স্তর, শরীর স্তর – আর উপরের আছে ঊৰ্ধ মনের অনেক স্তর, তারপর বিজ্ঞান স্তর ও সচ্চিদানন্দ ৷


যদি নেমেই যাও, সেখানেও শান্ত হয়ে মার আলাে শক্তি ডেকে নামিয়ে দাও ৷ নিম্নে যেমন উপরে নিজের মধ্যে মায়ের রাজ্য সংস্থাপন করে দাও ৷


জল চেতনার প্রতীক – যা ওঠে তাহা চেতনার আকাঙ্ক্ষা বা তপস্যা ৷

যদি সাদাটে নীল আলাে (whitish blue) হয়, সে আমার আলাে – যদি সাধারণ নীল আলাে হয়, সে উপরের জ্ঞানের আলাে ৷


সৰ্ব্বদা স্থির হয়ে মায়ের ঊর্ধচেতনা নামতে দাও – তাতেই বহিশ্চেতনা ক্রমশঃ রূপান্তরিত হয়ে যাবে ৷


শান্তভাবে সমর্পণ করতে করতে চল, পুরাতন সবের যে রূপান্তর দরকার তা ক্রমে ক্রমে হয়ে যাবে ৷

ভগবানের সন্তান হলেও এমন কোনও সাধক নাই যার মধ্যে প্রকৃতির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক দোষ নাই ৷ এই সব যখন টের পাওয়া যায়, তখন reject করতে হয়, মায়ের শক্তির আশ্রয় আরও দৃঢ়ভাবে চাইতে হয় যাতে আস্তে আস্তে এই ক্ষুদ্র প্রকৃতির দোষসকল বিনষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু বিশ্বাস ও মায়ের উপর নির্ভর, সমর্পণ সব সময় অটুট রাখতে হয় ৷ এসব দোষ সম্পূর্ণভাবে বের করা সময়-সাপেক্ষ, আছে বলে বিচলিত হতে নাই ৷


চলে যাবে কারা? যাদের আন্তরিক ভাব নাই, যাদের মায়ের উপর বিশ্বাস ও শ্রদ্ধা নাই, যারা মায়ের ইচ্ছার চেয়ে নিজের কল্পনাকে বড় বলে দেখে, তারা যেতে পারে ৷কিন্তুযে সত্যকে চায়, যার শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস চায়, যে মাকে চায়, তার কোন ভয় নাই, তার যদি হাজার বাধা হয়, সেগুলাে সে অতিক্রম করবে, যদি স্বভাবের অনেক দোষ হয় সেগুলাে সে শুধরে নেবে, যদি পতনও হয়, সে আবার উঠবে – সে শেষে একদিন সাধনার গন্তব্য স্থানে পঁহুচবেই ৷


ইহা right attitude নয় ৷ তােমার সাধনা ধ্বংস হয়নি, মা তােমাকে ত্যাগ করেন নি, দূরে যান নি, তােমার উপর বিরক্ত হন নি – এই সব হচ্ছে প্রাণের কল্পনা, এই সব কল্পনাকে স্থান দিতে নাই ৷ মায়ের উপর শান্ত সরল ভাবে নির্ভর কর, বাধাকে ভয় না করে মায়ের শক্তিকে তােমার ভিতরে ডাক – যা পেয়েছ ৷ সে সব তােমার ভিতরে আছে, নূতন উন্নতিও হবে ৷


চেতনা উর্ধের সত্যের দিকে খুলছে ৷ স্বর্ণময়ূর – সত্যের জয় ৷ মায়ের শক্তি physical পৰ্য্যন্ত নামছে – তার ফলে সত্যের আলাে (সােনালী আলাে) নামছে আর তুমি মায়ের দিকে শীঘ্র এগিয়ে চলছ ৷


শরীরের পেছনের অংশ সব চেয়ে অচেতন – প্রায়ই সবশেষে আলােকিত হয় ৷ তুমি যা দেখেছ, তা সত্য ৷


মায়ের জয় হবেই এই বিশ্বাস সব সময় রেখে শান্ত ধীর ভয়শূন্য হয়ে সাধনা করতে হয় ৷


মা-ই গন্তব্যস্থান, তার মধ্যে সবই আছে, তাকে পেলে সব পাওয়া যায়, তার চেতনার মধ্যে বাস করলে আর সব আপনিই ফুটে যায় ৷


মায়ের ভাব ত বদলায় না – একই থাকে ৷ তবে সাধক নিজের মনের ভাবের মত দেখে যে বদলে গেছে – কিন্তু তা সত্য নয় ৷


ধ্বংস হলে পরিবর্তন কিসে হবে? প্রাণের শরীরের পুরাতন প্রকৃতিকে ধ্বংস করতে হবে, প্রাণকে শরীরকে নয় ৷


এ কথা সত্য যে সকলের মধ্যে মা আছেন ও তার সঙ্গে একটা সম্বন্ধ থাকা চাই, তবে সে সম্বন্ধ personal নয় সে লােকের সঙ্গে, কিন্তু মারই সঙ্গে, একটা বিশাল ঐক্যের সম্বন্ধ ৷


এক দিকে শান্তি ও সত্য চেতনার বৃদ্ধি, অপর দিকে সমর্পণ, ইহাই হচ্ছে সত্য পথ ৷


প্রাণকে ধ্বংস করবার ইচ্ছা ভুল ইচ্ছা – প্রাণকে ধ্বংস করলে শরীর বাঁচবে না, শরীর না বাঁচলে সাধনা করা যায় না ৷

তুমি বােধ হয় বড় বেশী শক্তি টেনেছ – সে জন্য শরীর ঠিক ধারণ করতে পাচ্ছে না ৷ একটু শান্ত হয়ে থাকলে সব ঠিক হয়ে যাবে ৷


হ্ন্যাঁ, তুমি নির্ভুলদেখেছ – মাথার উপর সাতটী পদ্ম বা চক্র আছে ৷ – তবে উদ্ধৃমন না খুললে এগুলাে দেখা যায় না ৷


Psychicএর পিছনে, psychic অবস্থার পিছনে অহংকার থাকতে পারে না ৷ তবে প্রাণ থেকে সে অহংকার এসে তার সঙ্গে যুক্ত হবার চেষ্টা করতে পারে ৷ যদি ওই রকম কিছু দেখ তা হলে তা গ্রহণ না করে মায়ের কাছে সমর্পণ করবে ত্যাগ করবার জন্যে ৷


সােজা রাস্তা psychicএর পথ যে সমর্পণের বলে ও সত্য দৃষ্টির আলােতে বিনা বাঁকে উপরে চলে যায় – যে একটু সােজা একটু ঘুরােনাে, সে হচ্ছে ৷ মানসিক তপস্যার পথ ৷ আর একেবারে ঘুরােনাে যে সে হচ্ছে প্রাণের পথ, আকাঙ্ক্ষা বাসনায় পূর্ণ, জ্ঞানও নাই, তবে প্রাণের সত্য চাওয়া আছে বলে কোন রকমে যাওয়া যায় ৷


বাধার কথা লােকে যত বেশী ভাবে, বাধা বেশী জোর করে তাদের উপর ৷ ভগবানের কথা বেশী ভাবতে হয় মায়ের কাছে নিজেকে খুলে, – আলাে, শান্তি, আনন্দের কথা ৷


