CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




“ধর্ম” পত্রিকার সম্পাদকীয়




সম্পাদকীয় – ১৫

ধৰ্ম্ম, ১৫শ সংখ্যা, ২৭এশে অগ্রহায়ন, ১৩১৬

ফেরোজশাহের চাল

কুচক্রীর চক্র বােঝা দায় ৷ ফেরােজশাহ মেহতা কুচক্রীর শিরােমণি, যখন জোরে পারেন না, হঠাৎ কোন অপ্রত্যাশিত চাল চালিয়া অভীষ্টসিদ্ধি আদায় করা তঁাহার অভ্যাস ৷ কিন্তু লাহাের কভেন্সনের পনের দিন পূর্বে যে অপূৰ্ব্ব চাল চালিয়াছেন, তাহাতে কাহার কি লাভ হইবে, তাহা বলা কঠিন ৷ লােকে অনেক অনুমান করিতেছে, কেহ কেহ বলে, ফেরােজশাহ বঙ্গদেশের ও পঞ্জাবের অসন্তোষে ভীত হইয়া রণে ভঙ্গ দিতেছেন ৷ স্বীকার করি, বােম্বাইয়ের এই একমাত্র সিংহ কলিকাতায় লােকমতের ভয়ে পেটে ল্যাজ গুটাইয়া রাখিয়াছিলেন, পাছে কেহ মাড়ায়, – কিন্তু লাহাের কভেন্সন সিংহ মহাশয়ের নিজের গৰ্ত্ত, সেইখানে কোনও ভক্তিহীন জন্তুর প্রবেশ কঠিন আইনে নিষিদ্ধ ৷ তাহার উপর অভ্যর্থনা সমিতি নিয়ম করিয়াছে যে, স্বেচ্ছাসেবক বল, দর্শক বল, কেহ পাণ্ডালে উচ্চ শব্দ করিতে পারিবে না, না hiss; না বন্দেমাতরম্ ধ্বনি, না “shame, shame”, জয়জয়কার! যে করিবে, তাহাকে গলাধাক্কা দিয়া সভা হইতে বাহির করা হইবে ৷ সিংহ কিসেতে ভীত? ল্যাজ মাড়ান দূরের কথা, প্রভুর কাণে কোন ৷ বিরক্তিসূচক শব্দও পৌঁছিতে পারে না, চারিদিক নিরাপদ ৷ আবার কেহ কেহ বলে, সার ফেরােজশাহ ইণ্ডিয়া কৌন্সিলের সভ্য হইতে আহূত হইয়াছেন, তাহার রাজভক্তির চরম বিকাশের চরম পুরস্কার হাতে পড়িতেছে, সেইহেতু আর কভেন্সনের সভাপতি হইতে তিনি অক্ষম ৷ কিন্তু পনের দিন বিলম্ব মাত্র, সার ফেরােজশাহ কি এত নিষ্ঠুর পিতা, যে তাহার আদরের কন্যার শেষ রক্ষা করিয়া স্বর্গে যাইতে অসম্মত হইবেন, গবর্ণমেন্টও কি কনভেন্সনের মূল্য বােঝেন না? এই আবশ্যকীয় কাৰ্য্যের জন্য ফেরােজশাহকে পনের দিন ছুটী দিবেন না? আমরাও একটী অনুমান করিয়া বসিয়াছি ৷ শাসন সংস্কারে সমস্ত হিন্দুসম্প্রদায় অসন্তুষ্ট ও ক্রুদ্ধ হইয়াছে, সেই কথা ফেরােজশাহের অজ্ঞাত নহে অথচ শাসন সংস্কার ও গবর্ণমেন্টের অনুগ্রহের লােভ দেখাইয়াই তিনি সুরাটে মহাসভা দ্বিখণ্ড করিয়াছিলেন ৷ তাহার পরে বঙ্গদেশের প্রতিনিধিগণকে এত রূঢ়ভাবে অবমাননা করিয়াছেন যে, তাঁহারা লাহােরে গিয়া আবার অপমানিত হইতে অনিচ্ছুক ৷ ফেরােজশাহ স্বয়ং বলেন যে, গুরুতর রাজনীতিক কারণে তিনি সভাপতিপদ ত্যাগ করিয়াছেন ৷ ইহাই কি সেই রাজনীতিক কারণ নহে? পদত্যাগের ফলে যদি সরেন বাবরা কনভেত্সনে যােগ দিতে রাজী হন, শাসন সংস্কার গ্রহণের দোষ মেহতার ভাগে না পড়িয়া সমস্ত মধ্যপন্থীদলে সমভাবে বিভক্ত হয়, এই আশা ৷ বঙ্গদেশের মধ্যপন্থীগণের অনুপস্থিতিতে মেহতার সভাপতিত্বে অল্পসংখ্যক প্রতিনিধি দ্বারা শাসন সংস্কার যা , সংস্কারের দশা ও কভেন্সনের দশাও অতি শােচনীয় হইবে ৷ ফেরােজশাহের ইচ্ছা, বঙ্গদেশের প্রতিনিধিগণকে লাহােরে হাজির করাইয়া তাহাদের দ্বারা নিজের কাৰ্য্য হাসিল করিবেন, স্বয়ং বঙ্গদেশীয় শিখণ্ডীর পশ্চাৎ গুপ্তভাবে যুদ্ধ করিবেন ৷ নচেৎ কুচক্রীর শিরােমণি উদ্দেশ্যহীন চাল চালিবেন কেন?


