CWSA Set of 37 volumes
Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 of CWSA 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

Editions

ABOUT

All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.

Writings in Bengali and Sanskrit

Sri Aurobindo symbol
Sri Aurobindo

All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)

The Complete Works of Sri Aurobindo (CWSA) Writings in Bengali and Sanskrit Vol. 9 715 pages 2017 Edition
Bengali
 PDF   

বাংলা রচনা




বিবিধ রচনা




মানবসমাজের তিন ক্রম

মানুষের জ্ঞান ও শক্তি ক্রমবিকাশে নানারূপ ধারণ করে ৷ সেই বিকাশের তিনটী অবস্থা দেখি – শরীরপ্রধান প্রাণনিয়ন্ত্রিত প্রাকৃত অবস্থা, বুদ্ধিপ্রধান উন্নত মধ্য অবস্থা, আত্মপ্রধান শ্রেষ্ঠ পরিণতি ৷

শরীরপ্রধান প্রাণনিয়ন্ত্রিত মানুষ কাম ও অর্থের দাস ৷ জানে সহজ সৰ্ব্ব-সাধারণ ভাব ও প্রেরণা (instinct ও impulse), কামনায় কামনায়, অর্থে অর্থে সংঘর্ষ উঠিয়া ঘটনাপরম্পরায় সৃষ্ট যে ব্যবস্থা সুবিধাজনক বলিয়া প্রতিভাত হয়, তাহাকেই পছন্দ করে, এমন অল্প বা অনেক ব্যবস্থার সংহতিকে ধৰ্ম্ম বলে ৷ রুচি-পরম্পরাগত, কুলগত বা সামাজিক আচার এইরূপ নিম্ন প্রাকৃত অবস্থার ধর্ম ৷ প্রাকৃত মানুষের মােক্ষের কল্পনা থাকে না, আত্মার সন্ধান সে পায় নাই ৷ তাহার অবাধ শারীরিক ও প্রাণিক প্রবৃত্তির অবাধ লীলাক্ষেত্র একটী কল্পিত স্বর্গ ৷ তাহার ওইদিকে তাহার চিন্তা উঠিতে পারে না ৷ দেহপাতে স্বর্গগমনই তাহার মােক্ষ ৷

বুদ্ধিপ্রধান মানুষ কাম ও অর্থকে চিন্তাদ্বারা নিয়ন্ত্রিত করিতে সর্বদা সচেষ্ট ৷ কামের শ্রেষ্ঠ চরিতার্থতা কোথায়, জীবনের অনেক ভিন্নমুখী অর্থের মধ্যে কোন অর্থকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ও আদর্শ জীবনের স্বরূপ কি, – বুদ্ধিচালিত কি নিয়মের সাহায্যে সে স্বরূপ পরিস্ফুট, আদর্শ সিদ্ধ হয়, এই গবেষণায় সে ব্যাপৃত ৷ এই স্বরূপ, আদর্শ নিয়মের কোন একটী শৃঙ্খলাবদ্ধ অনুশীলনকে বুদ্ধিমান সমাজের ধর্ম বলিয়া স্থাপন করিতে ইচ্ছুক ৷ উন্নত মানসজ্ঞানে আলােকিত সমাজের নিয়ন্তা এইরূপ ধৰ্ম্মবুদ্ধিই ৷

আত্মপ্রধান মানুষ বুদ্ধি মন প্রাণ শরীরের অতীত গূঢ় আত্মার সন্ধান পাইয়াছে, আত্মজ্ঞানেই জীবনের গতি প্রতিষ্ঠা করে, – মােক্ষ, আত্মপ্রাপ্তি, ভগবানকে লাভ করা জীবনের পরিণতি বুঝিয়া আত্মপ্রধান মানুষ সেইদিকে তাহার সমস্ত গতি পরিচালিত করিতে চায়, যে জীবনপ্রণালী ও আদর্শ অনুশীলন আত্মপ্রাপ্তির উপযােগী, যাহাতে মানুষের মানবীয় ক্রমবিকাশের ও সেই উদ্দেশ্যের দিকে অগ্রসর হইবার সম্ভাবনা তাহাকেই সে ধৰ্ম্ম বলে ৷ শ্রেষ্ঠ সমাজ এইরূপ আদর্শ এইরূপ ধৰ্ম্ম দ্বারা চালিত ৷

প্রাণপৰ্ব্ব হইতে বুদ্ধিতে, বুদ্ধি হইতে বুদ্ধির অতীত আত্মায়, ধাপে ধাপে ভাগবত পৰ্ব্বতে মনুষ্যযাত্রীর উদ্ধৃগামী নিয়ত আরােহণ ৷

কোনও এক সমাজে একমাত্র ধারা দৃষ্ট হয় না ৷ প্রায় সকল সমাজেই এই তিন প্রকার মানুষ বাস করে, সেই মনুষ্য-সমষ্টির সমাজও মিশ্রজাতীয় হয় ৷

প্রাকৃত সমাজেও বুদ্ধিমান ও আত্মবান পুরুষ থাকে ৷ তাহারা যদি বিরল, সংহতিরহিত বা অসিদ্ধ [হন], [তবে] সমাজের উপর বিশেষ কিছু ফল হয় না ৷ যদি বহুসংখ্যককে সংহতিবদ্ধ করিয়া শক্তিমান সিদ্ধ হন], তবেই প্রাকৃত সমাজকে ৷ মুষ্টিতে ধরিয়া তাহার কতকটা উন্নতি সাধন করিতে সক্ষম হন ৷ তবে প্রাকৃতজনের আধিক্যের দরুণ বুদ্ধিমানের বা আত্মবানের ধর্ম প্রায়ই বিকৃত হয়, বুদ্ধির ধর্ম অর্ধমৃত হইয়া পড়ে, conventionএ পরিণত হইয়া আত্মজ্ঞানের ধৰ্ম্ম রুচি ও বাহ্যিক আচারের চাপে ক্লিষ্ট, প্লাবিত, প্রাণহীন, স্বলক্ষ্যভ্রষ্ট – এই পরিণাম সৰ্ব্বদা দেখি ৷

বুদ্ধির প্রাবল্য যখন হয়, বুদ্ধি সমাজের নেতা সাজিয়া অবােধ রুচি ও আচারকে ভাঙ্গিয়া বদলাইয়া মানসজ্ঞানে আলােকিত ধর্ম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে], দেখি ৷ পাশ্চাত্যের জ্ঞানের আলােক (enlightenment) সাম্য স্বাধীনতা মৈত্রী এই চেষ্টার একটী রূপ মাত্র ৷ সিদ্ধি অসম্ভব ৷ আত্মজ্ঞানের অভাবে বুদ্ধিমানও প্রাণ-মন-শরীরের টানে নিজের আদর্শ নিজে বিকৃত করে, নিম্নপ্রকৃতির হাত এড়ান কঠিন ৷ মধ্য অবস্থা, মধ্য অবস্থায় স্থায়িত্ব নয় – হয় নীচের দিকে পতন, নয় উচ্চের দিকে উঠা, এই দুই টানে বুদ্ধি দোদুল্যমান ৷ আত্মবান আত্মজ্ঞানের জ্যোতিঃস্ফুরণে রুচি ও আচারকে উচ্চ ধৰ্ম্মের উপযুক্ত সহায় করিয়া, উচ্চ ধৰ্ম্মে পরিণত করিতে সচেষ্ট ৷ তাহারও চেষ্টায় অনেক বিপদের সম্ভাবনা ৷ নিম্নের টান অতি বড় টান, প্রাকৃতজনের নিম্নপ্রকৃতির সঙ্গে বােঝাপড়া করিতে গেলে আত্মপ্রধান সমাজেরও অধােগতির আশঙ্কা ৷


[নিম্নলিখিত অংশটি শ্রীঅরবিন্দের নােট বইয়ে উপরের রচনাটির ঠিক পূর্বে লিখিত আছে ৷]

এই জ্ঞান ও শক্তি সমাজকে চালাইবে, সমাজকে গঠন করিবে, প্রয়ােজন মত তাহার আকার সাধারণ নিয়ম বদলাইয়া দিবে ৷ এ জীবনের স্ফুরণে জ্ঞান ও শক্তির বিকাশের সঙ্গে সমাজেরও রূপান্তর অবশ্যম্ভাবী ৷ মানুষের জীবনের প্রকৃত নিয়ন্তা ভগবদ্দত্ত জীবন্ত জ্ঞান ও শক্তি, যাহার উত্তরােত্তর বৃদ্ধি ক্রম-বিকাশের উদ্দেশ্য ৷ সমাজ উদ্দেশ্য হইতে পারে না, সমাজ যন্ত্র ও উপায় ৷ সমাজ যন্ত্রের মধ্যে সহস্র বন্ধনে বদ্ধ মানুষকে পেষণ করায় নিশ্চলতা ও অবনতিই অনিবাৰ্য্য ৷

মনুষ্যের ভগবৎপ্রাপ্তি, ভাগবত আত্মবিকাশ জীবনের লক্ষ্য ৷ সেই লক্ষ্যের দিকে যারা অগ্রসর হইবে, ভগবৎ-জ্ঞানকেই যেমন ব্যষ্টির তেমনই সমষ্টির জীবনের নিয়ামক করিতে হইবে ৷ বুদ্ধিকে জ্ঞানের স্থানে বসাইতে নাই ৷ প্রাচীন আৰ্য্য জাতির সমাজ মুক্ত স্বাধীন সমাজ ছিল, তিলব্ধ ভাগবত জ্ঞানে প্রতিষ্ঠিত কয়েকটি মুখ্য তত্ত্ব লইয়া গঠিত ৷ তাহার উপর কয়েকটি অত্যল্প বিশেষ নিয়ম শ্রৌত ধৰ্ম্মসূত্রে সংকলিত, আৰ্য্যধৰ্ম্মের মুখ্য তত্ত্বের যেগুলিতে সময়ােপযােগী সামাজিক আকৃতি দেওয়া হয় ৷ যেমন মানুষের বুদ্ধির আধিপত্য বাড়িতে লাগিল, ইহাতে সেই বুদ্ধির বাঁধা পারিপাট্যের স্বাভাবিক স্পৃহা আর তৃপ্ত হয় না ৷ নিয়ম ছিল যে পরিমাণে যে শাস্ত্র শ্রুতির পথে চলে, কেবল সেই শাস্ত্র সেই পরিমাণে গ্রাহ্য ৷ বিপুলাকার স্মাৰ্ত্ত শাস্ত্র রচিত হয় ৷ তবে আৰ্য্যেরা এই কথা ভুলেন নাই যে শ্রুতিই আসল ৷ স্মৃতি গৌণ, শ্রুতি সনাতন, স্মৃতি সময়ােপযােগী ৷ সেইজন্যে এই বিস্তারে বিশেষ কোন ক্ষতি হয় নাই ৷ পরিশেষে, বৌদ্ধ বিপ্লবের অবসানের পরে শ্রুতিকে একেবারে ভুলিয়া শ্রুতিকে সন্ন্যাসেরই উপায় কল্পনা করিয়া শাস্ত্রকে অযথা প্রাধান্য দেওয়া হয় ৷ দৃঢ় শাস্ত্রের বন্ধন মানুষের সকল অঙ্গের স্বাধীন সঞ্চালন বন্ধ করিয়া নিশ্চলভাবে কোন রূপে বাঁচাই সমাজের লক্ষ্য হইয়া যায় ৷ মানুষের স্বাধীন আত্মার একমাত্র উপায় রহিল সমাজকে ত্যাগ করিয়া সন্ন্যাস গ্রহণ ৷

মনুষ্য বুদ্ধি ভাগবত বিকাশে গৌণ উপায়, আসল পরিচালক নয় ৷ ভারতীয় সমাজের ইতিহাসে চারিটী পর্যায় দেখিয়া ইহা বােঝা যায় ৷









Let us co-create the website.

Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.

Image Description
Connect for updates