এই অসীম শান্তি যতই বাড়ে, ততই ভাল ৷ শান্তিই হয় যােগের প্রতিষ্ঠা ৷


যা দেখেছ, তা সম্পূর্ণ সত্য ৷ এই গলার মধ্যে সত্তার একটা কেন্দ্র আছে ৷ সে হচ্ছে externalising mind or physical mentalএর কেন্দ্র, অর্থাৎ যে মন বুদ্ধির সব খেলাকে বাহিরের আকৃতি দেয়, যে মন speechএর অধিষ্ঠাতা, যে মন physical সব দেখে, তা নিয়ে ব্যস্ত থাকে ৷ মাথার নিম্নভাগ আর মুখ তার অধিকারে রয়েছে ৷ এই মন যদি উপরের চেতনা বা ভিতরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়, এগুলােকে ব্যক্ত করে, তবে ভাল ৷ কিন্তু তার আরাে ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ – নিম্ন অংশের সঙ্গে, lower vital ও physical consciousness (যার কেন্দ্র মূলাধার) তার সঙ্গে ৷ এই জন্য এ রকম হয় ৷ সেই জন্য বাককে সংযত করার সাধনায় বড় প্রয়ােজন, যাতে সে উপরের ও ভিতরের চেতনাকে ব্যক্ত করতে অভ্যস্ত হয়, নিম্নের বা বাহিরের চেতনাকে নয় ৷


ইহাই চাই – বাহিরের জিনিষ ভিতরে যাওয়া, ভিতরের সঙ্গে এক হওয়া, ভিতরের ভাবকে গ্রহণ করা ৷


দেহকে এইরূপ দেখা ভাল ৷ তবে দেহের মধ্যে চৈতন্য আবদ্ধ না থাকলেও চৈতন্য বিশাল অসীম হয়ে গেলেও দেহকে চৈতন্যের একটী অংশ ও মায়ের যন্ত্র বলে অঙ্গীকার করতে হয়, শারীর চৈতন্য রূপান্তর করতে হয় ৷


ইহা খুব ভাল লক্ষণ ৷ নিম্নচেতনাই উঠে যাচ্ছে ঊর্ধচেতনার সঙ্গে মিলিত হবার জন্য ৷ উপরের চেতনাও নামছে জাগ্রত চেতনার সঙ্গে মিলিত হবার জন্য ৷


ইহা তােমার আজ্ঞাচক্র অর্থাৎ ভিতরের বুদ্ধি চিন্তা দৃষ্টি ইচ্ছাশক্তির কেন্দ্র – সে এখন pressureএর দরুন এমন খুলে গেছে, জ্যোতির্ময় হয়েছে যে ঊর্ধচেতনার সঙ্গে যুক্ত হয় আর উর্ধচেতনার প্রভাব সমস্ত আধারের উপর বিস্তার করে ৷


এই অনুভূতিটী খুব সুন্দর ও সত্য – প্রত্যেক আধার এমনই মন্দির হওয়া চাই ৷ যা শুনেছ যে মা-ই সব করবেন, শুধু তার মধ্যে ডুবে থাকা চাই, ইহাও খুব বড় সত্য ৷


যে বিশালতা অনুভব করছ তার মধ্যে উর্দ্ধে বাস করতে হবে, ভিতরে গভীরেই তারই মধ্যে বাস করতে হবে – কিন্তু ইহা ছাড়া সৰ্ব্বত্র প্রকৃতির মধ্যে এমন কি নিম্নপ্রকৃতির মধ্যেও সে বিশালতা নামা চাই ৷ তখন নিম্নপ্রকৃতি ও বহিঃপ্রকৃতির সম্পূর্ণ রূপান্তরের স্থায়ী প্রতিষ্ঠা হতে পারে ৷ কারণ এই বিশালতা মায়ের চৈতন্যের বিশালতা – সংকীর্ণ নিম্নপ্রকৃতি যখন মায়ের চৈতন্যের মধ্যে বিশাল ও মুক্ত হয়ে যাবে, তখন সে মূলপৰ্য্যন্ত রূপান্তরিত হতে পারবে ৷


অনুভূতিকে যদি ব্যক্ত করি কথায় বা লেখায়, তখন সে কমে যায় বা থেমে যায়, এই ত অনেকের হয় ৷ যােগীরা প্রায়ই সে জন্য কারুকে নিজের অনুভূতির কথা বলে না, অথবা সব দৃঢ় হয়ে গেলে তার পর বলে ৷ তবে গুরুর কাছে, মায়ের কাছে বল্লে কমবে না, বাড়বে ৷ তােমার এই অভ্যাস সমস্ত জিনিসের [মধ্যে স্থাপন করা উচিত ৷