পূর্ববঙ্গে নিৰ্বাচন

পূর্ববঙ্গ প্রথম হইতে যে তেজ, সত্যপ্রিয়তা ও রাজনীতিক তীক্ষ্ণদৃষ্টি দেখাইয়া আসিতেছে, শাসনসংস্কারের পরীক্ষায় বােঝা গেল সেই সকল গুণ নিগ্রহে ও প্রলােভনে নিস্তেজ হয় নাই, যেমন ছিল তেমনই রহিয়াছে ৷ ফরিদপুরে একজন হিন্দুও নির্বাচন প্রার্থী হন নাই, ঢাকায় একজন মাত্র মরলীর মােহে মুগ্ধ হইয়াছেন, ময়মনসিংহে যে চারিজন এই রাজভােগের আশায় ছুটিয়া আসিয়াছিলেন, তাহাদের দুইজন আবার চৈতন্য লাভ করিয়া সরিয়া পড়িয়াছেন, আর দুইজন আশা করি, শ্রেয়ঃপথ অবলম্বন করিবেন ৷ অতি আশ্চর্যের কথা, শুনিতেছি অশ্বিনীকুমারের বরিশাল সংস্কার-মদে মাতাল হইয়া লজ্জা পরিত্যাগ করিয়া মরলীর মনের মত নৃত্য করিতেছে ৷ এই দুর্বুদ্ধি কেন? নিৰ্বাসিত অশ্বিনীকুমারের এই অপমান কেন? বরিশালের দেবতা বৃটিশ কারাগারে নিবদ্ধ, কঠিন রােগে আক্রান্ত অথচ বিনা কারণে বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়ের সেবা-শুশ্রুষায় বঞ্চিত, তাহার বরিশাল তাহাকে ভুলিয়া রাজপুরুষদের প্রেমের বাজারে নিজেকে বিক্রী করিতে ছুটিল ৷ ছি! শীঘ্র এই দুর্মতি ত্যাগ কর, পাছে বঙ্গদেশ বরিশালকে উপহাস করিয়া বলে, বৃথা অশ্বিনীকুমার সমস্ত জীবন বরিশালবাসীকে মনুষ্যত্ব কি তাহা শিক্ষায় ও দৃষ্টান্তে দেখাইতে খাটিয়াছেন, বৃথা শেষে স্বয়ং দেশের হিতার্থে বলি হইয়া পড়িয়াছেন ৷


পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা

পশ্চিমবঙ্গ কখন মাঝামাঝি ধরণের ভাবপােষণ করে না, যে পথে যায় ছুটিয়া যায়, যে ভাব অবলম্বন করে, তাহার চরম দৃষ্টান্ত দেখায় ৷ পশ্চিমবঙ্গে যেমন সৰ্বশ্রেষ্ঠ তেজস্বী পুরুষসিংহ আছেন, তেমনি নির্লজ্জ ধামাধরার পালও আছে ৷ যাহারা কোমর বাঁধিয়া নিৰ্বাচন দৌড়ে প্রথম স্থান পাইতে লালায়িত, তাহারা প্রায়ই দেশের অজ্ঞাত অপূজ্য স্বার্থান্বেষী ধামাধরার পাল ৷ তাহারা ব্যবস্থাপক সভায় ভীড় করিলে দেশের লাভও নাই, ক্ষতিও নাই, – সভা অযােগ্য তােষামােদকারীর চিড়িয়াখানা বিশেষে পরিণত হইবে, আর কোন কুফল হইবে না ৷ কিন্তু তাহাদের মধ্যে দুয়েকজন দেশপূজ্য লােকের নাম দেখিয়া দুঃখিত হইলাম ৷ বঙ্গদেশে শ্রীযুক্ত বৈকুণ্ঠনাথ সেনের কি এত অল্প আদর যে শেষে এই ভীড়ের মধ্যে কৌন্সিলে ঢুকিবার জন্যে ঠেলাঠেলি করিতে হইল? বৃদ্ধ বয়সে বৈকুণ্ঠবাবুর এই অপমানপ্রিয়তা কেন? চিড়িয়াখানায় প্রবেশ কি এত লােভনীয়?


মরলীনীতির ফল

মােটের উপর মরলীনীতির ফল দেশের উপকারী বলিতে হইল ৷ ভারতের প্রধান বন্ধু ও হিতকৰ্ত্তা লর্ড কর্জন বঙ্গভঙ্গ করিয়া সুপ্ত জাতিকে জাগাইয়াছিলেন, নিবিড় মােহ দুর করিয়াছিলেন ৷ যাহা অবশিষ্ট ছিল, মােহের পূনৰ্বিস্তার, নিদ্রার নবপ্রভাবের আশঙ্কা আমাদের হিতৈষী লর্ড মরলী শাসনসংস্কার করিয়া অপনােদন করিয়াছেন ৷ যাঁহাদের উপর বঙ্গভঙ্গের আঘাত পড়ে নাই, তাহারাও এই প্রহারে মর্মাহত হইয়া জাগিতেছেন, সমস্ত হিন্দুসম্প্রদায় পরমুখাপেক্ষার অসারতা বুঝিয়া জাতীয়তার ধ্বজার তলে অচিরে সমবেত হইবে ৷ রাজপুরুষদের সঙ্গে জমিদার ও মুসলমান রহিয়াছেন ৷ দেখি তাহারাও কদিন টিকিতে পারিবেন ৷ ভগবানকে প্রার্থনা করি আমাদের তৃতীয় কোন হিতৈষী ইংরাজের মনে কোন নূতন যুক্তি ঢুকাইয়া দাও যাহার সুফলে জমিদার ও মুসলমানদেরও সম্পূর্ণ জ্ঞানােদয় হইবে ৷ জাতীয় পক্ষের আস্থা বৃথা কল্পনা নহে ৷ যখন ভগবান সুপ্রসন্ন, বিপক্ষের চেষ্টায় বিপরীত ফল হইয়া তাহার উদ্দেশ্যসিদ্ধির সাহায্য করে ৷


মিন্টোর উপদেশ

এই পরীক্ষাস্থলে ছােট বড় অনেক ইংরাজ ভারতবাসীকে সংস্কারবিষয়ক সদুপদেশ দিতে অগ্রসর হইতেছেন, তাহাদের মধ্যে আমাদের অতি লােকপ্রিয় সদাশয় বড়লাটও নিজ পূজনীয় মুখবিবর হইতে উপদেশ-সুধা ঢালিয়া আমাদের কর্ণতৃপ্তি করিয়াছেন ৷ সকলের একই কথা – আহা এমন সুন্দর শিশু ভূমিষ্ঠ হইয়াছে, তােমরা এইরূপে তাহার অপরূপ রূপের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র খুঁত বাহির না করিয়া cooperation সুধায় আমাদের সােনার চাদকে হৃষ্টপুষ্ট কর, দোষগুলি আপনিই যাইবে ৷ শিশুর বাপ মা যে এইরূপ প্রশংসা করিবে, দোষ ঢাকিয়া দিবে ৷ তাহা স্বাভাবিক ও মার্জনীয় ৷ কিন্তু সত্য কথা এই, ছেলেটির এক বা দুই বা তিন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোষ থাকিলে ক্ষতি হইত না, কিন্তু তাহার সমস্ত শরীর পচা, হৃদরােগ, যকৃতের রােগ, ক্ষয়রােগ লইয়া জাত, এই সােনারচঁাদ বাঁচিবার নহে, বাঁচিবার যােগ্যও নহে, বৃথা বাঁচাইয়া কষ্ট দেওয়া অপেক্ষা বয়কট বালিসে শ্বাসরােধ করিয়া যন্ত্রণামুক্ত করা দয়াবানের কাৰ্য্য ৷ তাহাতে যদি শিশুহত্যা ও নৃশংসতা দোষে অপরাধী হই, না হয় নরকভােগ করিব ৷ আমাদের কিন্তু এক কৌতূহলের কারণ রহিল, সােনারচঁাদের বাপ মিন্টোর উক্তি শুনিলাম, – মাননীয় মিঃ গােখলে যিনি সােনারর্চাদের মাতৃস্বরূপ, তিনি কেন নীরবে সন্তানের নিন্দা সহ্য করিতেছেন? না আমাদের গােপালকৃষ্ণ হিন্দু পঞ্চ ধ্বংস করিয়া বিজয়ানন্দের অতিরেকে সমাধিস্থ হইয়াছেন? বােধ হয় সূতিকা-অশৌচ কয়েকদিন রক্ষা করিতেছেন, সময়ে আবার সভ্যসমাজে মুখ দেখাইতে আসিবেন ৷


