All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
আমাদের এই ভারতজননী যে জ্ঞানের, ধর্মের, সাহিত্যের শিল্পের অক্ষয় আকর ছিল, তাহা পাশ্চাত্য ও প্রাচ্য সকল জাতিই স্বীকার করিতে বাধ্য হইয়াছে ৷ কিন্তু পূর্বে য়ুরােপের এই ধারণা ছিল যে, আমাদের যেমন উচ্চ দরের সাহিত্য ও শিল্প ছিল, ভারতীয় চিত্রবিদ্যা তেমন উৎকৃষ্ট ছিল না, বরং সে জঘন্য সৌন্দর্যহীন ছিল ৷ আমরাও পাশ্চাত্য জ্ঞানে জ্ঞানী হইয়া চোখে য়ুরােপীয় চশমা পরিয়া ভারতীয় চিত্র ও স্থাপত্য দর্শনে নাক সিট্ৰাইয়া নিজ মার্জিত বুদ্ধি ও নির্দোষ রুচির পরিচয় দিতাম ৷ আমাদের ধনীদের গৃহ গ্রীক প্রতিমা ও ইংরাজী ছবির cast বা নির্জীব অনুকরণে ভরিয়া গেল, সাধারণ লােকের বাড়ীর দেওয়াল জঘন্য তৈলচিত্রে শােভিত হইতে লাগিল ৷ যে ভারতজাতির রুচি ও শিল্পচাতুর্য জগতে অপ্রতিম ছিল, বর্ণ ও রূপ গ্রহণে যে ভারতজাতির রূচি স্বভাবতঃ নির্ভুল ছিল, সেই জাতির চোখ অন্ধ, বুদ্ধি ভাবগ্রহণে অক্ষম, রুচি ইতালীয় কুলী-মজুরের রুচি হইতে অধম হইল ৷ রাজা রবিবৰ্ম্মা ভারতের শ্রেষ্ঠ চিত্রকর বলিয়া বিখ্যাত হইতে পারিলেন ৷ সম্প্রতি কয়েকজন রসজ্ঞ ব্যক্তির উদ্যমে ভারতবাসীর চোখ খুলিতেছে, নিজের ক্ষমতা, নিজের ঐশ্বৰ্য্য বুঝিতে আরম্ভ করিয়াছে ৷ শ্ৰীযুত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অসাধারণ প্রতিভার প্রেরণায় অনুপ্রাণিত হইয়া কয়েকজন যুবক লুপ্ত ভারতীয় চিত্রবিদ্যার পুনরুদ্ধার করিতেছেন, তাহাদের প্রতিভার গুণে বঙ্গদেশে নূতন যুগের সূচনা হইতেছে ৷ ইহার পরে আশা করা যায় যে, ভারত ইংরাজের চোখে না দেখিয়া নিজ চোখে দেখিবে, পাশ্চাত্যের অনুকরণ পরিত্যাগ করিয়া নিজ প্রাঞ্জল বুদ্ধির উপর নির্ভর করিয়া আবার চিত্রিত রূপ ও বর্ণে ভারতের সনাতন ভাব ব্যক্ত করিবে ৷
ভারতীয় চিত্রবিদ্যার উপর পাশ্চাত্যের বিতৃষ্ণার দুই কারণ আছে ৷ তাহারা বলেন, ভারতীয় চিত্রকরগণ natureএর অনুকরণ করিতে অক্ষম, ঠিক মানুষের মত মানুষ, ঘােড়ার মত ঘােড়া, গাছের মত গাছ না আঁকিয়া বিকৃত মূৰ্ত্তি করেন, তাহাদের perspective নাই, ছবিগুলাে চ্যাপ্টা ও অস্বাভাবিক বােধ হয় ৷ দ্বিতীয় আপত্তি, এই সকল ছবিতে সুন্দর ভাব ও সুন্দর রূপের নিতান্ত অভাব ৷ শেষােক্ত আপত্তি আর য়ুরােপীয়ের মুখে শুনা যায় না ৷ আমাদের পুরান বুদ্ধমূর্তির অতুল-নীয় শান্তভাব, আমাদের পুরাতন দুর্গামূৰ্ত্তিতে অপার্থিব শক্তির প্রকাশ দেখিয়া য়রােপীয়গণ প্রীত ও স্তম্ভিত হন ৷ যাঁহারা বিলাতে শ্রেষ্ঠ সমালােচক বলিয়া বিখ্যাত তাঁহারা স্বীকার করিয়াছেন যে, ভারতীয় চিত্রকর য়ুরােপের perspective না জানুন, ভারতের যে perspectiveএর নিয়ম তাহা অতি সুন্দর, সম্পূর্ণ ও সঙ্গত ৷ ভারতীয় চিত্রকর ও অন্যান্য শিল্পী যে ঠিক বাহ্য জগতের অনুকরণ করেন না, ইহা সত্য ৷ কিন্তু সামর্থ্যের অভাবে নহে, তাহাদের উদ্দেশ্য বাহ্য দৃশ্য ও আকৃতি অতিক্রম করিয়া অন্তঃস্থ ভাব ও সত্য প্রকাশ করা ৷ বাহ্য আকৃতি এই আন্তরিক সত্যের আবরণ, ছদ্মবেশ – সেই ছদ্মবেশের সৌন্দর্য্যে মগ্ন হইয়া আমরা যাহা ভিতরে লুকাইয়া রহিয়াছে, তাহা গ্রহণ করিতে পারি না ৷ অতএব ভারতীয় চিত্রকরগণ ইচ্ছা করিয়া বাহ্য আকৃতি বদলাইয়া আন্তরিক সত্য প্রকাশ করিবার উপযােগী করিলেন ৷ তাঁহারা কি সুন্দরভাবে প্রত্যেক অঙ্গে এবং চতুর্দিকের দৃশ্যে, আসনে, বেশে, মানসিক ভাব বা ঘটনার অন্তর্গত সত্য প্রকাশ করেন, তাহা দেখিয়া চমৎকৃত হইতে হয় ৷ ইহাই ভারতীয় চিত্রের প্রধান গুণ, চরম উৎকর্ষ ৷
পাশ্চাত্য বাহিরের মিথ্যা অনুভব লইয়া ব্যস্ত, তাহারা ছায়ার ভক্ত; প্রাচ্য ভিতরের সত্য অনুসন্ধান করেন, আমরা নিত্যের ভক্ত ৷ পাশ্চাত্য শরীরের উপাসক, আমরা আত্মার উপাসক ৷ পাশ্চাত্য নাম-রূপে অনুরক্ত, আমরা নিত্যবস্তু না ৷ পাইয়া কিছুতেই সন্তুষ্ট হইতে পারি না ৷ এই প্রভেদ যেমন ধৰ্ম্মে, দর্শনে, সাহিত্যে – তেমনই চিত্রবিদ্যায় ও স্থাপত্যবিদ্যায় সর্বত্র প্রকাশ পায় ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.