বালকটী হৃদয়স্থ ভগবান আর শক্তি ত মা-ই হবে ৷


চক্র ঘুরছে, মানে outer beingএর মধ্যে মায়ের শক্তির কাজ চলেছে ৷ – তার রূপান্তর হবে ৷


অনুভূতি যখন হয় তখন অবিশ্বাস না করে গ্রহণ করা ভাল ৷ ইহা ছিল সত্য অনুভূতি – উপযুক্ত অনুপযুক্তের কথা হচ্ছে না, সাধনায় এই সব কথার বিশেষ কোন অর্থ নাই, মায়ের কাছে খুলতে পারলেই সব হয় ৷


মাথায় যা অনুভব কর, তাহা বাহিরের মন (physical mind) আর নাভির নীচ থেকে যা অনুভব কর তা হল (lower vital) নিম্ন প্রাণ ৷


মাথায় এইরূপ হওয়ার অর্থ এই যে মন সম্পূর্ণ খুলেছে ও উপরের চেতনা ৷ receive করেছে ৷


হ্যাঁ,যখন ঘুম সচেতন হয়, তখন এইরূপই হয় – যেমন জাগ্রতে তেমনই ঘুমে সাধনা অনবরত চলে ৷


বহিঃপ্রকৃতি ছাড়ছে না বলে বাধা হচ্ছে ৷ বহিঃপ্রকৃতির যখন নব জন্ম হবে তখন আর বাধা থাকবে না ৷


এই দুই বাধা সাধকের প্রায়ই থাকে ৷ প্রথমটী প্রাণের, দ্বিতীয়টী শরীরচেতনার – স্বতন্ত্র হয়ে থাকলে কমে গিয়ে শেষে আর থাকে না ৷


এই সব বাধা সকলের আসে, তা না হলে যােগসিদ্ধি অল্পদিনেই হয়ে যেত ৷


বাধা সহজে যায় না ৷ খুব বড় সাধকেরও “আজই” এক মুহূর্তে সব বাধা সরে যায় না ৷ আমি ইহাও অনেকবার বলেছি যে শান্ত অচঞ্চল হয়ে মায়ের উপর সম্পূর্ণ ভরসা করে আস্তে আস্তে এগুতে হবে – এক মূহূর্তে হয় না ৷ “আজই সব চাই এইরূপ দাবী করলে আরও বাধা হয় ৷ ধীর স্থির হয়ে থাকতে হয় ৷


যখন অবচেতনা থেকে তমােভাব উঠে শরীরকে আক্রমণ করে, তখন এইরূপ অসুখের মতন করে – উপর থেকে মায়ের শক্তিকে শরীরের মধ্যে ডাক — সব চলে যাবে ৷


অবচেতনার বাধা হতে মুক্ত হবার উপায় হচ্ছে প্রথম সেগুলােকে চিনে নেওয়া, তারপর সেগুলােকে reject করা, শেষে মায়ের ভিতরের বা উপরের আলাে চেতনা শরীরচেতনার মধ্যে নামান ৷ তা হলে অবচেতনায় ignorant move-mentsকে তাড়িয়ে তার বদলে সে চেনার movements স্থাপিত হবে ৷ কিন্তু এ সহজে হয় না – ধৈর্য্যের সহিত করতে হবে – দৃঢ় patience চাই ৷ মায়ের উপর ভরসাই সম্বল ৷ তবে ভিতরে থাকতে পারলে, ভিতরের দৃষ্টি ও চেতনা রাখতে পারলে তত কষ্ট ও পরিশ্রম হয় না – তা সব সময় পারা যায় না, তখন শ্রদ্ধা ও ধৈর্য্যের নিতান্ত প্রয়ােজন হয় ৷