লাহোর কন্ভেল্সন

লাহাের কভেন্সনের অদৃষ্ট নিবিড় মেঘাচ্ছন্ন হইয়াছে ৷ বঙ্গদেশ অপ্রসন্ন, পঞ্জাব অসন্তুষ্ট, দেশের অধিকাংশ লােক হয় বহিষ্কৃত, নয় যােগদান করিতে অনিচ্ছুক, ফেরােজশাহ-প্রসূত, হরকিসনলাল-পালিত, গবর্ণমেণ্ট লালিত কভেন্সন অতি কষ্টে নিজ প্রাণরক্ষা করিতেছিল ৷ শেষে এই কি বজ্রাঘাত! যে প্রিয় পিতার প্রেমে বঙ্গদেশের আপত্তি অগ্রাহ্য করিয়া নিজেকে বিপদাপন্ন করিয়াছিল, সেই পিতা ও ইষ্টদেবতা ফেরােজশাহ বিমুখ হইয়া সকল প্রার্থনা ঠেলিয়া নিজ গুপ্ত বিচারের অভেদ্য তিমিরে ইন্দ্রজিতের ন্যায় অতর্ক মায়াযুদ্ধে প্রবৃত্ত হইলেন ৷ বােম্বাইয়ের সাঝ বর্তমানের টেলিগ্রামের উত্তরে হরকিসনলাল দুঃখের সহিত জানাইয়াছেন যে, ফেরােজশাহ তাহার পদত্যাগের কারণ জানাইতে অসম্মত ৷ অগত্যা ভক্ত তাহার রহস্যময় অনিৰ্দেশ্য অতর্ক দেবতার মুখের দিকে করুণ শুন্যদৃষ্টিতে হাঁ করিয়া চাহিয়া রহিয়াছেন ৷ নূতন সভাপতিকে অল ইণ্ডিয়া “কংগ্রেস” কমিটী ভিন্ন কে নির্বাচন করিবে? সেই কমিটীর সভাস্থল ফেরােজশাহের শােবার ঘর ৷ অতএব কমিটীর অধিবেশনে প্রভুর ইচ্ছা ব্যক্ত হইতেও পারে ৷ কাহার শিরে ফেরােজশাহের স্পর্শে পুণ্যময় পরিত্যক্ত মালা সেই পবিত্র করকমল হইতে নিক্ষিপ্ত হইবে? ওয়াচার না মালবিয়ার, না গােখলের? আমাদের সুরেন্দ্রনাথের নামও করা হইয়াছে, কিন্তু তিনি ফেরােজশাহের উচ্ছিষ্ট সভাপতিত্ব তাহার কৃপার দানস্বরূপ গ্রহণ করিয়া বঙ্গবাসীর অপ্রীতিভাজন হইবেন, সেই আশা পােষণ করা অন্যায় ৷ গােখলে ফেরােজশাহের দ্বিতীয় আত্মা, ওয়াচা তাহার আজ্ঞাবাহক ভৃত্য, মালবিয়াকে এই মহৎ পদে নিযুক্ত করিয়া কমিটী স্বাধীনতার ঢং করুক ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates