All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
কি এ ব্রহ্মাণ্ড ফুড়ি প্রচণ্ড স্ফুরণ ৷ বহি প্রাণে দিন রাত ঋতু সংবৎসর বুঝেছি তােমার ভাব, দেখেছি শরীর ৷ কে আত্মা তােমার? কোন্ অদৃষ্টের বলে ঘুর মহাচক্রে সদা ঘুরাও জগতী ৷ বিচিত্র আকাশ যবে কিরণ-প্রপাতে মায়াপুরী রচয়িত্ৰী নিৰ্ম্মল সন্ধ্যার, ভ্রমেছি নদীর তীরে কলকলস্বর সমাকুল প্রাণগীতি তরঙ্গ-বীণায় মিলাইতে হৃদিতারে ৷ অনন্ত রজনী নামিয়া নিঃশব্দ পদে মকটের ছায়া ৷ বিস্তারি গগনপটে, উড়ায়ে অঞ্চল মসৃণ আঁধার পাতি দীর্ঘ ধরাতলে, টানিয়া গভীর কোলে শান্তিস্তব্ধ প্রাণী সুষুপ্তির অভিনেত্রী থামাইল আসি জীবনের কোলাহল অন্তহীন মৌনে ৷ চিন্তামগ্ন নেতারা বিপুল শয্যায় আকাশ-ব্রহ্মের ধ্যানে নিলীন ভৈরবী কৃষ্ণকায়া জগন্মাতা সমাধিস্থ ভবে ৷ নীরবতা-মধুভােজী তারকার পাল দীপ্তির মৌমাছি সম উড়ে আসে নভে ৷ ঢালিতে প্রাণীর মৰ্ম্মে আনন্দ কিরণ সুশীতল রভসের সমুজ্জ্বল ভাণ্ড ভেসে উঠে শশী মণি-খচিত নিশায় ৷ স্বল্প আলােকিত জ্যোৎস্না-প্লত অন্ধকারে মানবের ক্ষুদ্র প্রাণ এ অসীম প্রাণে ডুবাইয়া শুনিয়াছি নীরবের গান ৷ বাজিল অন্তরে যবে মাধুৰ্য্য-স্পন্দন ভাঙ্গিল সমাধিঘাের স্তব্ধ যােগিনীর ৷ আলােক-বসন-স্পর্শে জাগিল কাহার ৷ কার দূর পদধ্বনি পশিল মরমে ৷ পরিতৃপ্ত শূন্যতার ঘনস্তর বিধি উষা উঠিয়াছে হাসি রঞ্জিত গগনে, মনােহর স্মিত-আঁখি বালিকা যেমন, উদ্দাম উল্লাস পদে হাসি ভরা প্রাণ ৷ পিতার ভবনে নাচি মুক্ত আঙিনায় ৷ জীবনের হর্ষ যে মঞ্জু মিষ্ট ডাকে জানাইতে পরস্পরে পলকে পলকে ডাকিতেছে পক্ষীকুল সুমধুর তানে, সহস্র উন্মত্ত শাখা, সবুজ বসন নাচিতেছে তরুরাজী আলােক-উৎসবে ৷ সেই আলােক-উৎসবে অন্তরালে ঢাকা স্বর্গসােমপানে মত্ত ঋষির আনন্দের বেদগানে ৷ জানিলাম কি গভীর আনন্দফুরণে ফুটিয়াছে বিশ্বপদ্ম অনন্তের স্রোতে ৷ নিদ্রিত মধ্যাহ্ন যবে বিশ্বকক্ষে একা সুনীল আকাশ পরে হেলাইল শির, জ্যোতির্ময় পূর্ণতার শয়ন শিবিরে বিশ্বমঙ্গলের গীতি গুপ্ত মহিমায় ৷ মন্থর বিশাল ধ্বনি ত্রিকালের কণ্ঠে মহামন্ত্র বাজিয়াছে জগৎ-আত্মার ৷
মিলাইয়া তুষ্টপ্রাণে অগণন ভাব চিরশান্ত উচ্চকৰ্মী দেখিতেছে কেহ মহাকাব্যে আনন্দিত সনাতন কবি পূর্ণছন্দ সৃষ্টি তার ৷ গভীর সন্তোষে সান্তে বহি সে অসীম অপরূপ রূপে ঘুরিছে অনন্ত বিশ্ব প্রভু পদপ্রান্তে ৷ লব্ধতপার কিরণের প্রচণ্ড প্রসারে গগনের চূড়া হতে মানিতে বিধান ৷ নামিয়াছে সূৰ্য্য যবে বীর মহিমায়, অবসানে ভরাশান্তি লভিয়াছি চিত্তে, জীবনসুধার পান শূন্য করি পাত্র, ত্রীয়ের মহাগীত পরিতুষ্ট কর্ণে ৷ এইরূপ প্রতিদিন অদম্য কৌতুকে একদিনে বাঁধি যেন অনন্ত সময়, অল্পেতে সর্বস্ব ঢালি নিজমূৰ্ত্তি আঁক, রূপস্রষ্টা প্রাণশিল্পী ৷ নূতন নূতন ৷ পুরাতন সেই চক্র ভাসে চিত্তপটে ৷
নিজ আত্মা নানা ভাবে ভােগ কর ঋষি ৷ সংবৎসর তব আত্মা ৷ হরিৎ বসনা পৃথিবী নর্তকী তব সূৰ্য্যে করি কেন্দ্র ঘুরে প্রেমাবেশে সদা উন্মত্ত ঘুরণে, কৃষ্ণকরস্পর্শে মত্ত গােপী যেন ঘুরে অনন্ত উদ্দাম নৃত্যে অফুরন্ত হর্ষ, প্রেমাবেশে প্রিয়মুখে স্থাপিত নয়ন, তারে জানে, জানে প্রেম, নাহি কিছু আর ৷ সেই নৃত্যকলা শিখি ভ্রমিছে জীবন নৃত্যের মণ্ডলাকৃতি তব চক্রে, প্রভু ৷ বসন্ত কোকিলরবে একতানা সুরে অখিল মাধুৰ্য্য ঢালি কুসুম দোলায় অনন্ত যৌবনে মত্ত দুলিয়ে শরীর ডাকিছে উল্লাস ভরে ৷ অপ্সরার হাসি আধ দেখা ধরাধামে বৃক্ষ-অন্তরালে রক্তশ্বেত পুষ্পচ্ছলে মৃদু পরিহাসে টানে যেন প্রাণ সদা তার সঙ্গে যেতে অচেনা অনন্ত রাজ্যে মনের ওপারে ৷ গ্রীষ্ম যবে রাজবেশে, মহাসমারােহ, স্বর্ণদীপ্তি পরিধান, বনে ক্ষেতে মাঠে ছড়ায়ে উজ্জ্বল সেনা দমিছে পৃথিবী, বিজিত বন্দিনী তার নত প্রভুপদে নিঃশ্বসি রুদ্রমনে উগ্র সুখে ভরা তপ্ত নভঃস্থলে চাহে শায়িতা পৃথিবী ৷ বিদ্যুৎ নয়নপাতে খুঁজি বধ্যপ্রাণী বর্ষা দৈত্যক্রোধ চিত্তে ছুটে বর্জনাদে ৷ হাহাকার রব শুনি আক্রান্ত বনের নৃত্য করে ধমনীতে প্রচণ্ড বিলাস ৷ বৃষ্টির প্লাবনশব্দে হরষিত কর্ণ ৷ এই আবেগের মধ্যে জাগিছে বাসনা মিশিতে প্রবল আত্মা, নৃত্যসহচর ঝটিকার সমপ্রাণ ঝঞাবায়ু সাজি এ নিষ্ঠুর অত্যাচারে অত্যাচারী হতে, যুঝি অসীমের দিকে করিতে প্রয়াণ ৷ অবসন্ন ধরাধামে ধীরে অগ্রসর ৷ শরৎ শান্তির দূতী দেখা দেয় পরে পদ্মনেত্রে মহাসি চারু পদক্ষেপ অলস নাজুক শুভ্র মৃদু গৌর পদে ৷ ফুটায় শান্তিকুসুম ক্লান্ত প্রাণে পশি হেমন্তের শীতবক্ষে লুটিয়া প্রকৃতি জুড়ায় শিথিল গাত্র মহা পরিতােষে ৷ সরসীর জলে যেন ৷ ক্লিন্নবস্ত্র স্নিগ্ধগাত্র শিশির পরশে স্নাত ধৌত ধরা উঠে কম্পিত অধর ৷ হাসে দীপ্ত সূৰ্য্যকরে এই ছয় সুরে শেষ করি তব চিন্তা পুনঃ সেই চক্রে, অশ্রান্ত দেবতা কাল, ঘুরাও জগতী ৷ অফুরন্ত যুগ গেল, অফুরন্ত যুগ এসে যাবে, বসি সদা মনের উল্লাসে যাহা ভাঙ্গ তাহা গড় পুনঃ তুষ্ট মনে ৷ দীর্ঘ কাল মানুষের কর্মধ্বংসকারী শতযুগ সমাবেশে মাপা যেই কাল, সনাতন দেবতার আঁখির নিমেষ ৷ শ্রান্ত হয় নর দুঃখে, শ্রান্ত হয় সুখে ৷ শ্রান্ত নহ কভু তুমি ৷ ভেঙ্গে যায় দেহ অল্প কর্মে, ভেঙ্গে যায় মন অল্প দুঃখে ৷ মরণ বিশ্রাম তার আসি বন্ধু সম ৷ মহৎ বৈরাগ্য তার চরম শরণ ৷ কোথায় বৈরাগ্য তব ৷ পুরাতন ভাব নূতন নূতন সদা আনন্দ-আত্মায় কর 1 কে তব খেলার যােগ্য সহচর ছিল এই বিশ্বধামে কভু ৷ অনাসক্ত মনে, সৃষ্টি কর মহােল্লাসে ধ্বংস কর হর্ষে ৷ হাসি-মেশা দয়া তব, কবি যেন দেখে কাব্য তব জীবসৃষ্টি সুখ দুঃখ রচে করুণ রসের প্রীতি ভােগ করে চিত্তে ৷ সংহারে আনন্দ তব, রুদ্র মহাকাল ৷ জগৎ লেহন করি জ্বলন্ত বদনে ৷ গ্রাস কর বিশ্ব আত্মা অতৃপ্ত ক্ষুধায় ৷ মানুষ খেলানা তব নাচি দুইক্ষণ অচেনা ধরায় এসে অল্পদিনে অচেনায় কোথা গেল চলে ৷ হাসিকান্না ডুবে তার অনন্তের রােলে লুপ্ত তার পদচিহ্ন ধরার ধূলায় ৷ তুমি কিন্তু, তুমি, ওহে সুন্দর ভীষণ হাস সদা মহােল্লাসে গড়ি ভাঙ্গি সুখে ৷ আনন্দের তীব্র স্ফৰ্ত্তি অতল হৃদয়ে ৷ পুষিয়া খেলিতে বস, বালক ঈশ্বর ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.