মানুষের প্রকৃতি ত সব সময় ভিতরে থাকতে পারে না – কিন্তু যখন মাকে ভিতরে বাহিরে সব অবস্থায় feel করতে পারা যায়, তখন এই difficulty আর থাকে না ৷ সেই অবস্থা আসবে ৷


অশুদ্ধ প্রকৃতিই সাধকের বাধার সৃষ্টি করে – কামভােগের ইচ্ছা, অজ্ঞানতা ইত্যাদি মানুষের অশুদ্ধ প্রকৃতিরই অন্তর্গত ৷ এইগুলি সকলেরই আছে – যখন আসে বিচলিত না হয়ে শান্ত ভাবে নিজেকে পৃথক করে প্রত্যাখ্যান করতে হয় ৷ যদি বল “আমি পাপী” ইত্যাদি তাতে দুর্বলতাই বাড়ে ৷ বলতে হয় – “এই হচ্ছে মানুষের অশুদ্ধ প্রকৃতি ৷ এইগুলি মানুষের সাধারণ জীবনে থাকে, থাকুক – আমি চাই না, আমি ভগবানকে চাই, ভগবতী মাকেই চাই – এইগুলাে আমার সত্য চেতনার জিনিস নয় ৷ যতদিন আসবে ততদিন স্থিরভাবে প্রত্যাখ্যান করব – বিচলিত হব না, সায় দিব না ৷”


আমি এই সম্বন্ধে বার বার তােমাকে বুঝিয়ে দিয়েছি – যে বাধা এক মুহূর্তে যায় না – বাধা হচ্ছে যে মানুষের বহিঃপ্রকৃতির স্বভাবের ফল – সে স্বভাব এক দিনে বা অল্প দিনে বদলায় না - শ্রেষ্ঠ সাধকেরও নয় ৷ তবে মায়ের উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করে শান্ত ধীর ভাবে উৎকণ্ঠিত না হয়ে যদি মাকে সর্বদা ডেকে এগিয়ে চল, বাধা এলেও কিছু করতে পারবে না – সময়ে তার জোর কমে যাবে, নষ্ট হয়ে যাবে, আর থাকবে না ৷


ন: যখন ধ্যান করতে বসি তখন আমার পা ঝিম্ ঝিম্ করে আর ভিতরে একটি কি ছটফট করে ৷ এসব কি?

উ: ইহা হচ্ছে শরীরের (শরীরস্থ প্রাণের) চঞ্চলতা – অনেকের হয় – স্থির হয়ে থাকলে প্রায়ই কেটে যায় ৷


ন: আমি অন্তরে যা দেখি তা বাহিরে মাঝে মাঝে খােলা চোখে কেন দেখি? তা কি কাল্পনিক জিনিষ?

উ: না ৷ যা ভিতরে দেখা যায়, তাহাই বাহিরে physical চোখেও দেখা যেতে পারে, তবে ভিতরের দৃষ্টি সহজে আসে – বাহিরে সূক্ষ্ম দৃশ্য দেখা একটু কঠিন ৷


এখন physical consciousness খুব উঠেছিল ৷ সে জন্য অধ্যাত্ম অনুভূতি পর্দার পেছনে সরে গিয়েছে, চলে যায়নি ৷


একেবারে নীরব হওয়া চলে না, ভালও নয় ৷ তবে প্রথম অবস্থায় যতদূর সম্ভব নীরব গম্ভীর হওয়া সাধনার অনুকূল অবস্থা – যখন বাহিরের প্রকৃতি মাতৃময় হয়ে যাবে, তখন কথা বলা হাসি ইত্যাদিতেও সত্য চেতনা থাকবে ৷


হা, ওই রকম কাদলে দুৰ্ব্বলতা আসে ৷ সব সময়, সব অবস্থায় ধীর শান্ত হয়ে মায়ের উপর নির্ভর করে মাকে ডাক ৷ তাহলে ভাল অবস্থা শীঘ্র ফিরে আসে ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates