CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




ধৰ্ম্ম




আমাদের ধর্ম

আমাদের ধর্ম সনাতন ধর্ম ৷ এই ধৰ্ম্ম ত্রিবিধ, ত্রিমার্গগামী, ত্ৰিকৰ্ম্মরত ৷ আমাদের ধর্ম ত্রিবিধ ৷ ভগবান অন্তরাত্মায়, মানসিক জগতে, স্থূল জগতে – এই ত্রিধামে প্রকৃতিসৃষ্ট মহাশক্তিচালিত বিশ্বরূপে আত্মপ্রকাশ করিয়াছেন ৷ এই ত্রিধামে তাঁহার সহিত যুক্ত হইবার চেষ্টা সনাল ধৰ্ম্মের ত্রিবিধত্ব ৷ আমাদের ধর্ম ত্রিমার্গগামী ৷ জ্ঞান, ভক্তি, কৰ্ম্ম – এই তিনটি স্বতন্ত্র বা মিলিত উপায়ে সেই যুক্তাবস্থা মানুষের সাধ্য ৷ এই তিন উপায়ে আত্মশুদ্ধি করিয়া ভগবানের সহিত যােগলিঙ্গা সনাতন ধর্মের ত্রিমার্গগামী গতি ৷ আমাদের ধর্ম ত্ৰিকৰ্ম্মরত ৷ মানুষের প্রধান বৃত্তিসকলের মধ্যে তিনটি ঊর্ধ্বগামিনী, ব্রহ্মপ্রাপ্তি-বলদায়িনী – সত্য, প্রেম ও শক্তি ৷ এই তিন বৃত্তির বিকাশে মানবজাতির ক্রমােন্নতি সাধিত হইয়া আসিতেছে ৷ সত্য, প্রেম ও শক্তি দ্বারা ত্রিমার্গে অগ্রসর হওয়া সনাতন ধৰ্ম্মের ত্ৰিকৰ্ম্ম ৷

সনাতন ধর্মের মধ্যে অনেক গৌণ ধর্ম নিহিত; সনাতনকে অবলম্বন করিয়া পরিবর্তনশীল মহান, ক্ষুদ্র নানাবিধ ধৰ্ম্ম স্ব স্ব কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হয় ৷ সর্বপ্রকার ধৰ্মকৰ্ম্ম স্বভাবসৃষ্ট ৷ সনাতন ধর্ম জগতের সনাতন স্বভাব আশ্রিত, এই নানাবিধ ধৰ্ম্ম নানাবিধ আধারগত স্বভাবের ফল ৷ ব্যক্তিগত ধৰ্ম্ম, জাতিধৰ্ম্ম, বর্ণাশ্রিত ধৰ্ম্ম, যুগধর্ম ইত্যাদি নানা ধৰ্ম্ম আছে ৷ অনিত্য বলিয়া সেইগুলি উপেক্ষণীয় বা বর্জনীয় নয়, বরং এই অনিত্য পরিবর্তনশীল ধৰ্ম্ম দ্বারাই সনাতন ধর্ম বিকশিত ও অনুষ্ঠিত হয় ৷ ব্যক্তিগত ধৰ্ম্ম, জাতিধৰ্ম্ম, বর্ণাশ্রিত ধৰ্ম্ম, যুগধর্ম পরিত্যাগ করিলে সনাতন ধর্মের পুষ্টি না হইয়া অধৰ্ম্মই বর্ধিত হয় এবং গীতায় যাহাকে সঙ্কর বলে, অর্থাৎ সনাতন প্রণালী ভঙ্গ ও ক্রমােন্নতির বিপরীত গতি বসুন্ধরাকে পাপে ও অত্যাচরে দগ্ধ করে ৷ যখন সেই পাপের ও অত্যাচারের অতিরিক্ত মাত্রায় মানুষের উন্নতির বিরােধিনী ধৰ্মদলনী আসুরিক শক্তিসকল স্ফীত ও বলযুক্ত হইয়া স্বার্থ, ক্রুরতা ও অহঙ্কারে দশদিক আচ্ছন্ন করে, অনীশ্বর জগতে ঈশ্বর সাজিতে আরম্ভ করে, তখন ভারাৰ্ত্ত পৃথিবীর দুঃখলাঘব করিবার মানসে ভগবানের অবতার কিম্বা বিভূতি মানবদেহে প্রকাশ হইয়া আবার ধর্মপথ নিষ্কণ্টক করেন ৷

সনাতন ধর্মের যথার্থ পালনের জন্য ব্যক্তিগত ধৰ্ম্ম, জাতিধর্ম, বর্ণাশ্রিত ধর্ম ও যুগধৰ্ম্মের আচরণ সর্বদা রক্ষণীয় ৷ কিন্তু এই নানাবিধ ধর্মের মধ্যে ক্ষুদ্র ও মহান্ দুই রূপ আছে ৷ মহান্ ধৰ্ম্মের সঙ্গে ক্ষুদ্র ধর্ম মিলাইয়া ও সংশােধন করিয়া অনুষ্ঠান করা শ্রেয়স্কর ৷ ব্যক্তিগত ধৰ্ম্ম জাতিধৰ্ম্মের অঙ্কাশ্রিত করিয়া আচরণ না করিলে জাতি ভাঙ্গিয়া যায় এবং জাতিধৰ্ম্ম লুপ্ত হইলে ব্যক্তিগত ধৰ্ম্মের ক্ষেত্র ও সুযােগ নষ্ট হয় ৷ ইহাও ধৰ্ম্মসঙ্কর – যে ধৰ্ম্মসঙ্করের প্রভাবে জাতি ও সঙ্করকারীগণ উভয়ে অতল নরকে নিমগ্ন হয় ৷ জাতিকে আগে রক্ষা করিতে হয়, তবেই ব্যক্তির আধ্যাত্মিক, নৈতিক ও আর্থিক উন্নতি নিরাপদে করা যায় ৷ বর্ণাশ্রিত ধৰ্ম্মকেও যুগধৰ্ম্মের ছাঁচে ঢালিয়া গড়িতে না পারিলে মহান্ যুগধর্মের প্রতিকূল গতিতে বর্ণাশ্রিত ধৰ্ম্ম চূর্ণ ও বিনষ্ট হইয়া সমাজও চূর্ণ ও বিনষ্ট হয় ৷ ক্ষুদ্ৰ সৰ্ব্বদা মহতের অংশ বা সহায়স্বরূপ, এই সম্বন্ধের বিপরীত অবস্থায় ধৰ্ম্মসঙ্করসস্তৃত মহান্ অনিষ্ট ঘটে ৷ ক্ষুদ্র ধৰ্ম্মে ও মহান্ ধর্মে বিরােধ হইলে ক্ষুদ্র ধৰ্ম্ম পরিত্যাগপূৰ্ব্বক মহান্ ধৰ্ম্ম অনুষ্ঠান মঙ্গলপ্রদ ৷

আমাদের উদ্দেশ্য সনাতন ধর্মের প্রচার ও সনাতন-ধৰ্ম্মাশ্রিত জাতিধর্ম ও যুগধৰ্ম্ম অনুষ্ঠান ৷ আমরা ভারতবাসী, আৰ্যজাতির বংশধর, আৰ্য্যশিক্ষা ও আৰ্য্যনীতির অধিকারী ৷ এই আৰ্য্যভাবই আমাদের কুলধৰ্ম্ম ও জাতিধৰ্ম্ম ৷ জ্ঞান, ভক্তি ও নিষ্কাম কৰ্ম আৰ্য্যশিক্ষার মূল; জ্ঞান, উদারতা, প্রেম, সাহস, শক্তি, বিনয় আৰ্য্যচরিত্রের লক্ষণ ৷ মানবজাতিকে জ্ঞান বিতরণ করা, জগতে উন্নত উদার চরিত্রের নিষ্কলঙ্ক আদর্শ দেওয়া, দুৰ্বলকে রক্ষা করা, প্রবল অত্যাচারীকে শাসন করা আর্যজাতির জীবনের উদ্দেশ্য, সেই উদ্দেশ্য সাধনে তাহার ধর্মের চরিতার্থতা ৷ আমরা ধর্মভ্রষ্ট, লক্ষ্যভ্রষ্ট, ধৰ্ম্মসঙ্কর ও ভ্রান্তিসঙ্কুল তামসিক মােহে পড়িয়া আৰ্য্যশিক্ষা ও নীতিহারা ৷ আমরা আর্যজাতি হইয়া শূদ্রত্ব ও শূদ্ৰধৰ্ম্মরূপ দাসত্ব অঙ্গীকার করিয়া জগতে হেয়, প্রবলপদদলিত ও দুঃখ-পরম্পরা-প্রপীড়িত হইয়াছি ৷ অতএব যদি বাঁচিতে হয়, যদি অনন্ত নরক হইতে মুক্ত হইবার লেশমাত্র অভিলাষ থাকে, জাতির রক্ষা আমাদের প্রথম কর্তব্য ৷ জাতিরক্ষার উপায় আৰ্য্যচরিত্রের পুনর্গঠন ৷ যাহাতে জননী জন্মভূমির ভাবী সন্তান জ্ঞানী, সত্যনিষ্ঠ, মানবপ্রেমপূর্ণ, ভ্রাতৃভাবের ভাবুক, সাহসী, শক্তিমান, বিনীত হয়, সমস্ত জাতিকে, বিশেষতঃ যুবকসম্প্রদায়কে সেইরূপ উপযুক্ত শিক্ষা, উচ্চ আদর্শ ও আৰ্য্যভাব-উদ্দীপক কৰ্ম্মপ্রণালী দেওয়া আমাদের প্রথম উদ্দেশ্য ৷ এই কাৰ্যে কৃতার্থ না হওয়া পর্যন্ত সনাতন ধর্মপ্রচার ঊষর ক্ষেত্রে বীজবপন মাত্র ৷

জাতিধৰ্ম্ম অনুষ্ঠানে যুগধর্মসেবা সহজসাধ্য হইবে ৷ এই যুগ শক্তি ও প্রেমের যুগ ৷ যখন কলির আরম্ভ হয়, জ্ঞান ও কর্ম ভক্তির অধীন ও সাহায্যকারী হইয়া স্ব স্ব প্রবৃত্তি চরিতার্থ করে, সত্য ও শক্তি প্রেমকে আশ্রয় করিয়া মানবজাতির মধ্যে প্রেমবিকাশ করিতে সচেষ্ট হয় ৷ বৌদ্ধধর্মের মৈত্রী ও দয়া, খ্রীষ্টধর্মের প্রেমশিক্ষা, মুসলমান ধৰ্ম্মের সাম্য ও ভ্রাতৃভাব, পৌরাণিক ধর্মের ভক্তি ও প্রেমভাব এই চেষ্টার ফলস্বরূপ ৷ কলিযুগে সনাতন ধর্ম মৈত্রী, কর্ম, ভক্তি, প্রেম, সাম্য ও ভ্রাতৃভাবের সাহায্য লইয়া মানব-কল্যাণ সাধিত করে ৷ জ্ঞান, ভক্তি ও নিষ্কাম কৰ্ম্ম গঠিত আৰ্য্যধৰ্ম্মে এই শক্তিসকল প্রবিষ্ট ও বিকশিত হইয়া বিস্তার ও স্বপ্রবৃত্তিপূরণের পথ খুঁজিতেছে ৷ শক্তিস্ফুরণের লক্ষণ কঠিন তপস্যা, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও মহৎ কৰ্ম্ম ৷ যখন এই জাতি তপস্বী, উচ্চাকাঙ্ক্ষী, মহৎ কর্মপ্রয়াসী হইবে, তখন বুঝিতে হইবে, জগতের উন্নতির দিন আরব্ধ হইয়াছে, ধৰ্ম্মবিরােধিনী আসুরিক শক্তির সঙ্কোচ ও দেবশক্তির পুনরুত্থান অবশ্যম্ভাবী ৷ অতএব এইরূপ শিক্ষাও বর্তমান সময়ে প্রয়ােজনীয় ৷

যুগধৰ্ম্ম ও জাতিধৰ্ম্ম সাধিত হইলে জগৎময় সনাতন ধর্ম অবাধে প্রচারিত ও অনুষ্ঠিত হইবে ৷ পূৰ্বকাল হইতে যাহা বিধাতা নির্দিষ্ট করিয়াছেন, যে সম্বন্ধে ভবিষ্যৎ উক্তি শাস্ত্রে লিখিত আছে, তাহাও কার্যে অনুভূত হইবে ৷ সমস্ত জগৎ আৰ্য্যদেশসস্তৃত ব্রহ্মজ্ঞানীর নিকট জ্ঞান-ধৰ্ম্ম-শিক্ষাপ্রার্থী হইয়া ভারতভূমিকে তীর্থ মানিয়া অবনত মস্তকে তাহার প্রাধান্য স্বীকার করিবে ৷ সেইদিন আনয়নের জন্য ভারতবাসীর জাগরণ, আৰ্য্য ভাবের নবােখান ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates