All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
ভূপেন্দ্রনাথকে জেলে দিয়া ফিরিঙ্গী সরকার ভাবিয়াছিল এইবার তাহারা যুগান্তরের উত্থানশক্তি একেবারে রহিত করিয়া দিয়াছে ৷ কিন্তু যুগান্তর আবার বাহির হইল ৷ মরিল না ত বটেই, অধিকন্তু আবার ভবিষ্যতে যে মরিবে তাহার আশা পৰ্য্যন্ত দিল না ৷ ইহাতে সরকারের ত রাগ হইবারই কথা!
ইংলিশম্যান ও ডেলি নিউজ ‘হা হুতাশ করিয়া শেষে আশা দিল – “ভয় নাই; ছােটলাট আবার যুগান্তর সম্পাদককে জেলে দিবার ব্যবস্থা করিতেছেন ৷” ছােটলাট নাকি বলিয়াছেন যে, তিনি যুগান্তরের কতগুলা সম্পাদক আছে একবার দেখিয়া লইবেন; সব কটাকে জেলে পাঠাইবেন ৷
যুগান্তরের আবার সম্পাদক কে? যুগান্তর ত জাতীয় ভাবসমষ্টি মাত্র ৷ লােকের প্রাণের ভিতর দিয়া যে ভাবস্রোত ছুটিয়াছে তাহার এক একটা কণা মাত্র যুগান্তরে আসিয়া ধাক্কা লাগে ৷ সম্পাদক ত তাহা অভিব্যক্তির যন্ত্র মাত্র ৷ যন্ত্রকে ধরিলে যন্ত্ৰী ত ধরা পড়ে না; যন্ত্ৰী যে অশরীরী ৷ ঐ যে পালে পালে উন্মাদ বালকের দল “বন্দেমাতরম্” মন্ত্রে মুগ্ধ হইয়া অজানা লক্ষ্যের দিকে ছুটিয়াছে, ঐ যাহারা নৃমুণ্ড মালিনীর খপর তলে আত্মবলিদান দিয়া অমরত্ব লাভের জন্য উৎসুক – তাহারাই দেশে যুগান্তর আনিবে; তাহারাই যুগান্তরের সম্পাদক ৷ গৰ্ব্বস্ফীত অন্ধ! তাহাদের সংখ্যা জানিতে চাও! একদিন জানিবে ৷ তাহাদের সকলকে কারাগারে পরিতে পার এতবড় কারাগার ত আজও তােমরা গাঁথিয়া তুলিতে পার নাই ৷
আপনাকে আপনি যে গােলাম না সাজায়, তাহাকে গােলাম সাজাইতে পারে এতবড় বীর এ ত্রিভুবনে কেহ নাই ৷ তুমি আমায় কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিয়া তােমার অধীনতা স্বীকার করাইবে; আমি যদি এ দুঃখ নয় মা দয়া তােমার বলিয়া সহাস্য মুখে কারাগৃহে প্রবেশ করি – তবেই ত তােমার দমনের চেষ্টা ব্যর্থ! তুমি আমায় ফাসীকাঠে ঝুলাইবে? – আমি মরিবার সময়েও ক্ষমতা তুচ্ছ ৷ করিয়া মরিব ৷ একদিকে মাতৃমন্ত্র অপরদিকে ইংরাজের পরাধীনতা স্বীকার করাইতে চাও! মােগল সম্রাট যখন একদিন তােমাদেরই মত মদগৰ্ব্বে অন্ধ হইয়া শিখগুরুকে ধৰ্ম্মত্যাগ করিতে বলিয়াছিল, তখন শিখগুরু হাসিতে হাসিতে আপনার মাথা দিয়াছিলেন; ধৰ্ম্ম দেন নাই ৷ আমরাও তাহাই করিব ৷ ভারতে আবার ধর্মের বন্যা আসিয়াছে ৷ মােগল সিংহাসন যেখানে ভাসিয়া গিয়াছিল, তােমার পলাশীতে কড়ান সিংহাসন সেখানে ভাসিয়া যাইবে ৷ আমরা রাখি বলিয়া তােমরা আছ, বাঁচাই বলিয়া তােমরা বাঁচ ৷ আমরা তােমাদের মুখে অন্ন তুলিয়া দিই বলিয়াই তােমরা আমাদের অনশনক্লিষ্ট করিতে পার; আমরা নির্জীব সাজিয়া থাকি বলিয়াই তােমরা আমাদের উপর পৈশাচিক অত্যাচার করিতে সাহসী হও; আমরা তােমাদের মাথায় তুলিয়া রাখিয়াছি বলিয়াই তােমরা সত্যই মাথার মণি; যেদিন নিষ্ঠীবনের মত তােমাদের ঘৃণার সহিত দূরে নিক্ষেপ করিব – সেদিন তােমরা নিষ্ঠীবন অপেক্ষা অধিক মূল্যবান নহ ৷ আমরা ভ্রান্তির ঘােরে মিথ্যার পূজায় প্রবৃত্ত বলিয়াই মিথ্যা আজ সত্যের আসনে বসিতে সাহস পাইয়াছে ৷ পরমহংসদেব বলিতেন – মায়াকে মায়া বলিয়া চিনিলে মায়া পলাইয়া যায় ৷ যেদিন আমরা বুঝিব যে আমরা কতগুলাে অন্নদাস, ভবঘুরেকে ধরিয়া স্বহস্তে তাহাদের কপালে রাজটীকা পরাইয়া দিয়াছি, যে দিন বুঝিব আমরা বাস্তবিক কাণা নহি, শুধু স্বেচ্ছায় চোখ বুজিয়া অন্ধকার দেখিতেছি মাত্র, যেদিন বুঝিব আমরা দুর্বল নহি, অপারগ নহি, শুধু আলস্যের ঘােরে, অজ্ঞানের ঘােরে পড়িয়া আছি মাত্র – সেইদিন আমাদের দুর্দশার নিবৃত্তি ৷ সে দিন আর “আমরা স্বাধীনতার উপযুক্ত নহি” বলিয়া জগতের সম্মুখে হাস্যাস্পদ হইতে ছুটিব না ৷ অনন্ত শক্তির আধারভূতা, রন্ধ্রে রন্ধ্রে চৈতন্যময়ী আমাদের জননী – আমরা আবার কাহার দাস?
প্রতিজ্ঞা কর দেখি আর মিথ্যার সংস্পর্শে আসিব না, ইংরাজের বিশ্ববিদ্যালয়-রূপ যাদুগৃহে পাণ্ডিত্যের তমা পাইয়া ভেড়া বনিয়া থাকিব না; ছােটলাট বড়লাট বাহির হইলে অভিনন্দন পত্র লইয়া চিরদাসত্ব স্বীকার করিবার জন্য তাহাদের পিছু পিছু ছুটিব না – তখন মায়ের যথার্থ স্বরূপ বুঝিবে; দেখিবে মা চিরস্বাধীনা ৷ একবার চোখের ঠুলি খুলিয়া ফেলিয়া মায়ের অভয়পদ দেখ দেখি; বুঝিতে পারিবে এ ইংরাজ রাজত্ব একটা প্রকাণ্ড মিথ্যা মায়াপুরী ৷
একথা বলিলে ইংরাজ রাগিয়া উঠিবে; কিন্তু আমাদের সহিত ইংরাজের মিলনের ত কোন সম্ভাবনাই নাই ৷ একস্থানে বসিয়া সত্য মিথ্যা উভয়ে ত নির্বিবাদে ঘর করিতে পারে না ৷ ইংরাজের বিরােধ ধৰ্ম্মের সহিত – সত্যের সহিত ৷ আর যাহার সত্যের সহিত বিরােধ তাহার মরণ অবশ্যম্ভাবী ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.