All writings in Bengali and Sanskrit including brief works written for the newspaper 'Dharma' and 'Karakahini' - reminiscences of detention in Alipore Jail.
All writings in Bengali and Sanskrit. Most of the pieces in Bengali were written by Sri Aurobindo in 1909 and 1910 for 'Dharma', a Calcutta weekly he edited at that time; the material consists chiefly of brief political, social and cultural works. His reminiscences of detention in Alipore Jail for one year ('Tales of Prison Life') are also included. There is also some correspondence with Bengali disciples living in his ashram. The Sanskrit works deal largely with philosophical and cultural themes. (This volume will be available both in the original languages and in a separate volume of English translations.)
নিরীহহা নাতে মহৎ
যে দেশেই হউক, বা যে জাতিরই হউক, জাতীয় অভ্যুত্থানের উদ্যোগ যখন আরম্ভ হয়, তখন তজ্জন্য একটী বৃহৎ ও উদার রাজনীতিক আদর্শ চাই ৷ মহাত্মা রুসাের সাম্যনীতি প্রচার না হইলে ফরাসী রাষ্ট্রবিপ্লবের আবেগময়ী উচ্চাকাঙ্ক্ষা অর্ধমৃত ফ্রান্সকে জাগাইয়া সমস্ত ইয়ােরােপখণ্ডকে প্লাবিত করিতে পারিত না ৷ মনুষ্যমাত্রের স্বভাবজাত স্বত্ব প্রাপ্তির জন্য আমেরিকা লালায়িত না হইলে মার্কিন যুক্তরাজ্য কখনও সৃষ্ট হইত না ৷ ঋষিতুল্য ম্যাজিনি উচ্চ আশা ও উদার আদর্শ নব্য ইতালীর হৃদয়ে সঞ্চারিত না করিলে সেই পতিত জাতি কখনও চিরদাসত্বের বন্ধন কাটিতে পারিত না ৷ অনুচ্চ ও সঙ্কীর্ণ আদর্শ, ক্ষুদ্র আশা, ক্ষুদ্র উদ্দেশ্য, তুচ্ছ ৷ সাবধানতা ও ভীরুতা এবং অদূরদর্শী ও সাহসপরায়ুখ নেতাদল, – এ সকল হেয় উপাদান কখনও জাতীয় শক্তি গড়িবার উপযুক্ত সামগ্রী হইতে পারে না ৷ এরূপ ক্ষুদ্র উপাদান লইয়া কোনও জাতি কোনও কালে মহত্ত্বের উচ্চ সােপানে উঠে নাই ৷ নিরীহাে নাশ্নতে মহৎ, – যাহার আশা ক্ষদ্র, সে কখনও মহত্ত্ব ভােগ করে না, – মহাভারতের এই উক্তি রাজনীতিবিদদের সর্বদা স্মরণ করা উচিত ৷
ছেলেমানুষী ও গােলামির অভ্যাস
আমরা শতাব্দীকাল ক্রমাগত পাশ্চাত্য সভ্যতার সংঘর্ষণে পড়িয়া জাতীয় উন্নতি ও রাজনীতিক স্বত্বপ্রাপ্তির চর্চা করিতেছি ৷ কার্য্যে কিন্তু উন্নতি না হইয়া অবনতিই হইয়াছে ৷ রাজনীতিক স্বত্বপ্রাপ্তি দূরের কথা, আমাদের রাজনীতিক জীবন, বাণিজ্য, বিদ্যা, চিন্তাশক্তি ও ধৰ্ম্মর্ভব সবই শৃঙ্খলাবদ্ধ হইয়া পড়িয়াছে ৷ অন্নের জন্য, পরিধেয় বস্ত্রের জন্য, শিক্ষার জন্য, রাজনীতিক স্বত্বের জন্য এবং বুদ্ধিবিকাশ ও চিন্তাপ্রণালীর জন্য আমরা পরমুখাপেক্ষী ৷ ইংরাজ আমাদিগকে কয়েকটী খেলনা দিয়াছে বলিয়া আমাদিগের কৃতজ্ঞতার সীমা নাই ৷ যে জাতির মন ও শরীর উভয়ই পরাধীন, সে জাতির পক্ষে রেল, টেলিগ্রাফ, ইলেকট্রিসিটি, মনিসিপালিটি, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় মহাসমিতি প্রভৃতি বিজ্ঞানের যত আবিষ্কার, এবং পাশ্চাত্য রাজনীতিক জীবনের যত সামগ্রী, সবই খেলনা মাত্র ৷ লর্ড রিপণ বা মিঃ মরলী আমাদিগকে যতই স্বত্ব দিন না কেন তাহাতে আমাদের জাতীয় জীবনের অপকার ভিন্ন উপকার হইবে না ৷ সেগুলিও খেলনা বই আর কিছুই নহে; যাহা স্বপ্রয়াসলব্ধ তাহাই স্বত্ব; পরের দান স্বত্ব নহে ৷ অতএব এই স্বত্বগুলি প্রকৃত স্বত্ব নহে, তাহাদের উপর আমাদের কোন স্থায়ী অধিকার নাই; আজ রিপণ দিল, কাল কার্জন কাড়িয়া লইবে ৷ আর আমরা ‘হায়! আমাদের খেলনা গেল, কি ঘাের অন্যায়!’ বলিয়া সহস্র সভাসমিতিতে উচ্চৈঃস্বরে রােদন করিব ৷ ছেলেমানুষী আমাদের বর্তমান রাজনীতিক জীবনের একটী মুখ্য লক্ষণ ৷ আর একটী লক্ষণ দাসত্বের অভ্যাস ৷ আমরা উচ্চ পদ প্রাপ্ত হইলেও গােলাম, সিভিলিয়ান জজ, মুনিসিপাল কমিশনার, ডিস্ট্রিক্ট বাের্ডের অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিণ্ডিক, ব্যবস্থাপক সভার সভাসদ, সকলেই শৃঙ্খল পরিয়া রঙ্গমঞ্চে অভিনয় করিতেছেন ৷ তবে আমরা এমন ক্ষুদ্রাশয় হইয়াছি যে, সেই শৃঙ্খল স্বর্ণ বা রৌপ্য নির্মিত বলিয়া গর্ব করিতে আমাদের লজ্জা বােধ হয় না ৷ গােলামি প্রগাঢ় কুয়াসার মত আমাদের সমস্ত জীবন ছাইয়া ফেলিয়াছে ৷ সুখের কথা এই যে, এতদিন আমরা স্বপ্ন দেখিতেছিলাম, এখন চক্ষু খুলিয়া আমাদের হীনাবস্থা বুঝিতে পারিতেছি ৷ এই সৰ্বব্যাপী পরাধীনতা আর সহ্য হয় না, যে উপায়েই হউক শিক্ষায়, বাণিজ্যে ও রাজনীতিক জীবনে স্বাধীনতা অর্জন করিতে হইবে, এই ভাব ক্রমে দেশময় সঞ্চারিত হইতেছে ৷ ইহাই ভবিষ্যতের আশা ৷ ইহাতে বুঝিলাম আমরা জাগিয়াছি, আর সেই ঘুম-পাড়ান গান শুনিব না, আর কোন প্রতিবন্ধক বা কাহারও নিষেধ মানিব না, আমরা উঠিবই উঠিব ৷
জাতীয় মহাসমিতির ক্ষুদ্রাশয়তা
শতাব্দীকালের চেষ্টায় এমন পরিণাম হইল কেন? জাপান ত্রিশ বৎসরের মধ্যে পাশ্চাত্য রাষ্ট্রবৃন্দের সমকক্ষ মহৎ জাতি হইতে পারিল, আমরা কিন্তু যে তিমিরে সেই তিমিরেই রহিয়া গেলাম, এই বৈষম্যের কারণ কি? ইহার কারণ আর কিছুই নহে, কেবল আমাদের রাজনীতিক আদর্শের ক্ষুদ্রতা ও হীনতা ৷ যে জাতীয় মহাসমিতি আমাদের রাজনীতিক জীবনের চরম উৎকর্ষ বলিয়া গৃহীত, সে মহাসমিতির উদ্দেশ্য তলাইয়া বুঝিতে যাইলেও এই ক্ষুদ্রতারই পরিচয় পাই ৷
গােলামের জ্যাঠামি
জাতীয় মহাসমিতির উদ্দেশ্য কি? অনেকে জাতীয় মহাসমিতির উদ্দেশ্যের নাম দিয়া এই কথা প্রচার করিতেছেন, “ইংরাজ রাজপুরুষগণ দেশকে উত্তমরূপে শাসন করিতেছেন ৷ তবে তাহারা বিদেশী বলিয়া ভারতবাসীর মনের ভাব বুঝিতে অক্ষম, সেইজন্য শাসনের অল্পস্বল্প দোষ আছে ৷ আমরা প্রতি বৎসর ভারতবাসীর আবেদন তাহাদের নিকট জানাইয়া শাসনকার্য্যে সহায়তা করিব, তাহা হইলেই বৃটিশ শাসন নির্দোষ হইবে ৷” রাজপুরুষগণ কিন্তু আমাদের এই অযাচিত সাহায্য দান গ্রহণ করেন না, বরং গােলামের ধৃষ্টতা ও অপবুদ্ধির জ্যাঠামি বলিয়া অবমাননা করেন; কংগ্রেস প্রতি বৎসরে অনাহতভাবে রাজপুরুষদিগের নিকট সাহায্য করিতে উপস্থিত হয়, এবং পরিশেষে অপমানের বােঝা মাথায় লইয়া ফিরিয়া আসে ৷ তাহাতেও আমাদের ধৈৰ্য্য ভঙ্গ হয় না ৷ আমরা বলি সম্প্রতি অনাহূত হইয়া যাই, হয়ত রাজপুরুষগণ একদিন দয়া করিয়া আমাদের সহায়তা স্বীকার করিবেন ৷ যাহারা এইরূপ ক্ষুদ্র উদ্দেশ্য লইয়া রাজনীতিক কর্মক্ষেত্রে অবতরণ করে, তাহারা কি কখনও এই বীরভােগ্যা বসুন্ধরার একটী সুমহৎ জাতি হইতে পারে?
চিরস্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা
কেহ কেহ আবার বলেন জাতীয় মহাসমিতি His Majesty's permanent opposition; যেমন বৃটিশ পার্লামেন্টে রক্ষণশীল দলের শাসন সময়ে উদারনীতিক দল তাহাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরূপে থাকে, আমরাও এ দেশে বৃটিশ রাজপুরুষগণের সেইরূপ স্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী ৷ এইরূপ চিরস্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতাই আমাদের আদর্শ ৷ ইংরাজ গুরুদিগের নিকট যে কয়েকটী বুলি শিখিয়াছি, সেই সকলের মধ্যে ইহাও একটী বুলিমাত্র; যেমন constitution নাই, তথাপি constitutional আন্দোলন করিতে যাই, তেমনই পার্লামেন্ট নাই, তথাপি পার্লামেন্টের নিরর্থক অনুকরণকে আদর্শ বলিয়া গ্রহণ করি ৷ স্থায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতার অর্থ নিষ্ফল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৷ বর্তমান রাজপুরুষগণকে বহিষ্কৃত করিয়া স্বয়ং শাসন করা এবং বর্তমান নীতির বদলে স্বকল্পিত নীতি প্রচলিত করা, ইহাই পার্লামেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিতার উদ্দেশ্য ৷ এই উদ্দেশ্য অবলম্বন করিতে জাতীয় মহাসমিতির শক্তিও নাই, সাধ্যও নাই; যে কাৰ্য্যে সফলতার আশা নাই, নিতান্ত উন্মত্ত না হইলে কেহ সজ্ঞান অবস্থায় সেই কার্য্যে প্রবৃত্ত হয় না ৷ অতএব এই আদর্শ নিতান্ত অসার ও অসঙ্গত ৷
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতীয় স্বার্থ
আমাদের নেতাগণ এইরূপ অতিক্ষুদ্র ও অসার উদ্দেশ্য লইয়া যদি সন্তুষ্ট থাকিলে, তাহা হইলে জাতীয় মহাসমিতি একদিনও টিকিত না ৷ কিন্তু মহাসমিতিতে অন্য ধরণের লােকও আছেন, তাঁহারা ইহার অপেক্ষা কিছু উচ্চেও উঠিতে পারেন ৷ ইহাদের আদর্শ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতীয় স্বার্থ লইয়া গঠিত, যেমন সমকালীন পরীক্ষা, ব্যবস্থাপক সভায় নির্বাচিত সভাসদের প্রবেশ, হােম চার্জ কমাইবার জন্য অধিকাংশ উচ্চ বেতনের চাকরী ভারতবাসীকে দান ইত্যাদি ৷ আমরা বলি, মহাসমিতির সকল দাবীই ন্যায়সঙ্গত ৷ কিন্তু জিজ্ঞাসা করি, এই ক্ষুদ্র স্বার্থ লইয়া কখনও কি এমন বিরাট রাজনীতিক আদর্শ গঠিত হইতে পারে, যাহাতে সমস্ত ভারতবর্ষকে মাতাইতে পারিবে? এইগুলি লইয়া কখনও কি এক মহৎ জাতীয় ভাব দেশময় সঞ্চারিত হইবে?
কৃষ্ণবর্ণ দাস ও বাগ্মিতায় বাহবা
ভারতবাসী সিভিলিয়ানের সংখ্যা বৃদ্ধি হইবে, তাহাতে দেশের লাভ কি? দেশের ত্রিশ কোটী লােক ত গােলামই রহিয়া গেল ৷ যাহারা সিভিলিয়ান হইবে, তাহারা স্বজাতির প্রভু হইলেও বিদেশীর গােলাম, রাজপুরুষদিগের আদেশ পাইলেই স্বজাতির অনিষ্ট করিতে বাধ্য ৷ ভারতবাসীকে দাসত্বে ডুবাইয়া রাখিবার পুণ্যকাৰ্য্যে গবর্ণমেন্টের কয়েকটী কৃষ্ণবর্ণ দাস জুটিবে বই ত নয় ৷ কিম্বা যদি ব্যবস্থাপক সভায় আমাদের নির্বাচিত সভাসদ প্রবেশ করে, তাহাতেই বা কি সুফল হইল? বাগ্মিতা ও রাজনীতিক দক্ষতা দেখান এবং রাজপুরুষগণের ও লােকসাধারণের বাহবা পাওয়ার পক্ষে ব্যক্তিবিশেষের তাহাতে যথেষ্ট সুবিধা হইতে পারে বটে, কিন্তু দেশের একবিন্দুও উপকার হয় না; হইবেই বা কেন? এই সকল দাসত্বের কারখানায় আমরা বড় বড় মিস্ত্রি হইলে কারখানার প্রভুরা তাহাদের ব্যবসায় ছাড়িয়া চলিয়া যাইবে, এই অদ্ভুত যুক্তি রাজনীতিক অনভিজ্ঞতারই পরিচায়ক ৷
দরিদ্রতার প্রতিকার
এই সকল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থের উপর লক্ষ্য রাখার ফল এই হয় যে, ভুল পথ ৷ অনুসরণ করিতে যাইয়া দেশের প্রকৃত কাৰ্য্য বন্ধ হইয়া যায় ৷ ভারতের ভীষণ দারিদ্র্যের কথা ধর ৷ হােম চার্জ যদি কমান হয়, তাহা হইলে দারিদ্র্যের কতকটা লাঘব হইবে, একথা স্বীকার করি ৷ কিন্তু দারিদ্র্যের অল্পমাত্রায় লাঘব করা আমাদের উদ্দেশ্য নহে, সম্পূর্ণরূপে দারিদ্র্য মােচনই উদ্দেশ্য ৷ সেই দারিদ্র্য মােচনের দুইটী উপায় আছে, কৃষি সম্বন্ধে সমস্ত ভারতবর্ষে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বিধিবদ্ধ করা এবং বাণিজ্য সম্বন্ধে সংরক্ষিত বাণিজ্যনীতি অবলম্বন করা ৷ এ অবস্থায় অনন্যচিন্ত্য হইয়া সেই দুইটী দাবীই সর্বাগ্রে রাজপুরুষদিগের নিকট আদায় করিবার চেষ্টা কংগ্রেসের প্রথম কর্তব্য ছিল ৷ রাজপুরুষগণ কিন্তু কখনও সে দাবী শুনিবেন না ৷ সুতরাং উপায়ান্তর স্বাবলম্বন ৷ দেশময় বৃটিশ বাণিজ্যের বয়কট প্রচার কর, ভারতের কোটী কোটী কৃষিজীবীকে নিজেদের দুরবস্থার কারণ ও মুক্তির উপায় বুঝাইয়া দাও ৷ দেখি রাজপুরুষগণ কত দিন একটী মহৎ জাতির দৃঢ় প্রতিজ্ঞাকে অগ্রাহ্য করিতে পারেন ৷ কিন্তু জাতীয় মহাসমিতি বয়কটের নাম শুনিয়া শিহরিয়া উঠে, এমন কি স্বদেশী সম্বন্ধেও কোন প্রস্তাব করিতে চাহে না, পাছে ইংরাজের কোমল হৃদয়ে আঘাত লাগে ৷
**উচ্চ আদর্শের মত্ততা
দাসত্বশৃঙ্খল অটুট রাখিয়া তাহাতে লৌহের ভাগ কমান এবং সােনা রূপার ভাগ বাড়ান, ইহাই মহাসমিতির আদর্শ ৷ কয়েকজন শান্তি ও সুখপ্রিয় মধ্যবিত্ত লােক লইয়া যদি আমাদের রাজনীতিক জীবন গড়িলেই হইত, তাহা হইলে তজ্জন্য ইহাই যথেষ্ট ছিল ৷ কিন্তু জাতিকে পুনরুজ্জীবিত করিতে হইলে এ ক্ষুদ্র ও নগণ্য আদর্শ অতিক্রম করা উচিত ৷ এরূপ আদর্শের জন্য কে কবে স্বদেশানুরাগে মাতিয়া আত্মবিস্মৃত হইয়া প্রকৃত স্বার্থত্যাগ করিয়াছে, কিম্বা সর্বপ্রকার বিভীষিকা ও প্রলােভনকে তুচ্ছ করিয়া কর্তব্যপথে মহাবেগে অগ্রসর হইয়াছে? পক্ষান্তরে দেখ, যখন তােমরা একবার জননীর চিত্তপ্রমােদিনী মূর্তি দেখাইলে, তখন সে মুখ সন্দর্শনে, সে নামে আমরা সকলে মাতিয়া গেলাম, সহর্ষে স্বার্থত্যাগ করিয়া জাতীয় কাৰ্য্যে প্রবৃত্ত হইলাম, সহাস্যমখে দলে দলে জেলে যাইতে লাগিলাম ৷ ইহাতেও নেতাদের জ্ঞান হইবে না কি? ইহাতেও তাঁহারা বুঝিবেন না কি কোন দিকে ভারতের নবজীবনের বালসূৰ্য্য গগনমণ্ডলকে উদ্ভাসিত করিয়া উদয় হইতেছে?
সোনার শিকল কাট
স্বর্ণনির্মিত শৃঙ্খলের মােহ কাটিতে হইবে ৷ ইংরাজের অনুকরণ ও ইংরাজের নেতৃত্ব বৰ্জন করিয়া আমাদের জাতীয় স্বভাব ও দেশের অবস্থা বুঝিয়া অভীষ্ট-সিদ্ধির উপযুক্ত উপায় আবিষ্কার করিতে হইবে ৷ আর নবােথিত ভারতবর্ষকে মহৎ আদর্শ দেখাইয়া নবপ্রাণে অনুপ্রাণিত করিতে হইবে ৷ এই পথই মুক্তির পথ, অন্যথা বন্ধনই সার ৷
Home
Sri Aurobindo
Books
Bengali
Share your feedback. Help us improve. Or ask a question.